বদরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা একেএম আতিকুর রহমান কৃষকলীগের নেতা বেলাল হোসেন লাভলুর সুপারিশে সাংবাদিক মনিরুজ্জামান মনিরের বিরুদ্ধে মামলা নেওয়ায় রংপুরজুড়ে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।
সাংবাদিক মনিরুজ্জামান মনির রংপুর স্থানীয় দৈনিক পরিবেশ পত্রিকার বদরগঞ্জ উপজেলা প্রতিনিধি হিসেবে কর্মরত রয়েছেন।
জানা যায়, গত ২৩ নভেম্বর সকাল আটটায় সাংবাদিক মনিরুজ্জামান মনিরের বাবা আব্দুল আজিজ শাহ বাইসাইকেল নিয়ে রাস্তা দিয়ে যাওয়ার পথে আওয়ামী লীগের কর্মী উপজেলার বিষ্ণুপুর ৭ নং ওয়ার্ডের আওয়ামী লীগের কর্মী শওকত আলীর নির্দেশনায় ৭ নং ওয়ার্ডের সভাপতি তোফাজ্জল হোসেন ও তার লোকজন আটক করে মারধর করেন। মারধরের কারণে মাথায় আঘাত পেয়ে রক্তাক্ত অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি হন। এ ঘটনায় বদরগঞ্জ থানায় সাংবাদিক মনিরুজ্জামান মনির বাদী হয়ে একটি মামলা দায়ের করেন। সেই মামলায় কোনো আসামিকে গ্রেফতার না করে বদরগঞ্জ থানার ওসি এ কে এম আতিকুর রহমান কৃষক লীগের বদরগঞ্জ উপজেলা সাধারণ সম্পাদক বেলাল হোসেন লাভলু সুপারিশে ইউনিয়ন বিএনপি নেতা তোফাজ্জল হোসেনকে বাদি করে কোনো তদন্ত ছাড়াই ৩২৬ ধারায় মনিরুজ্জামানসহ ৮ জনের নাম উল্লেখ করে কাউন্টার মামলা দায়ের করেন।
কৃষক লীগ নেতার সুপারিশে তদন্ত ছাড়াই একজন সাংবাদিকের বিরুদ্ধে মিথ্যে একটি মামলা নেওয়ায় বদরগঞ্জ থানার ওসির বিরুদ্ধে সাংবাদিকদের মাঝে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।
এ বিষয়ে বদরগঞ্জ প্রেসক্লাবের সদস্য মোস্তাফিজুর রহমান মোস্তা, আফতাবুজ্জামান তাজসহ সাংবাদিক নেতারা জানান, বদরগঞ্জ থানার ওসি তদন্ত না করে একজন সাংবাদিকের বিরুদ্ধে এভাবে মিথ্যা একটি মামলা ৩২৬ ধারায় রেকর্ড করবেন এটা আমাদের ধারণা ছিল না। আমরা ওসি সাহেবকে ভালো মনে করেছিলাম। এই মামলায় প্রমাণ করে তিনি এখনো ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ দোসরদের পক্ষপাতিত্ব করছেন। কারণ কৃষক লীগের একজন নেতা থানায় গিয়ে ওসির সামনে বসে কিভাবে একজন সাংবাদিকের নাম মামলা করেন আর সেই মামলা কিভাবে তিনি নিলেন এটা আমাদের মুক্ত স্বাধীনতার পরিপন্থি। বিষয় আমরা সঠিক তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে আশা করছি।
এ বিষয়ে সাংবাদিক মনিরুজ্জামান মনির বলেন, গত ২৩ নভেম্বর সকালে আমার বাবার জমি বাড়ি দেখতে গিয়ে রাস্তার মধ্যে মারধর করে মাথা ফাটিয়ে দেন শওকত আলীর নির্দেশনায় তোফাজ্জল ও তার লোকজন। পরের স্থানীয় লোকজন উদ্ধার করে বদরগঞ্জ হাসপাতালে ভর্তি করান। সেখানে আমাদের পরিবারের কোনো লোকজন ছিল না। অথচ বদরগঞ্জ থানার ওসি কৃষক লীগের নেতার সুপারিশে ৮-৯ জনের নাম উল্লেখ করে একটি মামলা দায়ের করেন।
মামলা তদন্তকারী কর্মকর্তা এস আই আবু বক্কর সিদ্দিক জানান, এর আগে মনিরুজ্জামান বাদী হয় একটি মামলা করেছেন সেটি আমার কাছে রয়েছে এখন হয়ত বা পরের কাউন্টার মামলাটি আমার কাছেই দিবেন আমি তদন্ত করে দেখব আসলে বিষয়টা কি।
বদরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওসি একেএম আতিকুর রহমান জানান, সাংবাদিকের বাবাকে মারধরের ঘটনায় ওই দিন রাতেই থানায় একটি মামলা হয়। গত ২৫ তারিখে তোফাজ্জল হোসেন বাদী হয়ে থানায় মামলা করেন। মামলার প্রধান আসামি কিভাবে আবারও থানায় এসে মামলা করে এক প্রশ্নের জবাবে একেএম আতিকুর রহমান বলেন, তারা পূর্বেই এজহার দিয়েছিল ২৫ তারিখ রাতে এই মামলাটি করা হয়।
এ বিষয়ে সার্কেল বি অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সঞ্জয় কুমার সরকার জানান, জানান, মামলার বিষয়টি আমার জানা নেই তবে যে ধারায় মামলা হোক আমরা তদন্ত করে তার প্রমাণিত না হলে সেই ধারাটি বাদ দেই। আওয়ামী লীগ নেতা থানায় এসেছিস সামনে বসে মামলা দিল আর ওসি নিলেন এমন প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন বিষয়টা তো আমি জানিনা একটু খোঁজ নিয়ে দেখি।