কোরবানির ঈদ
ডা. সিয়াম আল ইসলাম
ঈদুল আজহা মুসলিম উম্মাহর জন্য এক বিশেষ আনন্দঘন উৎসব। আমাদের দেশে এই ঈদ কোরবানির ঈদ নামেই পরিচিত। যার মূল আনুষ্ঠানিকতা পশু কোরবানির মাধ্যমে আদায় হয়। গরু, মহিষ, খাসি বা ভেড়া কোরবানি দিয়ে ধর্মীয় বিধান পালনের পাশাপাশি মানুষের খাদ্যতালিকায় স্থান করে নেয় রেডমিট বা লাল মাংস। ঈদের বেশ কিছুদিন সময় খাদ্য তালিকাজুড়ে থাকে মাংসের বাহারি পদ। তবে উৎসবের এই পরিপূর্ণতা অনেক ক্ষেত্রেই স্বাস্থ্যঝুঁকির জন্ম দিতে পারে। যদি আমরা অতিরিক্ত বা অনিয়মিতভাবে রেডমিট গ্রহণ করি, বিশেষ করে হৃদরোগী, কিডনি রোগী, উচ্চ রক্তচাপ বা ডায়াবেটিসে আক্রান্ত ব্যক্তিদের ক্ষেত্রে। রেডমিট বলতে মূলত বোঝানো হয় গরু, খাসি, ভেড়া, মহিষ বা উটের মাংস। এগুলোতে প্রোটিন, আয়রন, জিংক, ভিটামিন বি১২-সহ বেশ কিছু উপকারী পুষ্টি উপাদান থাকে। কিন্তু একই সঙ্গে এতে থাকে উচ্চমাত্রায় স্যাচুরেটেড ফ্যাট (সম্পৃক্ত চর্বি) ও কোলেস্টেরল, যা অতিরিক্ত পরিমাণে গ্রহণ করলে শরীরে নেতিবাচক প্রভাব ফেলে। হৃদরোগ, কিডনি সমস্যা, উচ্চ রক্তচাপ এবং স্থূলতার পেছনে এই অতিরিক্ত চর্বি ও কোলেস্টেরলের ভূমিকা অপরিসীম।
হৃদরোগীদের ক্ষেত্রে করণীয়
যাদের ইতোমধ্যে হৃদরোগ রয়েছে—যেমন করোনারি আর্টারি ডিজিজ, হার্ট ফেইলিউর, বা যাদের হার্টে স্টেন্ট বসানো হয়েছে কিংবা বাইপাস সার্জারি হয়েছে, তাদের জন্য রেডমিট গ্রহণে বিশেষ সতর্কতা অবলম্বন করা উচিত। কারণ রেডমিটে থাকা স্যাচুরেটেড ফ্যাট এবং কোলেস্টেরল ধমনিতে প্লাক (চর্বির স্তর) জমার হার বাড়িয়ে দিতে পারে। যার ফলে রক্তপ্রবাহ বাধাগ্রস্ত হয় এবং হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি বেড়ে যায়। হৃদরোগীদের জন্য রেডমিট একেবারে নিষিদ্ধ না হলেও, পরিমাণ অত্যন্ত সীমিত হওয়া উচিত। সাধারণভাবে বলা যায়, সপ্তাহে এক থেকে দুবার, একবারে ৫০-১০০ গ্রাম রেডমিট খাওয়া নিরাপদ হতে পারেÑতাও যদি তা চর্বিমুক্ত হয়। স্বাস্থ্যকরভাবে রান্না করা হতে হবে। যেমন : কম তেলে গ্রিল করে বা সেদ্ধ করে। ভাজা, কাবাব, বা ঝোলযুক্ত অতিরিক্ত মসলা ও তেলজাত খাবার হৃদরোগীদের জন্য একেবারেই নিরুৎসাহিত করা হয়।
কিডনি রোগীদের জন্য পরামর্শ
