কক্সবাজারের কুতুবদিয়া প্রধান ডাকঘরে গুরুত্বপূর্ণ ছয় সেবা বন্ধ হয়ে আছে প্রায় পাঁচ বছর ধরে। অনলাইন জটিলতায় এসব সেবা থেকে বঞ্চিত দ্বীপের দেড় লাখ মানুষ। সরকার হারাচ্ছে রাজস্ব। নেই কোনো প্রতিকার। আছে নামমাত্র জনবল। তা দিয়েই খুঁড়িয়ে চলছে উপজেলার ডাকবিভাগের সেবা।
জানা যায়, ২০২১ সাল থেকে কুতুবদিয়ার প্রধান ডাকঘরে এফডি, এসডি, পরিবার সঞ্চয়পত্র, ত্রৈমাসিক সঞ্চয়পত্র, বাংলাদেশ সঞ্চয়পত্র, পেনশন সঞ্চয়পত্রসহ সব সঞ্চয়পত্র সেবা বা লেনদেন বন্ধ হয়ে আছে। বেসরকারি সেবার চেয়ে আস্থার প্রতীক হিসেবে অনেকেই ডাকঘরে এ সেবাগুলো নিতে এসে ফিরে যাচ্ছেন। ডাকঘরে আসা বৃদ্ধ রওশন আরা জানান, মেয়াদী সঞ্চয় হিসাব খুলতে এসে ফিরে যাচ্ছি। পোস্টমাস্টার জানাল, এ সেবা এখন বন্ধ আছে।
অপরদিকে খুঁড়িয়ে চলা ডাকঘরে জনবল সংকট পুরোনো। পোস্টমাস্টার একজন, অপারেটর দুই পদে কেউ নেই। একজন পিয়ন, একজন রানার, একজন অস্থায়ী চেকার দিয়ে চলছে প্রধান ডাকঘরটি। জনবল আর অনলাইন জটিলতায় গুরুত্বপূর্ণ সেবা বন্ধ থাকায় সরকার হারাচ্ছে রাজস্ব। সেবাগুলোর শুরুতে প্রতিমাসে গড়ে অন্তত দুই কোটি টাকার লেনদেন হতো বলে জানান ডাকঘর কর্তৃপক্ষ।
শুধু সরকারি সেবা নয়, দুই বছর ধরে বন্ধ হয়ে আছে ডিজিটাল পোস্ট অফিস কম্পিউটার প্রশিক্ষণ সেন্টারও। ২০২৩ সালে ডাকঘরের উদ্যোক্তার মাধ্যমে অর্ধশতাধিক শিক্ষার্থী তিনমাস মেয়াদে অফিস অ্যাপ্লিকেশন ও ছয় মাস মেয়াদের ডিপ্লোমা কম্পিউটার প্রশিক্ষণ কোর্সে ভর্তি হয়েও তাদের পরীক্ষা নেওয়া হয়নি আদৌ।
বিপুল অঙ্কের টাকা অগ্রিম নিয়ে খোঁজ নেই উদ্যোক্তার। বিপাকে পড়া শিক্ষার্থীরা প্রশিক্ষণ নিয়েও দিতে পারেননি পরীক্ষা, পায়নি সনদও। উপজেলা পোস্ট মাস্টার মো. জালাল উদ্দিন বলেন, অনলাইন জটিলতায় গুরুত্বপূর্ণ ছয় সেবা বন্ধ প্রায় পাঁচ বছর ধরে। ডাকজীবন বীমাটি শুধু চালু রয়েছে। বন্ধ থাকা সেবাগুলো পুনরায় চালু করা গেলে গ্রাহকের সংখ্যা অনেকাংশে বেড়ে যেত। কম্পিউটার প্রশিক্ষণ সেন্টারে অর্ধশত প্রশিক্ষনার্থীদের পরীক্ষা গ্রহণে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ থেকে তালিকা চাওয়া হয়েছিল। তিনি তালিকা প্রেরণ করেছেন। বিষয়টা থেমে আছে কেন জানেন না। অনলাইন জটিলতা কাটিয়ে অপারেটর দিতে বারবার পত্র দিচ্ছেন। কোনো কাজ হয়নি।