সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিলে অভিযোগ
সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগের বিচারপতি রেজাউল হাসানের বিরুদ্ধে সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিলে অভিযোগ করা হয়েছে। দুর্নীতি, অসদাচরণ ও ক্ষমতার অপব্যবহারের অভিযোগ এনে শাহ গ্রুপের চেয়ারম্যান কেএম মজিবুল হক গত সোমবার এ আবেদন করেন।
আবেদনে সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিলকে বিষয়টি তদন্তের অনুরোধের পাশাপাশি অভিযোগ প্রমাণিত হলে সংবিধানের আওতায় এ বিষয়ে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়ারও সুপারিশ চাওয়া হয়েছে।
অভিযোগপত্রে বলা হয়, ‘বিচারপতি রেজাউল হাসান (যিনি এমআর হাসান নামেই বেশি পরিচিত) ২০১০ ও ২০১১ সালের দুটি কোম্পানি মামলার কার্যধারায় পক্ষপাতদুষ্ট আচরণ করেন। এক মামলায় সংশ্লিষ্ট সিনিয়র আইনজীবী উপস্থিত না থাকলেও রায়ে তার নামে যুক্তিতর্ক উল্লেখ করা হয়, যা পরে আপিল বিভাগে বাতিল হয়। অন্য মামলায় আবেদনকারীর স্ত্রীকে পক্ষ না করেই তার ১৩ লাখ শেয়ার বাতিল হয়, যা আবেদনকারীর দৃষ্টিতে ন্যায়বিচারের নীতির সম্পূর্ণ পরিপন্থী।’
আবেদনকারী আরো জানান, বিচারপতি রেজাউল হাসান একজন দুর্নীতিগ্রস্ত বিচারক। তিনি দুর্নীতির মাধ্যমে প্রচুর ধনসম্পদের মালিক হন। অনুসন্ধানে দেখা যায়, বিচারপতি রেজাউল হাসানের নিয়োগের সময় তার ইনকাম ট্যাক্স রিটার্নে সম্পদের পরিমাণ ছিল এক কোটি ৪৯ লাখ টাকা।
সর্বশেষ হিসাবে দেখা যায়, তার সম্পদের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে তিন কোটি ৮৭ লাখ ৪৬ হাজার টাকা। বিচারপতির স্ত্রীর মোট সম্পদ ছিল ২৪ লাখ ২৮ হাজার টাকা, বর্তমানে তা দাঁড়িয়েছে ছয় কোটি ২৩ লাখ টাকার বেশি। বিচারপতি রেজাউল হাসানের বিচারক হিসেবে নিয়োগের সময় তার পুত্রের কোনো আয় ছিল না, বর্তমানে সেই পুত্রের সম্পদের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে চার কোটি পাঁচ লাখ টাকার বেশি। তার মায়ের সম্পদের পরিমাণও ১৬ লাখ ২৯ হাজার টাকা। এছাড়া রাজধানীর অভিজাত এলাকায় তাদের সম্পত্তি রয়েছে।
অভিযোগে বিগত সময়ে বিচারপতি হাসানের ছেলের বেপরোয়াভাবে বিএমডব্লিউ গাড়ি চালানোর কারণে দুর্ঘটনা এবং পরবর্তী সময়ে ভিকটিমের পরিবারকে নানাভাবে চাপে রাখার কথা উল্লেখ করা হয়েছে। নিয়মানুযায়ী বিচারপতিরা গণমাধ্যমে কথা বলা এড়িয়ে যান বলে তার বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।
রেজাউল হাসান ২০০৯ সালের জুনে হাইকোর্ট বিভাগের অতিরিক্ত বিচারক হিসেবে নিযুক্ত হন। এরপর ২০১১ সালের ৬ জুন হাইকোর্ট বিভাগে স্থায়ী বিচারক হিসেবে শপথ নেন।