সেমিনারে প্রাথমিক উপদেষ্টা বিধান রঞ্জন
প্রাথমিক শিক্ষার মানোন্নয়নে সুনামগঞ্জের ‘শান্তিগঞ্জ মডেল’ সব সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ছড়িয়ে দেওয়ার ওপর গুরুত্বারোপ করে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা উপদেষ্টা অধ্যাপক বিধান রঞ্জন রায় পোদ্দার বলেছেন, সারা দেশে এই উদ্যোগ ছড়িয়ে দেওয়া সম্ভব হলে প্রাথমিক শিক্ষার ক্ষেত্রে যুগান্তকারী পরিবর্তন ঘটবে।
প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে বুধবার ঢাকায় প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের উদ্ভাবনীমূলক মূল্যায়ন পদ্ধতি বিষয়ে আয়োজিত সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে উপদেষ্টা কথা বলেন।
সেমিনারে সুনামগঞ্জের শান্তিগঞ্জ উপজেলার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার সুকান্ত সাহার উদ্ভাবিত ‘শান্তিগঞ্জ মডেল’ বিষয়ে আলোচনা করা হয়।
শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের মধ্যে প্রতিযোগিতার মনোভাব তৈরি করা এবং শিশুদের বিদ্যালয়মুখী করার বিষয়ে সৃজনশীল এই মডেলটি ‘শান্তিগঞ্জ মডেল’ নামে স্বীকৃতি লাভ করেছে। এর মাধ্যমে চতুর্থ ও পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের মূল্যায়ন করা হয়। শিক্ষার্থীদের ফলাফলের ভিত্তিতে শিক্ষকদেরও পরোক্ষভাবে মূল্যায়ন করা হয়।
এই বিশেষ মানোন্নয়ন পরীক্ষা ও র্যাঙ্কিং ব্যবস্থা সুনামগঞ্জে একটি প্রতিযোগিতামূলক পরিবেশ তৈরি করেছে। পাশাপাশি শিক্ষার্থীদের স্কুলে নিয়মিত উপস্থিতি, পরীক্ষায় ৮০ শতাংশ শিক্ষার্থীর অংশগ্রহণ নিশ্চিত করা, বিষয়ভিত্তিক দুর্বলতা কাটিয়ে ওঠাসহ ঝরে পড়ার হার রোধে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখছে বলে মন্ত্রণালয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়।
সেমিনারে ‘শান্তিগঞ্জ মডেল’–এর প্রশংসা করে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা উপদেষ্টা বিধান রঞ্জন রায় পোদ্দার বলেন, সুনামগঞ্জের প্রাথমিক শিক্ষার মান উন্নয়নে গৃহীত এই পদক্ষেপ অত্যন্ত প্রশংসনীয় উদ্যোগ। পরীক্ষার ভিত্তিতে স্কুল ও বিষয়ভিত্তিক শিক্ষকদের র্যাঙ্কিং ব্যবস্থা সত্যিই এক ব্যতিক্রমী ব্যবস্থা।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে শিক্ষা উপদেষ্টা অধ্যাপক চৌধুরী রফিকুল আবরার বলেন, শিক্ষার মানোন্নয়নে বাস্তবসম্মত পদক্ষেপের ওপর জোর দিতে হবে। শিক্ষার মান নিয়ে যে উদ্বেগ দীর্ঘদিন ধরে বিদ্যমান, তা কাটাতে বাস্তবসম্মত ও নির্মোহ মূল্যায়ন ছাড়া অন্য কোনো পথ নেই।
প্রাথমিক ও গণশিক্ষা সচিব আবু তাহের মো. মাসুদ রানার সভাপতিত্বে সেমিনারে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা ও গণসাক্ষরতা অভিযানের নির্বাহী পরিচালক রাশেদা কে চৌধুরী, প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক আবু নূর মো. শামসুজ্জামান।
প্রাথমিক শিক্ষার মানোন্নয়নে উদ্ভাবনী পদক্ষেপ গ্রহণ করায় সুনামগঞ্জের জেলা প্রশাসক ড. মো. ইলিয়াস মিয়া ও শান্তিগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার সুকান্ত সাহাকে সম্মাননা স্মারক প্রদান করা হয়।