হোম > সারা দেশ > রাজশাহী

বগুড়ায় ৩ বছরে বন্ধ দুই শতাধিক পোলট্রি খামার

উৎপাদন খরচ বৃদ্ধি

সবুর শাহ্ লোটাস, বগুড়া

উৎপাদন খরচ লাগামহীনভাবে বেড়ে যাওয়ায় বগুড়ায় পোলট্রি শিল্প বড় ধরনের সংকটে পড়েছে। গত তিন বছরে জেলার দুই শতাধিক খামার বন্ধ হয়ে গেছে। ফলে কমে গেছে ডিম ও মাংস উৎপাদনও। যারা টিকে আছেন, তারাও বেশ চাপের মুখে ব্যবসা চালাচ্ছেন। তাই অনেকে ব্যবসা ছেড়ে দেওয়ার চিন্তা-ভাবনা করছেন।

বগুড়ার শাজাহানপুরের নিশ্চিন্তপুর গ্রামের আরিফুল ইসলাম ২০১০ সাল থেকে পোলট্রি ব্যবসায় যুক্ত। তিনি বলেন, ‘করোনা সময়েও এমন খারাপ সময় পার করতে হয়নি। খাদ্য, ওষুধ, সরঞ্জাম, লাইটিং, বিদ্যুৎসহ সব ধরনের খরচ বেড়েছে অন্তত ৫০ শতাংশ। যে খাবারের বস্তার দাম গত বছর ছিল দুই হাজার ৬০০ টাকা, সেটি এখন বেড়ে তিন হাজার ২৫০ টাকা হয়েছে। কিন্তু মুরগির কেজি এখনো ১৫০ টাকা। এ অবস্থায় খামার চালানো অসম্ভব হয়ে পড়েছে।’ খামারের জন্য বছরে ৪০ হাজার টাকা ভাড়াও তাকে বহন করতে হয়। তাই ধীরে ধীরে ব্যবসা গুটিয়ে নিচ্ছেন তিনি।

গাবতলীর খামারি হোসেন আলী পড়াশোনা ও প্রশিক্ষণ শেষে ঋণ নিয়ে পাঁচ হাজার লেয়ার মুরগির খামার করেছিলেন। কিন্তু প্রতিটি ডিম উৎপাদনে খরচ পড়ে নয় টাকা, বিক্রি করতে হয় নয় টাকা ৬০ পয়সায়, যা ব্যবসা চালাতে যথেষ্ট নয়। তাই দেড় বছর আগেই খামার বন্ধ করতে বাধ্য হয়েছেন তিনি।

জেলা পোলট্রি খামার ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক শফিকুল ইসলাম বলেন, ২০২০ সালের পর থেকে খাদ্যের দাম বেড়েছে কিন্তু ডিমের দাম বাড়েনি, মুরগির দাম বাড়েনি। খাদ্যের দাম বাড়লে কেউ কিছু বলে না, কিন্তু ডিম, মুরগির দাম বাড়লে হৈচৈ পড়ে যায়। খাদ্যপণ্য ও ওষুধের দাম বাড়ায় অনেক খামার বন্ধ হয়ে গেছে, যারা টিকে আছে তারাও জোড়াতালি দিয়ে টিকে আছেন। এতে ছোট খামারিরা বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন।

তিনি বলেন, আগে এ জেলায় প্রতি বছর ডিম উৎপাদন হতো ৬৭ কোটি ১৩ লাখ। দুই বছর ধরে কমে উৎপাদন হচ্ছে গড়ে সাড়ে ৫৬ কোটি পিস। তিন বছরে ২ শতাধিক খামার বন্ধ হওয়ায় ডিমের উৎপাদনে এ প্রভাব পড়েছে। চলতি বছর ডিমের উৎপাদন ৫০ কোটিও পেরুবে না বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।

সদরের হক ট্রেডার্সের মালিক রবিউল হক জানান, খাদ্যের দাম বাড়ায় খামারিরা বিপাকে আছেন। মুরগির প্রধান খাদ্য ভুট্টা। দেশে উৎপাদিত ভুট্টায় গড়ে ৩ মাস পর্যন্ত চলে। বাকি ভুট্টা আসে ভারত, ব্রাজিল, ইউক্রেন ও রাশিয়া থেকে। কিন্তু যুদ্ধের কারণে ইউক্রেন ও রাশিয়া থেকে ভুট্টা আমদানি কমে যাওয়ায় ভারতের ওপর নির্ভর করতে হচ্ছে, এতে খরচ অনেক বেড়ে গেছে।

তিনি আরো বলেন, আগে যেখানে একটি লেয়ার মুরগি প্রতিদিন ডিম দিত, এখন সে উৎপাদন কমেছে। আমার খামারে চার হাজার মুরগি প্রতিদিন সর্বোচ্চ তিন হাজার ৫০০ ডিম দেয়।

শাজাহানপুরের রিপন মিয়া, সোহাগ, রনি, কামাল ও মোমিনসহ আরো কয়েকজন খামারি অভিযোগ করেন, খামার নিয়ে অসুবিধায় আছি। এ খাতে সরকারি সুবিধা খুব কমই পাওয়া যায়। সরকারি প্রশিক্ষণ হয়, সে তথ্যও সঠিকভাবে জানানো হয় না।

এদিকে বগুড়া জেলা প্রাণিসম্পদ বিভাগ সূত্র জানিয়েছে, জেলায় বর্তমানে লেয়ার খামার রয়েছে এক হাজার ১২৩টি এবং দেশি মুরগির লেয়ার খামার দুই হাজার ৭৩৪টি।

জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. আশরাফুল ইসলাম বলেন, ডিম উৎপাদন বাড়াতে খামারিদের সহায়তা এবং বেকারদের উদ্যোক্তা হতে নতুন খামার স্থাপনে উদ্বুদ্ধ করা হচ্ছে।

সারদা পুলিশ একাডেমি থেকে পালালেন ডিআইজি এহসানউল্লাহ

একই কমিটিতে জামায়াত-আ.লীগ-বিএনপি একাকার, ক্ষুব্ধ স্থানীয়রা

শেষ কর্মদিবসে স্কুলেই মারা গেলেন প্রধান শিক্ষক

রাজশাহী মহানগর এনসিপির নতুন কমিটি ঘোষণা

বগুড়ায় বিএনপি নেতার বাস ভাঙচুর করলেন ছাত্রদল নেতা

রায়গঞ্জের ভূঁইয়াগাতী থেকে দুই শিশু উদ্ধার

ছোট্ট শিশু মরিয়মের কাঁধে এখন সংসারের বোঝা

ট্রাকের ধাক্কায় বাইকে আগুন, পুড়ে মরলেন যুবক

পুলিশকে হামলা করে হাতকড়াসহ ছিনিয়ে নেয়া আ.লীগ নেতা গ্রেপ্তার

রাজশাহীতে অনলাইন জুয়ার নীরব আগ্রাসন