হবিগঞ্জ ২৫০ শয্যা সদর হাসপাতালে অভিযান চালিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক)। এসময় হাসপাতালের চিকিৎসা সেবা থেকে আর্থিক লেনদেন প্রায় সব ক্ষেত্রজুড়ে চরম অনিয়মের প্রমাণ মিলেছে।
মঙ্গলবার দুপুর থেকে শুরু হয়ে সন্ধ্যা পর্যন্ত চলে এ অভিযান। এসময় খাবার সরবরাহ, পরীক্ষা-নিরীক্ষা, চিকিৎসক উপস্থিতি ও রোগী সেবার ক্ষেত্রে অসংখ্য অভিযোগের সত্যতা মেলে।
দুদক জানায়, রোগীদের জন্য বরাদ্দ একদিনে ১৭০ গ্রাম মাংসের পরিবর্তে সরবরাহ করা হচ্ছিল মাত্র ৭০ থেকে ৭৫ গ্রাম। বরাদ্দকৃত খাবার সরবরাহে দীর্ঘদিন ধরে অনিয়ম চলছে বলে রোগীর স্বজনরাও অভিযোগ করেন। এ ছাড়া এক্সরে বিভাগের হিসাব-নিকাশ মিলেনি দুদকের সঙ্গে।
এর আগে গণশুনানিতে অভিযোগ করা হয় সরকারি নির্ধারিত ৫ টাকার বদলে ১০ টাকা ফি নেওয়া হচ্ছে তারও সত্যতা পাওয়া যায়। ওয়ার্ডে ময়লা-আবর্জনা জমে থাকা, পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার ঘাটতিও উঠে আসে।
গুরুত্বপূর্ণ গাইনী ও মেডিসিন বিভাগসহ বিভিন্ন ইউনিটে চিকিৎসকরা কর্মঘণ্টায় চেম্বারে ছিলেন না বলে দুদক নিশ্চিত হয়।
যদিও সংশ্লিষ্ট চিকিৎসকরা দাবি করেন- তারা হাসপাতালেই রোগী দেখছিলেন। কিন্তু উপস্থিতি নিশ্চিত করতে ব্যর্থ হন। রোগী ও স্বজনদের দীর্ঘদিনের অভিযোগের সত্যতা মিলেছে এ ক্ষেত্রেও। হাসপাতালে সরকারি ওষুধ মজুদ থাকা সত্ত্বেও রোগীদের বাইরে থেকে কিনে আনতে বলা হয়। হাসপাতালের সক্ষমতা থাকা সত্ত্বেও রোগীদের পাশের কনসালটেন্ট ডায়াগনস্টিক সেন্টারে বেশি খরচে পরীক্ষা করানো হয়। দালাল চক্রের সক্রিয়তা ও রোগী হয়রানি নিয়ে পাওয়া অসংখ্য অভিযোগও সত্য বলে নিশ্চিত হয় দুদক।
দুদক উপপরিচালক আরশেদ আলী বলেন, গণশুনানিতে পাওয়া অভিযোগের ভিত্তিতেই অভিযান পরিচালনা করা হয়েছে। প্রাথমিক তদন্তে অধিকাংশ অভিযোগই সত্য বলে প্রমাণিত হয়েছে। দায়ীদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।