ঠাকুরগাঁও বালিয়াডাঙ্গীতে সম্পত্তি ভাগ বাটোয়ারা নিয়ে দ্বন্দ্ব ছিল চার বোন ও এক ভাইয়ের মধ্যে। মেয়ের বাড়িতে মারা যাওয়ায় লাশ দাফনের জন্য নিয়ে আসলে কবর খুঁড়তে ছেলের অনুমতি না মেলায় ২৩ ঘন্টা দেনদরবার করতে হয়েছে।
সোমবার বিকেল ৪টায় স্থানীয়দের উদ্যোগ ও থানা পুলিশের পরামর্শে দাফন সম্পন্ন।
জানা গেছে, একমাত্র ছেলের কাছে আশ্রয় না পাওয়া বাবা বৃদ্ধ বয়সে ছিলেন মেয়ের বাড়িতে। সেখানেই তার মৃত্যু হয়। কবর খুঁড়তে ২৩ ঘণ্টা দেরি হওয়ায় এলাকায় ব্যাপক সমালোচনা হচ্ছে। বালিয়াডাঙ্গী উপজেলার উপজেলার দু্ওসুও ইউনিয়নের পশ্চিম সরলিয়া গ্রামের তসলিম উদ্দীন (৭০)। একমাত্র ছেলে ভরণ পোষণ না করায় মহিষমারী গ্রামে মেয়ে বিউটি আক্তারের বাড়িতে দীর্ঘদিন ধরে ছিলেন। বিউটি আক্তার তার দেখাশুনা এবং চিকিৎসা করাচ্ছিলেন।
রোববার সন্ধ্যায় বার্ধক্যজনিত কারণে মারা যান তসলিম উদ্দীন। আত্মীয় স্বজনদের জানিয়ে রাতেই দাফন করার জন্য লাশ আনা হয় পশ্চিম সরলিয়া গ্রামে নিজ বাড়িতে। কিন্তু ছেলে মহসিন আলী বাবার লাশ বাড়িতে ঢুকাতে দেয়নি। চাচার বাড়িতে রাখা হয় রাতভর।
স্থানীয়রা জানান, মেয়েদের নামে সম্পত্তি লিখে দেয়ার কারণে তসলিম উদ্দীনের ছেলে মহসিন আলী বাবার মৃত্যু স্বাভাবিক হয়নি অভিযোগ তুলে রোববার রাতেই থানায় লিখিত অভিযোগ দেন। এরপরে লাশ দাফন নিয়ে জটিলতা তৈরি হয়। স্থানীয়দের অনুরোধে লাশ নেয়া হয় ছেলে বাড়িতে।
সোমবার দুপুরে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, মহসিন আলীর বাড়ির বারান্দায় খাটিয়ার উপর তসলিম উদ্দীনের লাশ রয়েছে। লাশের পাশে কোনো আত্মীয়-স্বজনকে দেখা যায়নি। বাড়িতে কথা বলতে চেষ্টা করলেও কেউ মুখ খুলেনি। কথা বলতে চায়নি লাশ পড়ে থাকা নিয়ে।
ছেলে মহসিন আলী জানান, বাবা বোনের বাড়িতে মারা যাওয়ায় সন্দেহ হয়েছিল। এ কারণে থানায় অভিযোগ করেছি। সম্পত্তি নিয়ে বিরোধ আগের। এইখানে সম্পত্তির কোনো বিষয় নয়। এখন আমরা সবাই আপোষ হয়ে গেছি।
ইউপি সদস্য হবিবুর রহমান বলেন, মৃত্যুর পরপরই জমি ভাগ বাটোয়ারা নিয়ে ছেলে লাশ আটকে রাখে। পরে দু’পক্ষকে নিয়ে বসে মীমাংসা করা হয়। দুপুরের পর কবরস্থানে কবর খোঁড়ার অনুমতি দেয় মহসিন আলী। এরপরে বিকাল ৪টায় জানাজা নামাজ শেষে তার বাবার দাফন করা হয়।
বালিয়াডাঙ্গী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা দুরুল হুদা বলেন, এটি সম্পূর্ণ পারিবারিক সমস্যা। গতরাতে ছেলে একটি অভিযোগ দিয়েছিল। আজ তারা কোনো অভিযোগ না থাকায় এবং মৃত্যুর বিষয়ে সন্দেহ দূর হওয়ায় ময়নাতদন্ত ছাড়াই লাশ দাফনের অনুমতি দেয়া হয়েছে।