কিডনি রোগীরা-বিশেষ করে যারা ক্রনিক কিডনি ডিজিজে (CKD) আক্রান্ত, ডায়ালিসিসে রয়েছেন, কিংবা কিডনি ট্রান্সপ্লান্ট করিয়েছেনÑতাদের জন্য রেডমিট গ্রহণ আরো জটিল হতে পারে। রেডমিটে উচ্চমাত্রায় প্রোটিন থাকে, যা কিডনিকে অতিরিক্ত কাজ করতে বাধ্য করে। এই অতিরিক্ত প্রোটিন কিডনির কার্যক্ষমতা হ্রাস করে এবং রোগের অগ্রগতি দ্রুততর করে। কিডনি রোগীদের খাদ্যতালিকায় প্রোটিনের পরিমাণ সাধারণত চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী নিয়ন্ত্রিত থাকে। অধিকাংশ ক্ষেত্রে দৈনিক প্রোটিনের পরিমাণ নির্ধারণ করা হয় রোগীর ওজন ও কিডনির অবস্থা অনুযায়ী। ঈদে কোরবানির মাংস খেতে হলে এটি অবশ্যই খুব ছোট পরিমাণে, সপ্তাহে এক-দুদিন খাওয়া উচিত এবং একবারে ৫০ গ্রামের বেশি হওয়া অনুচিত। এ ছাড়া কিডনি রোগীদের ক্ষেত্রে পটাশিয়াম ও ফসফরাসের পরিমাণও নজরে রাখতে হয়, যা রেডমিটে তুলনামূলক বেশি থাকে। কিডনি রোগীদের শরীর থেকে স্বাভাবিক মাত্রায় পটাশিয়াম নিষ্কাশন হতে পারে না। ফলে রক্তে পটাশিয়ামের মাত্রা বেড়ে অ্যারিদমিয়া (অনিয়মিত হৃৎস্পন্দন) এবং কার্ডিয়াক অ্যারেস্ট পর্যন্ত হতে পারে।
ডায়াবেটিস ও উচ্চ রক্তচাপের রোগীদের ক্ষেত্রে
রেডমিটে থাকা স্যাচুরেটেড ফ্যাট ও লবণ ডায়াবেটিস ও হাইপারটেনশন রোগীদের জন্য মারাত্মক হতে পারে। এই শ্রেণির রোগীরা যদি রেডমিট খান, তবে তা অবশ্যই চর্বিমুক্ত হওয়া উচিত এবং রান্নায় লবণ ও তেল সীমিত পরিমাণে ব্যবহার করতে হবে। তাদের ক্ষেত্রে মাংসের সঙ্গে উচ্চ ফাইবারযুক্ত খাবার যেমনÑশাক-সবজি, ইসবগুলের ভুসি, ডালযুক্ত করলে তা একদিকে পরিপাকতন্ত্রকে আরাম দেয়। একই সঙ্গে রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে সহায়তা করে।
স্বাস্থ্যকর দিকনির্দেশনা
যারা সুস্থ, হৃদরোগ বা কিডনি সমস্যা নেই, তাদের ক্ষেত্রেও রেডমিট অতিরিক্ত খাওয়া উচিত নয়। কারণ অতিরিক্ত রেডমিট দীর্ঘ মেয়াদে হৃদরোগ, উচ্চ রক্তচাপ, টাইপ-২ ডায়াবেটিস এবং কোলন ক্যানসারের ঝুঁকি বাড়ায়। তাই ঈদের আমেজে মাংস খাওয়ার ক্ষেত্রে সংযম অবলম্বন করাই উত্তম। সাধারণত একজন প্রাপ্তবয়স্ক সুস্থ মানুষের জন্য সপ্তাহে সর্বোচ্চ তিন-চারবার রেডমিট খাওয়া নিরাপদ ধরা হয়। প্রতিবারে ৭০-১০০ গ্রাম পরিমাণ খাওয়া যেতে পারে। যদি তা চর্বিমুক্ত, অল্প তেলে রান্না করা হয় এবং সঙ্গে যথেষ্ট পরিমাণে শাকসবজি, সালাদ ও পানি গ্রহণ করা হয়।
রান্নার পদ্ধতি ও উপস্থাপনা
