ফরিদপুরের বোয়ালমারীতে বারাশিয়া নদীতে ডুবে দুই বছরের এক শিশুর মর্মান্তিক মৃত্যু হয়েছে। বৃহস্পতিবার সকালে উপজেলার শেখর ইউনিয়নের মাগুরা গ্রামে এ হৃদয়বিদারক ঘটনাটি ঘটে।
নিহত শিশুটির নাম হুসাইন শিকদার (২)। শিশুটি ওই গ্রামের মো. তরিকুল ইসলাম ও আরজিনা বেগমের সন্তান।
পরিবার ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, সকাল সাড়ে ৮ টার দিকে হুসাইন তার দাদি আকলিমা বেগম (৬৫) এর সঙ্গে বাড়ির পাশের রাস্তায় আসে। কিছুক্ষণ পর দাদী তাকে বাড়ি পাঠিয়ে নিজে মেয়ের (ননদ) বাড়িতে বেড়াতে যান। প্রায় আধা ঘণ্টা পর বাড়ি ফিরে তিনি জানতে পারেন, শিশুটি বাড়িতে নেই।
হুসাইনের মা আরজিনা বেগম বলেন, “আমি তখন রান্নাঘরে মাছ কাটছিলাম। আমি ভেবেছিলাম আমার শ্বাশুড়ির সঙ্গে ছেলেটা আছে। পরে শুনি তিনি তাকে রেখে ননদের বাড়ি গেছেন। তখন নদীর পাড়ে গিয়ে দেখি, ছেলের স্যান্ডেলটা পানিতে ভাসছে”
শিশুর বাবা তরিকুল ইসলাম কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, “কখন যে আমার ছেলেটা নদীতে পড়ে গেছে, আমরা জানি না। ভেবেছিলাম সে দাদির সঙ্গে আছে। নদীতে ছেলের স্যান্ডেল ভাসতে দেখে বুকটা ছিঁড়ে গেল।”
এ খবর ছড়িয়ে পড়লে এলাকায় শোকের ছায়া নেমে আসে। পরিবারের আহাজারিতে কেঁপে উঠছে নদীর তীর। স্থানীয়রা প্রায় ৫০-৬০ জন মিলে নদীতে তল্লাশি চালান। খবর পেয়ে ফরিদপুর ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরি দল সকাল সাড়ে দশটা থেকে টানা চার ঘণ্টা ধরে উদ্ধার অভিযান চালায়, তবে শিশুটির মরদেহ তখনও উদ্ধার সম্ভব হয়নি।
ফরিদপুর ফায়ার সার্ভিসের ফায়ার ফাইটার মো. তোফাজ্জল বলেন, “খবর পেয়ে আমরা ঘটনাস্থলে এসে ৪-৫ ঘণ্টা ধরে তল্লাশি চালিয়েছি। শিশুটির লাশ উদ্ধারের অভিযান অব্যাহত রয়েছে।”
গ্রামজুড়ে এখন শুধু কান্না আর শোক। নদীর পাড়ে নিথর হয়ে বসে আছেন মা-বাবা — তাঁদের চোখের পানিই যেন বলে দিচ্ছে, ছোট্ট হুসাইনকে আর কোনোদিন কোলে নিতে পারবেন না তারা।