বাগেরহাটের রামপালে আদালতের নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে স্কুলশিক্ষকের দোকান দখল, লুটপাট ও ভাঙচুরের অভিযোগ উঠেছে পুলিশের এক উচ্চপদস্থ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে। পুলিশ কর্মকর্তার বাড়ি বাগেরহাটের রামপাল উপজেলার গিলাতলা এলাকায়।
এ ঘটনায় ভুক্তভোগী স্কুলশিক্ষক তালুকদার আলতাফ হোসেন (৫৯) প্রতিকার চেয়ে আদালতে মামলা দায়ের করেছেন। তালুকদার আলতাফ হোসেন মুজিবনগর চর বাঁশতলী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সহকারী শিক্ষক হিসেবে কর্মরত আছেন। রামপাল উপজেলার গিলাতলা বাজারের মৃত নওশের আলী তালুকদারের ছেলে তিনি। পুলিশ কর্মকর্তার প্রভাব খাটিয়ে স্থানীয় বিএনপি নেতা ইসরাফিল বাহিনীর নেতৃত্বে দোকান দখল, লুটপাট ও ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে বলে তিনি অভিযোগে জানান।
অভিযোগে তালুকদার আলতাফ হোসেন বলেন, ‘গিলাতলা বাজারস্থ আমার পিতার ক্রয়কৃত ১৩ শতক সম্পত্তিতে আমরা সকল ভাইবোন ৩০ বছর ধরে বসবাস করে আসছি। পরে আমার মাতা ও বোনের অংশ ক্রয় করে তিনতলা ভবন নির্মাণ করে বসবাস করছি। বসতবাড়ির সামনে কয়েকটি দোকান ঘর করে ভাড়াও দিয়েছি। আমার ভবনের পশ্চিম পাশে আমার ছোট ভাই মো. রফিকুল হাওলাদার তার ভাগের অংশ অতিরিক্ত পুলিশ মহাপরিদর্শক শেখ ওমর ফারুকের কাছে বিক্রি করে দেয়। গত ২৪ আগস্ট স্থানীয় বিএনপি নেতা শেখ মো. ইসরাফিল পুলিশ মহাপরিদর্শকের পরিচয় দিয়ে কিছু সন্ত্রাসীকে সাথে নিয়ে আমার ভবনের সামনের ভাড়াটিয়াদের দোকানঘর বন্ধ করে দেয়, বাড়ির সীমানা প্রাচীর ভেঙে প্রবেশ পথ আটকে দেয়। বিষয়টি রামপাল থানায় জানালে পুলিশ ঘটনাস্থলে আসে ও অভিযুক্তদের থানায় আসতে বলে। কিন্তু ইসরাফিল ও তার লোকজন থানার নির্দেশ অমান্য করে তাদের কর্মকাণ্ড অব্যাহত রাখে। পরে পহেলা সেপ্টেম্বর আদালতের মাধ্যমে ১৪৪ ধারা জারি করা হলেও ইসরাফিল ও তার লোকজন তাও অমান্য করে। ১৫ সেপ্টেম্বর দোকানঘর ভাঙচুর, লুটপাট করে বাঁশ দিয়ে আটকে দেয়। এ বিষয় নিয়ে বাড়াবাড়ি করলে প্রাণে মেরে ফেলবে বলে হুমকি প্রদান করে ইসরাফিল ও তার লোকজন। এরপর থেকে চরম নিরাপত্তাহীনতার ভুগছেন বলে জানান স্কুলশিক্ষক তালুকদার আলতাফ হোসেন ও তার পরিবার।
এ বিষয়ে সোমবার (২০ অক্টোবর) সকালে রামপালের নিজ বাড়িতে সাংবাদিকদের কাছে এই অভিযোগ করে কান্নায় ভেঙে পড়েন ভুক্তভোগী তালুকদার আলতাফ হোসেনের স্ত্রী আমিরুন্নেছা ও কন্যা ফারহানা জান্নাত। তারা নিজেদের সম্পত্তি ফিরে পেতে জীবনের নিরাপত্তা চেয়ে প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেন।
অভিযুক্ত ইসরাফিল বলেন, আমরা কোনো হামলা, ভাঙচুরের সাথে সম্পৃক্ত নই। শুধু বাঁশ দিয়ে শুধু সীমানা দিয়েছেন বলে জানান।
পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ মহাপরিদর্শক শেখ ওমর ফারুকের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলেও কোনো মন্তব্য পাওয়া সম্ভব হয়নি।
এ বিষয়ে রামপাল থানার ভারপ্রাপ্ত (ওসি) মো. আতিকুর রহমান বলেন, এ বিষয়ে অভিযোগ পেয়েছি। পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন বলে জানান তিনি।