সমবায় সমিতির নামে সদস্যদের কোটি কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে রাজধানীর মিরপুরের আল ফাতিহা বহুমুখী সমবায় সমিতির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক এবং কিং বিডি নামে একটি নাম সর্বস্ব ওষুধ কোম্পানির ব্যবস্থাপনা পরিচালক আব্দুর রাজ্জাক খানসহ চার জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। একই সঙ্গে সমিতির পাঁচ কর্মকর্তা ও কিং বিডির এমডিসহ সাত জনের সম্পদ বিবরণী দাখিলের অনুমোদন দিয়েছে দুদক।
বুধবার বেলা সাড়ে ৩টার দিকে রাজধানীর সেগুন বাগিচায় দুদকের প্রধান কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান সংস্থার মহাপরিচালক (প্রতিরোধ) মো. আক্তার হোসেন।
তিনি জানান, স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের জারি করা পরিপত্র উপেক্ষা করেন সমিতির কর্মকর্তারা। এ ছাড়া সংশ্লিষ্টদের পুর্বানুমোদন না নিয়ে এবং সমিতির বিক্রয় উপ-কমিটির সুপারিশ ছাড়াই প্রতারণার আশ্রয় নিয়ে আল ফাতিহা বহুমুখী সমবায় সমিতির নামে ৬৭ দশমিক ৭৫ শতাংশ জমি কিং বিডি ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালকের নামে বিক্রি করে দেন। পরে আসামিরা পরস্পর যোগসাজশে জমির বিক্রির মূল্য ২ কোটি ১০ লাখ ৭০ হাজার ২৫০ টাকা আদায় করে সমিতির তহবিলে জমা না দিয়ে আত্মসাৎ করেন। এসব অভিযোগে সমিতির সভাপতি মো. জাহাঙ্গীর আলম পাঠান, সাধারণ সম্পাদক মো. রেজাউল করিম রেজা, কিং বিডির ব্যবস্থাপনা পরিচালক আব্দুর রাজ্জাক খান ও ফাইন্যান্স ডাইরেক্টর মোহাম্মদ কামরুল হাসানকে আসামি করে একটি মামলা দায়েরের অনুমোদন দিয়েছে দুদক।
তিনি আরও জানান, সমিতির পাঁচ কর্মকর্তা ও কিং বিডির দুই কর্মকর্তার সম্পদ বিবরণী দাখিলের আদেশ জারির জন্যও সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। সমিতির এই আর্থিক কেলেঙ্কারির বিষয়টি অনুসন্ধান করেন দুদক কর্মকর্তা মো. নাছরুল্লাহ হোসাইন।
দুদক জানায়, যাদের সম্পদ বিবরণী দাখিলের আদেশ জারির নির্দেশ দেওয়া হয়েছে তারা হলেন– আল ফাতিহা বহুমুখী সমবায় সমিতির সভাপতি মো. জাহাঙ্গীর আলম পাঠান, সাধারণ সম্পাদক মো. রেজাউল করিম রেজা, সাবেক সাধারণ সম্পাদক মো. আব্দুস সালাম, সমিতির যুগ্ম সম্পাদক ও সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত সার্জেন্ট ফরিদ উদ্দিন আহম্মদ, সমিতির কোষাধ্যক্ষ এ এস এম জসিম উদ্দিন, কিং বিডির ব্যবস্থাপনা পরিচালক আব্দুর রাজ্জাক খান এবং ফাইন্যান্স ডাইরেক্টর মোহাম্মদ কামরুল হাসান। দুদক আরও জানায়, দুদকের অনুসন্ধানের সময় তাদের জ্ঞাত আয়ের উৎসের সঙ্গে অসঙ্গতিপূর্ণ সম্পদের মালিকানা অর্জন ও দখলে রাখার প্রমাণ পাওয়া গেছে। তাদের নামে-বেনামে আরও সহায়-সম্পত্তি থাকতে পারে বিধায় তাদের বিরুদ্ধে দুদক আইনে সম্পদ বিবরণী দাখিলের আদেশ জারির নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।