রেডমিট স্বাস্থ্যসম্মতভাবে গ্রহণের জন্য রান্নার ধরন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। অনেকেই ঈদে মাংস রান্নায় অতিরিক্ত তেল, মসলা, ঘি এবং লবণ ব্যবহার করেন, যা স্বাস্থ্যঝুঁকি বাড়িয়ে দেয়। পরিবর্তে স্বাস্থ্যকর বিকল্প হিসেবে গ্রিল, বেক বা সেদ্ধ করে রান্না করাই উত্তম। রান্নার সময় চর্বি বা চামড়া বাদ দেওয়া, অল্প তেল ব্যবহার, লবণের পরিমাণ সীমিত রাখা এবং রান্নায় টমেটো, আদা-রসুন, জিরা, ধনে ইত্যাদি উপাদান ব্যবহার করলে তা স্বাদ ও পুষ্টি দুটোর দিক থেকেই উপকার হয়। রেডমিটের সঙ্গে যদি প্রচুর পরিমাণে কার্বো-হাইড্রেটসমৃদ্ধ খাবার যেমনÑপোলাও, পরোটা বা রুটি খাওয়া হয় এবং সেই সঙ্গে ডেজার্ট হিসেবে সেমাই, জর্দা, পায়েস ইত্যাদি খাওয়া হয়, তাহলে শরীরে অতিরিক্ত ক্যালরি জমে যায়, যা ওজন বৃদ্ধি ও রক্তে শর্করার মাত্রা বাড়িয়ে দিতে পারে। তাই ঈদের খাবারে ব্যালান্স রাখা জরুরিÑযেখানে প্রোটিন, কার্বোহাইড্রেট ও ফাইবারের সমতা থাকবে।
জীবনধারা ও ঈদের পরবর্তী পরিকল্পনা
ঈদ মানে শুধু ভোজন নয়। বরং একটি আত্মনিয়ন্ত্রণের শিক্ষা। তাই খাদ্যতালিকায় সংযমের চর্চা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। যারা ঈদে রেডমিট খান, তারা ঈদের পরবর্তী দিনগুলোয় অবশ্যই খাদ্যতালিকায় শাকসবজি, ফলমূল এবং সহজপাচ্য খাবার রাখবেন। পর্যাপ্ত পানি পান, নিয়মিত হাঁটাহাঁটি ও হালকা ব্যায়াম শরীরকে ভারসাম্যে রাখতে সাহায্য করবে। রেডমিট হজম হতে তুলনামূলক বেশি সময় নেয়। তাই যারা ঈদে অতিরিক্ত রেডমিট খান, তাদের মধ্যে কোষ্ঠকাঠিন্য, অ্যাসিডিটি বা হজমের সমস্যা দেখা দিতে পারে। এসব এড়াতে উচ্চ ফাইবারযুক্ত খাবার, দই এবং প্রোবায়োটিকজাত খাবার খাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হলো। সবশেষে বলব, ঈদের আনন্দ হোক স্বাস্থ্যকর, নিরাপদ ও প্রশান্তিময়।
লেখক : হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ ও সার্জন
জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউট ও হাসপাতাল
ঈদুল আজহা মুসলিম উম্মাহর জন্য এক বিশেষ আনন্দঘন উৎসব। আমাদের দেশে এই ঈদ কোরবানির ঈদ নামেই পরিচিত। যার মূল আনুষ্ঠানিকতা পশু কোরবানির মাধ্যমে আদায় হয়। গরু, মহিষ, খাসি বা ভেড়া কোরবানি দিয়ে ধর্মীয় বিধান পালনের পাশাপাশি মানুষের খাদ্যতালিকায় স্থান করে নেয় রেডমিট বা লাল মাংস। ঈদের বেশ কিছুদিন সময় খাদ্য তালিকাজুড়ে থাকে মাংসের বাহারি পদ। তবে উৎসবের এই পরিপূর্ণতা অনেক ক্ষেত্রেই স্বাস্থ্যঝুঁকির জন্ম দিতে পারে। যদি আমরা অতিরিক্ত বা অনিয়মিতভাবে রেডমিট গ্রহণ করি, বিশেষ করে হৃদরোগী, কিডনি রোগী, উচ্চ রক্তচাপ বা ডায়াবেটিসে আক্রান্ত ব্যক্তিদের ক্ষেত্রে। রেডমিট বলতে মূলত বোঝানো হয় গরু, খাসি, ভেড়া, মহিষ বা উটের মাংস। এগুলোতে