প্রকৃতিতে এখন চলছে হেমন্তকাল। তবু বাতাসে হালকা শীতের আমেজ। শীত তার আগমনি বার্তা জানিয়ে দিচ্ছে। ভোরের ঘাসের বুকে শিশিরের টলমলে উপস্থিতি, কুয়াশার হালকা চাদর আর রাত নামলেই একটু একটু ঠান্ডা অনুভূতি—এসবই শীতের পূর্বাভাস।
খুব বেশি শীতল নয়; তারপরও শীতের আগমন বলে কথা। একটু উষ্ণতা পেলে মন্দ হয় না, বরং তা উপভোগ্য হবে। তাই একটু ভারী আর ঠান্ডা নিবারণকারী পোশাক এবার বেছে নিতেই হবে। নয়তো হঠাৎ আসা শীতে যেকোনো সময় ঠান্ডা লেগে যেতে পারে। তবে শীতে জবুথবু হয়ে থাকার মতো পোশাকের প্রয়োজনও এখনো পড়েনি। পাতলা কাপড়ের তৈরি, স্টাইলেও আনবে ভিন্নতা—এমন পোশাক দেবে বাড়তি আরাম। বাজারে এখন বিভিন্ন নকশা ও কাপড়ের তৈরি এমন পোশাক পাওয়া যাচ্ছে। তবে সেইসঙ্গে ফ্যাশনটাও বজায় থাকা চাই।
গরমের ধবধবে সাদা বা ফুরফুরে পোশাকগুলো এবার তুলে রাখার পালা। হালকা শীতে চাইলে পুরো হাতার, লম্বা কাটের শ্রাগও পরতে পারেন। তবে পাতলা কাপড়ের তৈরি হলে পরে আরাম পাবেন। গেঞ্জি কাপড় অথবা দু-তিন ধরনের কাপড়ের মিশ্রণে তৈরি করা হচ্ছে হালকা শীতের পোশাকগুলো। কামিজ কিংবা পাশ্চাত্য পোশাকের ওপরে পরা যাবে অনায়াসে। উলের পরশ থাকায় কিছুটা ওমও পাবেন, যা হালকা শীতের জন্য আদর্শ।
শীতকালে জিন্স পরে আরাম পান অনেকেই। জিন্সের তৈরি টি-শার্ট স্টাইল ও আরাম দুটিই দেবে। গেঞ্জি কাপড়ের তৈরি পুরো হাতার সাদা রঙের টি-শার্টও বেশ নজরকাড়া।
জ্যাকেট আর ব্লেজারের মিশ্রণে তৈরি নতুন ধরনের শীত পোশাক এখন ছেলেদের পছন্দের শীর্ষে। পাতলা বা কৃত্রিম চামড়া, কটন ও গ্যাবার্ডিন কাপড়ের ব্লেজার বা জ্যাকেট এবং উলের তৈরি পাতলা নানা রঙের সোয়েটার পাওয়া যাচ্ছে। তবে এসব জ্যাকেটে হুডি, বড় আকারের বোতাম, হাতা বা নিচের দিকটায় নানা ধরনের কাটের চল এসেছে। কোনো কোনো জ্যাকেটের সামনের দিকে বোতামের পরিবর্তে ব্যবহার করা হয়েছে চেইন। চাইলে জ্যাকেটের বুক খুলে ভেতরে রঙিন টি-শার্ট পরে বেরুতে পারেন।
ফ্যাশনেবল তরুণীরা বিভিন্ন রঙের শার্ট বা ফতুয়ার সঙ্গে স্কার্ফ ব্যবহার করতে পারেন। স্কার্ফ এমন একটা ফ্যাশন অনুষঙ্গ, যা শীত বা গ্রীষ্ম যেকোনো ঋতুতে যেকোনো পোশাককেই দারুণ আকর্ষণীয় করে তোলে। তবে নিজেকে উষ্ণ রাখার অনুষঙ্গ যা-ই হোক না কেন, সেটি যেন আপনার সঙ্গে মানানসই হয়, সেদিকে অবশ্যই খেয়াল রাখতে হবে।
একটা সময় ছিল যখন কটি কেবল ব্লেজার, স্যুট কিংবা ওভারকোটের নিচেই বেশি শোভা পেত। কিন্তু এখনকার সময়ে কটির ফ্যাশনে ঘটেছে বিশাল পরিবর্তন। ফ্যাশনের অন্যতম উপাদান হিসেবে কটি তরুণ-তরুণীদের কাছে ভীষণ জনপ্রিয়। কটিও হতে পারে হালকা শীতে ফ্যাশনের অন্যতম পোশাক। ফরমাল, ক্যাজুয়াল, পাঞ্জাবি, শাড়ি, সালোয়ার-কামিজ, টপস-স্কার্ট, ফ্লোর টাচ লং স্লিভ অথবা আনারকলি পোশাকের সঙ্গেও ব্যবহৃত হচ্ছে কটি।
দাওয়াতে সিল্কের তৈরি এ ধরনের স্টাইল শাল পরতে পারেন। জমকালো ভাব নিয়ে আসবে দাওয়াতের লুকে। জিন্স, টাইটস কিংবা সোজা কাটের প্যান্ট বা পালাজ্জোর সঙ্গে ভালো লাগবে।
বসুন্ধরা শপিং কমপ্লেক্স, নিউমার্কেট, বনানী, মিরপুর শপিংমল, গুলশান ছাড়াও ফুটপাতের সব দোকানেই শীতের পোশাক পাওয়া যাবে। দেশীয় ফ্যাশন হাউসগুলোর শোরুমেও পাওয়া যাবে বিভিন্ন কালেকশন। বিভিন্ন দোকানে দাম ভিন্ন ভিন্ন ধরনের হয়ে থাকে। এছাড়া শীতের শুরুতে এক দাম, শুরুতে দাম কিছুটা কম থাকলেও আবার শীত বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে দামও বাড়তে থাকে।

