জনবল ও অর্থ বরাদ্দসহ নানা সংকটে কুমিল্লায় মুখ থুবড়ে পড়েছে রেশম উৎপাদন। রেশম চাষ ও উৎপাদন দীর্ঘদিনেও লাভজনক করা যাচ্ছে না। এতে ঘুরে দাঁড়াতে পারছে না এ শিল্প। বরং দিনদিনই এ শিল্পের দৈন্যদশা বাড়ছে।
জানা গেছে, “রেশম গুটি কাঁচা সোনা, এত আয় যায় না গোনা’, ‘করো যদি রেশম চাষ, আসবে টাকা বারো মাস”Ñএমন স্লোগান নিয়ে কুমিল্লার ময়নামতিসহ দেশের ২৩টি রেশম উৎপাদন ও গবেষণা কেন্দ্র গড়ে তোলা হয়। শুধু ময়নামতি রেশম উৎপাদন ও গবেষণা কেন্দ্র থেকে সরকারি কোষাগারে এক লাখ টাকা জমা হলেও সব মিলিয়ে বছরে ব্যয় হচ্ছে প্রায় ১০ লাখ টাকা। তবে ময়নামতি কেন্দ্রে গবেষণার মাধ্যমে রেশম ডিম ও গুটি উৎপাদনে বেশ সফলতা অর্জন করলেও এখানে বিনামূল্যে প্রশিক্ষণসহ ডিম সরবরাহ করেও রেশম চাষে লোকজনকে আগ্রহী করা যাচ্ছে না।
সরেজমিন ঘুরে জানা গেছে, জেলার বুড়িচং উপজেলার ময়নামতি পাহাড়ি এলাকায় ১৯৬২ সালে ১৬ একর ভূমিতে ময়নামতি রেশম উৎপাদন ও গবেষণা কেন্দ্রের যাত্রা শুরু হয়। ভূমির বৃহদাংশে রেশম উৎপাদন করা হয় এবং বাকি অংশে রয়েছে অফিস, গবেষণা, ল্যাবরেটরি, আবাসিক ও প্রশিক্ষণ কেন্দ্র। তবে রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে ডরমিটরিসহ ভবনগুলোর অবস্থা জরাজীর্ণ। এক সময় এখানে রেশম গুটি থেকে সুতা তৈরির যন্ত্রপাতি থাকলেও এখন নেই। এখন এ রেশম কেন্দ্রে জনবল আছে মাত্র দুজন। এর মধ্যে একজন ম্যানেজার ও অপরজন টেকনিক্যাল সুপারভাইজার। সূত্র জানায়, প্রাচীন ঐতিহ্যের এ শিল্পকে বাঁচাতে বছরে সরকারের বিপুল অর্থ ব্যয় হচ্ছে।
আঞ্চলিক রেশম সম্প্রসারণ কার্যালয় ঢাকার উপপরিচালক মো. আবদুল মালেক জানান, দেশে রেশম সুতার যথেষ্ট চাহিদা থাকলেও বিদেশি সুতা ও নকল রেশম সুতায় বাজার দখল করার কারণে দেশি এ শিল্পে সুদিন ফিরছে না। তবে যেসব প্রতিবন্ধকতা আছে তা দূরীকরণে সরকার কাজ করছে। তিনি আরো জানান, বর্তমানে প্রকল্পের অধীনে দেশের ২৩ জেলায় রেশম কেন্দ্র আছে। প্রয়োজনীয় জনবল ও অর্থ সংকটের মাঝেও রেশম ডিম ও গুটি উৎপাদনে ময়নামতিসহ দেশের অন্যান্য রেশম কেন্দ্রের সফলতা আছে বলা যায়। এ শিল্পের প্রসারে সরকার প্রকল্পের মাধ্যমে বছরে বিপুল অর্থ ভর্তুকি দিয়ে সহায়তা করছে।