তাপমাত্রা কমে সারা দেশে শীতের তীব্রতা আরো বেড়েছে। এতে রাজধানীসহ সারা দেশে হিমেল হাওয়া বইছে, সঙ্গে ঘন কুয়াশা। ঘন কুয়াশার কারণে দিনের বেশিরভাগ সময় সূর্যের আলো দেখা না দেওয়ায় শীত বেশি অনুভূত হচ্ছে।
আগামী পাঁচদিন তাপমাত্রা কমার এই প্রবণতা অব্যাহত থাকতে পারে। এর ফলে শীতের অনুভূতি বাড়ার পাশাপাশি ভোরের দিকে কুয়াশার প্রকোপও থাকবে। এছাড়া উপমহাদেশীয় উচ্চচাপ বলয়ের কারণে দেশের ওপর শীতের প্রভাব আরো বাড়তে পারে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।
গতকাল বৃহস্পতিবার সংস্থাটির দেওয়া পাঁচদিনের পূর্বাভাসে বলা হয়, সারা দেশে আবহাওয়া প্রধানত শুষ্ক থাকবে। তবে মধ্যরাত থেকে সকাল পর্যন্ত দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে হালকা থেকে মাঝারি কুয়াশা পড়তে পারে। রাতের তাপমাত্রা সারা দেশে ১ থেকে ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস কমতে পারে এবং দিনের তাপমাত্রাও সামান্য কমবে।
গতকাল রাতে আবহাওয়াবিদ হাফিজুর রহমান আমার দেশকে বলেন, দেশের কোথাও শৈত্যপ্রবাহ না থাকলেও তাপমাত্রা কমে শীত বেশি অনুভূত হচ্ছে। এ অবস্থা আরো কয়েকদিন অব্যাহত থাকবে। এরপর নতুন বছরের শুরুতেই শীত আরো তীব্র আকারে জেঁকে বসতে পারে। তবে এ মুহূর্তে শৈত্যপ্রবাহের কোনো পূর্বাভাস নেই।
আবহাওয়াবিদ নাজমুল হকের মতে, শৈত্যপ্রবাহের পরিস্থিতি তৈরি হতে দেশের অন্তত দুই থেকে তিনটি এলাকায় তাপমাত্রা ১০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের নিচে নেমে আসে। বর্তমানে সে ধরনের পরিস্থিতি সৃষ্টি না হলেও তাপমাত্রা পর্যালোচনায় দেখা গেছে, বৃহস্পতিবার উত্তরের রাজশাহী ও রংপুর বিভাগের কয়েকটি জেলায় ১০ দশমিক দুই থেকে ১১ দশমিক পাঁচ ডিগ্রি সেলসিয়াসের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়।
গতকাল সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ১০ দশমিক দুই ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয় রাজশাহী জেলায়। এছাড়াও উত্তরের জেলা দিনাজপুরে ১০ দশমিক পাঁচ, নীলফামারিতে ১০ দশমিক চার, পঞ্চগড়ে ১০ দশমিক ছয় ডিগ্রি সেলসিয়াস সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়। এদিন রাজধানীতে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ১৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
এদিকে শীত বাড়তে থাকায় খেটে খাওয়া ও নিম্নআয়ের মানুষের কষ্ট বেড়েছে। গতকাল সন্ধ্যার পর রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় হতদরিদ্র লোকজনকে শীতে জবুথবু হয়ে রাস্তার ধারে বসে থাকতে দেখা গেছে। এছাড়া হঠাৎ ঠান্ডা বেড়ে যাওয়ায় শীতের কাপড়ের দোকানে ও ফুটপাতের দোকানে বেশ ভিড় লক্ষ্য করা গেছে।
ফুটপাতের ব্যবসায়ীরাও বলছেন, বুধবারের পর থেকে শীত বেড়ে যাওয়ায় দোকানে ক্রেতাদের ভিড় বেড়েছে। বিক্রিও আগের তুলনায় কিছুটা বেড়েছে। তবে তিনদিনের ছুটির কারণে রাজধানীতে মানুষের উপস্থিতি কম।
আবহাওয়া অধিদপ্তরের পূর্বাভাস অনুযায়ী, শুক্রবার ও শনিবার সারাদেশে রাতের তাপমাত্রা সামান্য বাড়তে পারে এবং দিনের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে। তবে এ সময় শীতের অনুভূতি আগের মতোই অনুভূত হবে।
রোববার আবারও তাপমাত্রা কমার সম্ভাবনা রয়েছে। এদিন সারাদেশে রাত ও দিনের তাপমাত্রা সামান্য কমলে শীতের তীব্রতা কিছুটা বাড়তে পারে। পরদিন সোমবার রাতের তাপমাত্রা কিছুটা কমলেও দিনের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে।
আমার দেশের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