প্রোটিন, আয়রন, জিংক, ভিটামিন বি১২-সহ বেশ কিছু উপকারী পুষ্টি উপাদান থাকে। কিন্তু একই সঙ্গে এতে থাকে উচ্চমাত্রায় স্যাচুরেটেড ফ্যাট (সম্পৃক্ত চর্বি) ও কোলেস্টেরল, যা অতিরিক্ত পরিমাণে গ্রহণ করলে শরীরে নেতিবাচক প্রভাব ফেলে। হৃদরোগ, কিডনি সমস্যা, উচ্চ রক্তচাপ এবং স্থূলতার পেছনে এই অতিরিক্ত চর্বি ও কোলেস্টেরলের ভূমিকা অপরিসীম।
হৃদরোগীদের ক্ষেত্রে করণীয়
যাদের ইতোমধ্যে হৃদরোগ রয়েছে—যেমন করোনারি আর্টারি ডিজিজ, হার্ট ফেইলিউর, বা যাদের হার্টে স্টেন্ট বসানো হয়েছে কিংবা বাইপাস সার্জারি হয়েছে, তাদের জন্য রেডমিট গ্রহণে বিশেষ সতর্কতা অবলম্বন করা উচিত। কারণ রেডমিটে থাকা স্যাচুরেটেড ফ্যাট এবং কোলেস্টেরল ধমনিতে প্লাক (চর্বির স্তর) জমার হার বাড়িয়ে দিতে পারে। যার ফলে রক্তপ্রবাহ বাধাগ্রস্ত হয় এবং হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি বেড়ে যায়। হৃদরোগীদের জন্য রেডমিট একেবারে নিষিদ্ধ না হলেও, পরিমাণ অত্যন্ত সীমিত হওয়া উচিত। সাধারণভাবে বলা যায়, সপ্তাহে এক থেকে দুবার, একবারে ৫০-১০০ গ্রাম রেডমিট খাওয়া নিরাপদ হতে পারেÑতাও যদি তা চর্বিমুক্ত হয়। স্বাস্থ্যকরভাবে রান্না করা হতে হবে। যেমন : কম তেলে গ্রিল করে বা সেদ্ধ করে। ভাজা, কাবাব, বা ঝোলযুক্ত অতিরিক্ত মসলা ও তেলজাত খাবার হৃদরোগীদের জন্য একেবারেই নিরুৎসাহিত করা হয়।
কিডনি রোগীদের জন্য পরামর্শ
কিডনি রোগীরা-বিশেষ করে যারা ক্রনিক কিডনি ডিজিজে (CKD) আক্রান্ত, ডায়ালিসিসে রয়েছেন, কিংবা কিডনি ট্রান্সপ্লান্ট করিয়েছেনÑতাদের জন্য রেডমিট গ্রহণ আরো জটিল হতে পারে। রেডমিটে উচ্চমাত্রায় প্রোটিন থাকে, যা কিডনিকে অতিরিক্ত কাজ করতে বাধ্য করে। এই অতিরিক্ত প্রোটিন কিডনির কার্যক্ষমতা হ্রাস করে এবং রোগের অগ্রগতি দ্রুততর করে। কিডনি রোগীদের খাদ্যতালিকায় প্রোটিনের পরিমাণ সাধারণত চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী নিয়ন্ত্রিত থাকে। অধিকাংশ ক্ষেত্রে দৈনিক প্রোটিনের পরিমাণ নির্ধারণ করা হয় রোগীর ওজন ও কিডনির অবস্থা অনুযায়ী। ঈদে কোরবানির মাংস খেতে হলে এটি অবশ্যই খুব ছোট পরিমাণে, সপ্তাহে এক-দুদিন খাওয়া উচিত এবং একবারে ৫০ গ্রামের বেশি হওয়া অনুচিত। এ ছাড়া কিডনি রোগীদের ক্ষেত্রে পটাশিয়াম ও ফসফরাসের পরিমাণও নজরে রাখতে হয়, যা রেডমিটে তুলনামূলক বেশি থাকে। কিডনি রোগীদের শরীর থেকে স্বাভাবিক মাত্রায় পটাশিয়াম নিষ্কাশন হতে পারে না। ফলে রক্তে পটাশিয়ামের মাত্রা বেড়ে অ্যারিদমিয়া (অনিয়মিত হৃৎস্পন্দন) এবং কার্ডিয়াক অ্যারেস্ট পর্যন্ত হতে পারে।
