প্লট দুর্নীতি মামলা
ক্ষমতার অপব্যবহার করে সরকারি জমি বরাদ্দ নেওয়ার মামলায় ক্ষমতাচ্যুত সাবেক প্রধানমন্ত্রী ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনা, তার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয় ও মেয়ে সায়মা ওয়াজেদ পুতুলকে কারাদণ্ডের রায় দিয়েছেন ঢাকার এক আদালত ।
দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) আইনজীবী মইনুল হাসান রায়ের পরে এক ব্রিফিংয়ে বলেন, “আদালত বিভিন্ন মেয়াদে বিভিন্ন আসামিদের সাজা প্রদান করেছেন। এই তিনটি মামলায় যারা কমন আসামি আছেন, আমি একত্রে তাদের সাজা জানাচ্ছি।”
“এই মামলার প্রধান আসামি শেখ হাসিনা। তিন মামলাতেই উনি আসামি হিসেবে আছেন। উনার সাজা হচ্ছে সাত বছর করে ২১ বছর। উনার জরিমানা হচ্ছে এক লাখ করে তিন লাখ টাকা। অনাদায়ে ছয় মাস করে তিন মামলায় ১৮ মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড।”
“সায়মা ওয়াজেদ পুতুল যে মামলার প্রধান আসামি তার সাজা পাঁচ বছর। উনি একটি মামলারই আসামি, তাই তার সাজা পাঁচ বছর।”
সজীব ওয়াজেদ জয় যে মামলার প্রধান আসামি তার সাজার মেয়াদ পাঁচ বছর এবং এক লাখ টাকা জরিমানা, জানান মইনুল হাসান।
এই আইনজীবী বলেন, “এভাবে তিন মামলায় ২১ জন আসামির বিভিন্ন মেয়াদে সাজা হয়েছে। যারা তিন মামলায় কমন আসামি রয়েছেন, তাদের সাজা ক্রমান্বয়ে ধারাবাহিকভাবে তিন মামলায় সাজা খাটবে। আলাদা আলাদা সাজা খাটবেন।”
আইনজীবী জানান, আদালত রায়ের মধ্যে সংক্ষিপ্ত একটি পর্যবেক্ষণ দিয়েছে।
“সেই পর্যবেক্ষণে বিচারক উল্লেখ করেছেন যে, একজন দেশের প্রধানমন্ত্রী তথ্য গোপন করতে পারেন, মিথ্যা হলফনামা দিতে পারে এটা তার কাছে বিশ্বাসযোগ্য হয় নাই। তিনি অবাক হয়ে গেছেন। একটা দেশের চারবারের প্রধানমন্ত্রী কীভাবে মিথ্যা হলফনামা ও তথ্য গোপন করে জনগণের সম্পদ মিথ্যাভাবে নিয়ে নিয়েছেন!” বলেন তিনি।
রাজউক এবং গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের বিষয়েও তাদের আইন পরিবর্তনের জন্য কিছু অবজারভেশন দিয়েছে আদালত।
দুদকের আইনজীবী বলেন, “তাদের বিদ্যমান কিছু আইন পরিবর্তন এবং আরো কিছু নতুন আইন অ্যাডাপ্ট করার জন্য পর্যবেক্ষণ দিয়েছে। কেউ আইনের ঊর্ধ্বে নয় এবং রাজউকের প্লট বরাদ্দের যে বিধিবিধান তার সাপেক্ষে উন্মুক্ত পদ্ধতিতে ডিজিটাল পদ্ধতির মাধ্যমে এবং সরাসরি প্রকাশ্য মিডিয়ায় আনয়ন করে প্লট বরাদ্দে লটারি সিস্টেম করার জন্য পর্যবেক্ষণ দিয়েছে।”
যাবজ্জীবন সাজা না হওয়ায় আপিল করবেন কি না এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, “সাজার বিষয়ে কমিশনের সাথে আলাপ আলোচনা করে পরবর্তী সিদ্ধান্ত জানাবো।”
“কেউই আইনের ঊর্ধ্বে নয়, ভবিষ্যতে যারা রাষ্ট্রনায়ক থাকবেন বা উর্ধ্বতন কর্মকর্তা থাকবেন তাদের কাছে এ রায় দৃষ্টান্ত হিসেবে থাকবে,” বলে মন্তব্য করেন আইনজীবী মইনুল হাসান।