এখনো আটক আছেন ১১৭ জন
মিয়ানমারের বিদ্রোহী গোষ্ঠী আরাকান আর্মির (এএ) সদস্যরা কক্সবাজারের টেকনাফের নাফ নদ থেকে আবারও দুটি নৌকাসহ ছয় জেলেকে ধরে নিয়ে গেছে। আটকদের মধ্যে দুজন বাংলাদেশি এবং চারজন রোহিঙ্গা বলে জানা গেছে।
গত বুধবার ভোরে টেকনাফের ঝিমংখালি নাফ নদ-সংলগ্ন এলাকা থেকে তাদের অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে নিয়ে যাওয়া হয়। এর কয়েকদিন আগেও দুই জেলেকে ধরে নিয়ে গেছে রাখাইন রাজ্যের নিয়ন্ত্রণ নেওয়া আরাকান আর্মি।
গত বুধবার আটক দুই বাংলাদেশি জেলে হলেন টেকনাফের হোয়াইক্যং ২ নম্বর ওয়ার্ড উত্তরপাড়ার বাসিন্দা আবুল কাশেমের ছেলে সেলিম (৫০) ও উনচিপ্রাং ৩ নম্বর ওয়ার্ড রইক্ষ্যংয়ের অলি হোসেনের ছেলে রিয়াজ উদ্দিন (১৮)।
স্থানীয় জেলেরা জানান, আরাকান আর্মির তাণ্ডবের কারণে এখন নাফ নদে কোনো জেলেই নিরাপদ নয়। স্থানীয় জেলেদের বরাত দিয়ে হোয়াইক্যং ২ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য সিরাজুল মোস্তফা লালু জানান, তারা জেলেদের ওপর প্রতিনিয়ত চড়াও হলেও তাদের ওপর চাপ দেওয়ার যেন কেউ নেই। এ ঘটনার প্রতিকার চায় স্থানীয় জেলেরা।
টেকনাফ বিজিবির তথ্যমতে, চলতি বছরের ৯ মাসে ২৩৫ জেলেকে আটক করেছে আরাকান আর্মি। এর মধ্যে ১২৪ জন ফেরত এসেছেন। আটকা রয়েছেন আরো ১১১ জন। তাদের সঙ্গে নতুনভাবে যুক্ত হলেন আরো ছয়জন। আটকদের মধ্যে অন্তত ৬২ জন রোহিঙ্গা বলে জানা গেছে। বর্তমানে আটক জেলে পরিবারগুলোর মধ্যে চরম উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা দেখা দিয়েছে ।
মূলত, আরাকান রাজ্যে সফলতা পাওয়ার পর থেকেই নাফ নদে আরাকান আর্মির উৎপাত বেড়েছে । ২ বিজিবি অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল আশিকুর রহমান বলেন, আরাকান রাজ্যে কোনো স্বীকৃত সরকার নেই।
ফলে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পক্ষ থেকে এ বিষয়ে বৈধভাবে কারো সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব হচ্ছে না। এরপরও আমরা অনেক জেলেকে ফিরিয়ে আনতে সক্ষম হয়েছি। বাকি আটক জেলেদেরও ফিরিয়ে আনার ব্যাপারে চেষ্টা অব্যাহত আছে।
টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ইনামুল হাফিজ নাদিম জানান, বিষয়টি সংশ্লিষ্ট বাহিনীকে জানিয়ে তাদের উদ্ধারে কাজ করতে বলা হয়েছে। আমরা শিগগির এ ব্যাপারে ব্যবস্থা নেব। আরাকান আর্মির হাতে আটক জেলেদের ফিরিয়ে আনতে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে সবাইকে তিনি আশ্বস্ত করেন।