ডায়াবেটিস ও উচ্চ রক্তচাপের রোগীদের ক্ষেত্রে
রেডমিটে থাকা স্যাচুরেটেড ফ্যাট ও লবণ ডায়াবেটিস ও হাইপারটেনশন রোগীদের জন্য মারাত্মক হতে পারে। এই শ্রেণির রোগীরা যদি রেডমিট খান, তবে তা অবশ্যই চর্বিমুক্ত হওয়া উচিত এবং রান্নায় লবণ ও তেল সীমিত পরিমাণে ব্যবহার করতে হবে। তাদের ক্ষেত্রে মাংসের সঙ্গে উচ্চ ফাইবারযুক্ত খাবার যেমনÑশাক-সবজি, ইসবগুলের ভুসি, ডালযুক্ত করলে তা একদিকে পরিপাকতন্ত্রকে আরাম দেয়। একই সঙ্গে রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে সহায়তা করে।
স্বাস্থ্যকর দিকনির্দেশনা
যারা সুস্থ, হৃদরোগ বা কিডনি সমস্যা নেই, তাদের ক্ষেত্রেও রেডমিট অতিরিক্ত খাওয়া উচিত নয়। কারণ অতিরিক্ত রেডমিট দীর্ঘ মেয়াদে হৃদরোগ, উচ্চ রক্তচাপ, টাইপ-২ ডায়াবেটিস এবং কোলন ক্যানসারের ঝুঁকি বাড়ায়। তাই ঈদের আমেজে মাংস খাওয়ার ক্ষেত্রে সংযম অবলম্বন করাই উত্তম। সাধারণত একজন প্রাপ্তবয়স্ক সুস্থ মানুষের জন্য সপ্তাহে সর্বোচ্চ তিন-চারবার রেডমিট খাওয়া নিরাপদ ধরা হয়। প্রতিবারে ৭০-১০০ গ্রাম পরিমাণ খাওয়া যেতে পারে। যদি তা চর্বিমুক্ত, অল্প তেলে রান্না করা হয় এবং সঙ্গে যথেষ্ট পরিমাণে শাকসবজি, সালাদ ও পানি গ্রহণ করা হয়।
রান্নার পদ্ধতি ও উপস্থাপনা
রেডমিট স্বাস্থ্যসম্মতভাবে গ্রহণের জন্য রান্নার ধরন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। অনেকেই ঈদে মাংস রান্নায় অতিরিক্ত তেল, মসলা, ঘি এবং লবণ ব্যবহার করেন, যা স্বাস্থ্যঝুঁকি বাড়িয়ে দেয়। পরিবর্তে স্বাস্থ্যকর বিকল্প হিসেবে গ্রিল, বেক বা সেদ্ধ করে রান্না করাই উত্তম। রান্নার সময় চর্বি বা চামড়া বাদ দেওয়া, অল্প তেল ব্যবহার, লবণের পরিমাণ সীমিত রাখা এবং রান্নায় টমেটো, আদা-রসুন, জিরা, ধনে ইত্যাদি উপাদান ব্যবহার করলে তা স্বাদ ও পুষ্টি দুটোর দিক থেকেই উপকার হয়। রেডমিটের সঙ্গে যদি প্রচুর পরিমাণে কার্বো-হাইড্রেটসমৃদ্ধ খাবার যেমনÑপোলাও, পরোটা বা রুটি খাওয়া হয় এবং সেই সঙ্গে ডেজার্ট হিসেবে সেমাই, জর্দা, পায়েস ইত্যাদি খাওয়া হয়, তাহলে শরীরে অতিরিক্ত ক্যালরি জমে যায়, যা ওজন বৃদ্ধি ও রক্তে শর্করার মাত্রা বাড়িয়ে দিতে পারে। তাই ঈদের খাবারে ব্যালান্স রাখা জরুরিÑযেখানে প্রোটিন, কার্বোহাইড্রেট ও ফাইবারের সমতা থাকবে।
জীবনধারা ও ঈদের পরবর্তী পরিকল্পনা
