ডোপ টেস্ট বাধ্যতামূলক
প্রতিষ্ঠার দুই দশক পর ছাত্রপ্রতিনিধি নির্বাচনের উদ্যোগ নিয়েছে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় (কুবি) কর্তৃপক্ষ। ইতোমধ্যে প্রকাশ করা হয়েছে কেন্দ্রীয় শিক্ষার্থী সংসদের (কুকসু) খসড়া গঠনতন্ত্র। এতে বারণ করা হয়েছে সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে নিষিদ্ধ ছাত্রলীগকে। সে হিসেবে এই সংগঠনের কেউ নির্বাচনে অংশ নিতে পারবে না।
প্রশাসনের প্রকাশিত খসড়া গঠনতন্ত্রের ৪(খ) ধারায় বলা হয়েছে, বাংলাদেশে বিদ্যমান কোনো আইন অনুযায়ী নিষিদ্ধ ঘোষিত সংগঠনের সদস্য হলে তিনি কুকসু নির্বাচনে প্রার্থী হতে পারবেন না। এ কারণে রাষ্ট্রবিরোধী ও সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকার দায়ে ২০২৪ সালের ২৩ অক্টোবর নিষিদ্ধ ঘোষিত ছাত্রলীগ এই নির্বাচনে অংশ নিতে পারবে না।
খসড়া গঠনতন্ত্রের ৪ নম্বর ধারা অনুযায়ী, কুবির স্নাতক (সম্মান) প্রথম বর্ষে ভর্তি হয়ে স্নাতক বা স্নাতকোত্তর পর্যায়ে অধ্যয়নরত শিক্ষার্থীরাই কেন্দ্রীয় শিক্ষার্থী সংসদের সদস্য হওয়ার যোগ্য বলে গণ্য হবেন। স্নাতকোত্তর পর্যায়ে দ্বিতীয় বা ততোধিক প্রোগ্রামে অধ্যয়নরত শিক্ষার্থীরা নিয়মিত শিক্ষার্থী হিসেবে বিবেচিত হবেন না। প্রার্থীর বয়সসীমা সর্বোচ্চ ২৮ বছর এবং প্রার্থীদের জন্য ডোপ টেস্ট বাধ্যতামূলক করা হয়েছে।
একই ধারায় আরো বলা হয়েছে, সান্ধ্যকালীন, পেশাদার বা নির্বাহী মাস্টার্স, এমফিল, পিএইচডি, ডিপ্লোমা সার্টিফিকেট ও ভাষা কোর্সে অধ্যয়নরত শিক্ষার্থীরা নির্বাচনে অংশ নিতে পারবেন না। এছাড়া নিষিদ্ধ ঘোষিত সংগঠনের সদস্য, শৃঙ্খলাভঙ্গের দায়ে বহিষ্কৃত বা শাস্তিপ্রাপ্ত শিক্ষার্থী এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত কলেজ বা ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থীরাও প্রার্থী হিসেবে অযোগ্য হবেন। তবে স্নাতক বা স্নাতকোত্তর পরীক্ষায় উত্তীর্ণ কিংবা বয়স ২৮ বছর অতিক্রান্ত হলেও নির্বাহী কমিটির কোনো সদস্য তার মেয়াদ পূর্ণ না হওয়া পর্যন্ত দায়িত্ব পালন করতে পারবেন।
২৯ অক্টোবর কুকসুর গঠনতন্ত্রের খসড়া প্রকাশ করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। এতে কেন্দ্রীয় সংসদে ২১টি এবং হল সংসদে ১১টি পদ রাখার প্রস্তাব করা হয়েছে। এর মধ্যে কেন্দ্রীয় সংসদের ১৯টি ও হল সংসদের ৯টি পদে সরাসরি নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।
খসড়া গঠনতন্ত্র অনুযায়ী, কেন্দ্রীয় সংসদের সভাপতি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য এবং কোষাধ্যক্ষ বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ পদাধিকার বলে দায়িত্ব পালন করবেন। বাকি ১৯টি পদে নির্বাচনের মাধ্যমে প্রতিনিধি নির্বাচন করা হবে। অন্যদিকে, হল সংসদে ১১টি পদ প্রস্তাব করা হয়েছে। এর মধ্যে হল প্রাধ্যক্ষ পদাধিকার বলে সভাপতি এবং আবাসিক শিক্ষক বা হাউস টিউটরদের মধ্য থেকে একজন কোষাধ্যক্ষ হবেন। বাকি ৯টি পদে নির্বাচনের মাধ্যমে প্রতিনিধি নির্বাচিত হবেন।
কুকসু গঠনতন্ত্র প্রণয়নে গঠিত ৫ সদস্যের কমিটির আহ্বায়ক হিসেবে দায়িত্বে আছেন সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের ডিন সহযোগী অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ সোহরাব উদ্দিন। এছাড়া কমিটির সদস্যসচিব হিসেবে আছেন ডেপুটি রেজিস্ট্রার বিপ্লব চন্দ্র মজুমদার, সদস্য ইংরেজি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মো. হারুন, প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ মাহমুদুল হাসান খান এবং একই বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মুতাসিম বিল্লাহ।