খসড়া আইপিও বিধিমালায় প্রাথমিক গণপ্রস্তাবে (আইপিও) মিউচুয়াল ফান্ড খাতে বড় ধরনের শেয়ার বরাদ্দের প্রস্তাব করেছে পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)। বরাদ্দ শেয়ারের এক-পঞ্চমাংশ অর্থাৎ ২০ শতাংশ শেয়ারই মিউচুয়াল ফান্ডের জন্য রাখার প্রস্তাব করেছে কমিশন। ফিক্সড বা বুকবিল্ডিং পদ্ধতিতে অনুমোদন পাওয়া কোম্পানির ক্ষেত্রে মিউচুয়াল ফান্ডের জন্য এ হার কার্যকর হবে। এদিকে মিউচুয়াল ফান্ডে বড় ধরনের বরাদ্দের কারণে সাধারণ বিনিয়োগকারীর কোটায় বড় ধরনের কাটছাঁট হয়েছে। তবে বিএসইসি বলছে, সাধারণ বিনিয়োগকারীদের স্বার্থে মিউচুয়াল ফান্ডে বরাদ্দ দেওয়ার প্রস্তাব করা হয়েছে।
এ প্রসঙ্গে বিএসইসির পরিচালক ও দায়িত্বপ্রাপ্ত মুখপাত্র আবুল কালাম আমার দেশকে বলেন, আগে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারী হিসেবে মিউচুয়াল ফান্ডকে রাখা হয়েছিল। কিন্তু এবার মিউচুয়াল ফান্ডকে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারী হিসেবে বিবেচনা না করে ব্যক্তি বিনিয়োগকারী বা সাধারণ বিনিয়োগকারী হিসেবেই বিবেচনা করা হয়েছে। এর কারণ হিসেবে তিনি বলেন, মিউচুয়াল ফান্ডের সম্পদ ব্যবস্থাপক হিসেবে অ্যাসেট ম্যানেজার থাকলেও এর আইনগত অধিকার দেওয়া হয়েছে ট্রাস্টি প্রতিষ্ঠানকে। কিন্তু এর সুবিধাভোগী হিসেবে থাকবে ইউনিটহোল্ডাররা। যেহেতু মিউচুয়াল ফান্ডের ইউনিটহোল্ডার হচ্ছেন সাধারণ বিনিয়োগকারী সে হিসেবে এটা সাধারণ বিনিয়োগকারীর স্বার্থেই করা হয়েছে।
গত ৩০ অক্টোবর সিকিউরিটিজ অ্যন্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (পাবলিক অফার অব ইকুইটি সিকিউরিটিজ) বিধিমালা, ২০২৫ নামে এ বিধিমালার খসড়া বিএসইসির ওয়েবসাইটে অংশীজনের মতামতের জন্য উন্মুক্ত করা হয়েছে। আগামী ১৫ নভেম্বর পর্যন্ত খসড়ার বিষয়ে মতামত দেওয়া যাবে। এসব মতামতের ভিত্তিতে পরিবর্তন বা সংশোধনসাপেক্ষে বিধিমালা চূড়ান্তকরণে বিএসইসির কমিশন সভায় উপস্থাপন করা হবে। কমিশনের অনুমোদন পাওয়ার পর গেজেট আকারে প্রকাশ করার পর বিধিমালাটি কার্যকর হবে।
এদিকে খসড়া বিধিমালায় বাংলাদেশের নাগরিক নয় কিন্তু বাংলাদেশে বৈধভাবে কর্মরত বিদেশি নাগরিকদের জন্য প্রথমবারের মতো আইপিওতে আবেদন করার সুযোগ রাখা হয়েছে। বাংলাদেশের নাগরিক কিন্তু বিদেশে অবস্থান করছেন এ ধরনের অনাবাসিক বাংলাদেশি এবং বিদেশি নাগরিকদের জন্য মোট ৫ শতাংশ শেয়ার বরাদ্দের প্রস্তাব করা হয়েছে। অনাবাসিক বাংলাদেশি এবং বিদেশি নাগরিকদের নিটা অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে আবেদন করতে হবে।
এছাড়া বিত্তশালী বিনিয়োগকারীদের জন্য ৫ শতাংশ শেয়ার বরাদ্দ রাখার কথা বলা হয়েছে খসড়া বিধিমালায়। আয়কর রিটার্নে দুই কোটি টাকা বা তার বেশি অর্থ আয় দেখিয়েছেন, এ ধরনের ব্যক্তিকে বিত্তশালী বিনিয়োগকারী হিসেবে বিবেচনা করা হবে। স্টক এক্সচেঞ্জের ইলেকট্রনিক সাবমিশন সিস্টেমে (ইএসএস) তালিকাভুক্ত বিনিয়োগকারীরাও বিত্তশালী বিনিয়োগকারীর তালিকায় থাকবেন।