ঈদ মানে শুধু ভোজন নয়। বরং একটি আত্মনিয়ন্ত্রণের শিক্ষা। তাই খাদ্যতালিকায় সংযমের চর্চা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। যারা ঈদে রেডমিট খান, তারা ঈদের পরবর্তী দিনগুলোয় অবশ্যই খাদ্যতালিকায় শাকসবজি, ফলমূল এবং সহজপাচ্য খাবার রাখবেন। পর্যাপ্ত পানি পান, নিয়মিত হাঁটাহাঁটি ও হালকা ব্যায়াম শরীরকে ভারসাম্যে রাখতে সাহায্য করবে। রেডমিট হজম হতে তুলনামূলক বেশি সময় নেয়। তাই যারা ঈদে অতিরিক্ত রেডমিট খান, তাদের মধ্যে কোষ্ঠকাঠিন্য, অ্যাসিডিটি বা হজমের সমস্যা দেখা দিতে পারে। এসব এড়াতে উচ্চ ফাইবারযুক্ত খাবার, দই এবং প্রোবায়োটিকজাত খাবার খাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হলো। সবশেষে বলব, ঈদের আনন্দ হোক স্বাস্থ্যকর, নিরাপদ ও প্রশান্তিময়।
লেখক : হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ ও সার্জন
জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউট ও হাসপাতাল
আন্দোলনে অংশ নেওয়া ইংরেজি বিভাগের শিক্ষার্থী দেলোয়ার হোসেন শিশির বলেন, আমরা স্পষ্টভাবে বলছি, শাকসু বানচালের চেষ্টা চলছে। শিক্ষার্থীরা এটা কোনোভাবেই মেনে নেবে না। যদি আগামী সোমবার ভিসি এসে নির্বাচন কমিশন গঠন করে রোডম্যাপ ঘোষণা না করেন, তাহলে প্রশাসনিক ভবনে তালা ঝুলিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের...
৫ ঘণ্টা আগেসংগঠনের তথ্য, উপহার প্রদান, অনুভূতি বক্স এবং মেহেদি দেওয়ার জন্য উৎসবের ছাউনিতে চারটি আলাদা বুথ। সেখানে ছিল নারী শিক্ষার্থীদের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণ। আয়োজকরা নতুন সদস্য আহ্বান ও প্রচারপত্র বিলি করেন। ফটকের সামনে একটি ব্যানারে লেখা, ‛প্রিয় ভাইয়েরা, ভেতরে প্রবেশ ও উঁকি মারা থেকে বিরত থাকুন।’
৬ ঘণ্টা আগেজগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. রইছ উদ্দীন বলেছেন, ছাত্রদল নেতা ও পরিসংখ্যান বিভাগের শিক্ষার্থী জোবায়েদ হোসাইন হত্যাকাণ্ডে প্রকৃত অপরাধীদের শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে—কেউ যেন আইনের ফাঁক দিয়ে কেউ বেরিয়ে না যায়।
৭ ঘণ্টা আগেঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) ইতিহাস বিভাগের শিক্ষার্থী রিয়াদ হাসানের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বোরকা ও পর্দাশীল নারীদের নিয়ে কুরুচিপূর্ণ মন্তব্য করার অভিযোগ উঠেছে। এই মন্তব্যের নিন্দা জানিয়েছে বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রীসংস্থা।
৮ ঘণ্টা আগে