রংপুরের গঙ্গাচড়া উপজেলায় মহানবী হজরত মুহাম্মদকে (সা.) নিয়ে কটূক্তিমূলক পোস্ট দেওয়ার অভিযোগে রঞ্জন রায় নামে এক শিক্ষার্থীকে আটক করেছে গঙ্গাচড়া মডেল থানা পুলিশ।
শনিবার রাতে উপজেলার বেতগাড়ি ইউনিয়নের আলদাদপুর ছয়আনি গ্রাম থেকে তাকে আটক করা হয়। আটক রঞ্জন রায় রিট পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট (RIT), রংপুরের কম্পিউটার বিভাগের তৃতীয় বর্ষের ছাত্র এবং ওই গ্রামের সুজন কুমারের ছেলে।
স্থানীয় ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, ‘রঞ্জন রায় এলআরএম’ নামের একটি ফেসবুক আইডি থেকে গত পাঁচ দিন ধরে মহানবীকে (সা.) নিয়ে অবমাননাকর ও ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত হানে, এমন একাধিক পোস্ট দিয়ে আসছিলেন তিনি। বিষয়টি প্রশাসনের নজরে এলে গঙ্গাচড়া মডেল থানার একটি বিশেষ টিম তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় তাকে শনাক্ত করে আটক করে।
রঞ্জনের ‘গ্রেপ্তারের’ খবরে এলাকায় উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। শনিবার সন্ধ্যায় পাশের এলাকা থেকে শতাধিক লোক লাঠিসোঁটা নিয়ে স্লোগান দিতে দিতে বেতগাড়ী গ্রামে প্রবেশ করে। উত্তেজনার মধ্যে ভুল করে অভিযুক্তের বাড়ির বদলে এক প্রতিবেশীর বাড়িতে হামলা চালায় তারা।
পুলিশ ও সেনাবাহিনীর উপস্থিতি টের পেয়ে হামলাকারীরা সরে গেলেও আতঙ্কে শনিবার রাত থেকেই গ্রামের বেশিরভাগ পুরুষ সদস্য এলাকা ছেড়ে নিরাপদ স্থানে আশ্রয় নেন। রোববার সকালেও অনেক বাড়ি ফাঁকা দেখা গেছে। পরে দুপুরে আবারও একদল উত্তেজিত লোক দ্বিতীয় দফায় হামলা চালিয়ে চারটি বাড়িতে ভাঙচুর করে। পরে সেনা সদস্যরা গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন।
এক গ্রামবাসী বলেন, আমরা কিছুই বুঝে উঠতে পারিনি। হঠাৎ করেই লোকজন চিৎকার করে হামলা চালায়।
গঙ্গাচড়া থানার ওসি আল এমরান বলেন, ধর্মীয় কটূক্তির বিষয়ে প্রাথমিক সত্যতা পাওয়া গেছে। অভিযুক্ত রঞ্জন রায়ের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে এবং তাঁর বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।
গঙ্গাচড়ার ইউএনও মাহমুদ হাসান মৃধা বলেন, ঘটনার পরপরই প্রশাসনের পক্ষ থেকে ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনা হয়েছে। আমরা রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ এবং স্থানীয়দের সঙ্গে সার্বক্ষণিক যোগাযোগ রাখছি, যাতে কেউ গুজব ছড়িয়ে অস্থিতিশীলতা সৃষ্টি না করতে পারে।
প্রশাসনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হওয়া পর্যন্ত এলাকায় সেনাবাহিনী ও পুলিশের যৌথ টহল অব্যাহত থাকবে।