স্বামীকে হত্যার ২৪ ঘণ্টার মধ্যে রহস্য উদঘাটন, স্ত্রীসহ আটক ২ স্টাফ রিপোর্টার, বগুড়া বগুড়ায় স্ত্রীর পরকীয়ার বলি হলেন বেকারি ব্যবসায়ী জহুরুল ইসলাম।
গত মঙ্গলবার (৪ নভেম্বর) সকালে স্থানীয় এলাকাবাসী সদরের নুনগোলা ইউনিয়নের হাজরাদিঘি তালুকদারপাড়া এলাকায় স্থানীয় এক ধানক্ষেতের পাশে জহুরুল ইসলাম নামের এক বেকারি ব্যবসায়ীর রক্তাক্ত লাশ পড়ে থাকতে দেখেন। পরে তারা খবর দিলে সদর থানা পুলিশ নিহতের লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠায়। মর্মান্তিক এই হত্যাকাণ্ডে এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্য সৃষ্টি হলে নড়েচড়ে বসে প্রশাসন। ঘটনার পর থেকেই সদর থানা পুলিশের একাধিক টিম খুনের রহস্য উদ্ঘাটন এবং হত্যাকাণ্ডের সাথে জড়িত অপরাধীদের শনাক্ত করতে তদন্ত শুরু করে। অবশেষে পুলিশ হত্যাকাণ্ডের ২৪ ঘণ্টা না পেরোতেই মোটিভ ও খুনের সাথে জড়িত দুইজনকে গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হয়েছে। গ্রেপ্তার হওয়া দুইজন হলেন নিহতের স্ত্রী শামিমা আক্তার (৩০) ও আপন খালাতো ভাই বিপুল মিয়া (৩৭)। তারা উভয়েই জহুরুল ইসলামের অগোচরে পরকীয়ায় লিপ্ত ছিল।
বুধবার (৫ নভেম্বর) দুপুরে বগুড়া সদর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোস্তফা মঞ্জুর সাংবাদিকদের বলেন, নিহত ব্যবসায়ী জহুরুল ইসলামের স্ত্রী তার আপন মামাতো বোন। শামিমা আক্তার আর খালাতো ভাই বিপুল মিয়ার মধ্যে আগে থেকেই প্রেমের সম্পর্ক ছিল। তারা একে অপরকে পছন্দ করতো। কিন্তু শামিমার বিয়ে বিপুলের সাথে না হয়ে জহুরুলের সাথে হয়। তারপর থেকেই শামিমা ও বিপুল পরকীয়া করে আসছিল।
এদিকে শামিমা-জহুরুলের সংসারে এক পুত্র ও এক কন্যাসন্তানের জন্ম হয়। পরে বিপুল অন্য জায়গায় বিয়ে করলেও গোপনে পরকীয়া সম্পর্ক চলছিল। পুলিশি জিজ্ঞাসাবাদে বিপুল জহুরুলকে খুনের কথা স্বীকার করেছে। বিপুল ও শামিমা এই খুনের পরিকল্পনা করে। পরিকল্পনা মোতাবেক মঙ্গলবার রাতে জহুরুলের খাবারের সাথে ঘুমের ওষুধ মিশিয়ে দেয় শামিমা। এরপর ঘুমে আচ্ছন্ন হয়ে পড়লে বিপুল অচেতন জহুরুলকে কাঁধে তুলে ১০০ গজ দূরে একটি ধানক্ষেতের পাশে অর্ধনির্মিত বাড়ির কাছে নিয়ে যায়। তারপর প্রথমে ইটের দেয়ালে জহুরুলের মাথা সজোরে আঘাত করে। একপর্যায়ে জহুরুলের দেহ নিস্তেজ হয়ে ধানক্ষেতের পাশে পড়ে গেলে পাশে থাকা ভারী টাইলসের প্যান দিয়ে মাথায় আঘাত করে মৃত্যু নিশ্চিত করে।
এ ঘটনায় শামিমা আক্তারের পিতা শাহিনুর রহমান তালুকদার নিজে বাদী হয়ে হত্যা মামলা দায়ের করেছেন।