ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক শরিফ ওসমান বিন হাদির হত্যার প্রতিবাদে বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে (বাকৃবি) গায়েবানা জানাজা ও একাধিক বিক্ষোভ মিছিল করেছে শিক্ষার্থীরা।
শুক্রবার (১৯ ডিসেম্বর) জুমার নামাজ শেষে হাদি হত্যার বিচার দাবিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ মিছিল করেন। নামাজের পর কেন্দ্রীয় মসজিদে হাদির আত্মার মাগফিরাত কামনায় বিশেষ দোয়া অনুষ্ঠিত হয়। দোয়া শেষে সেখান থেকে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের করা হয়।
এর আগে বৃহস্পতিবার (১৮ ডিসেম্বর) দিবাগত রাত সাড়ে ১১টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন আবাসিক হল থেকে শিক্ষার্থীরা মিছিল নিয়ে বের হয়ে আব্দুল জব্বার মোড়ে একত্রিত হন। সেখানে গায়েবানা জানাজা আদায় করা হয়। জানাজা শেষে তারা একটি বিক্ষোভ মিছিল বের করেন।
মিছিলটি আব্দুল জব্বার মোড় থেকে শুরু হয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি এলাকা অতিক্রম করে উপাচার্যের বাসভবনের সামনে দিয়ে কেয়ার মার্কেটে গিয়ে শেষ হয়। এ সময় শিক্ষার্থীরা ভারতীয় আধিপত্যবাদ ও দেশীয় দালাল রাজনীতির বিরুদ্ধে বিভিন্ন স্লোগান দেন। মিছিলে ‘তুমি কে, আমি কে, হাদি, হাদি’, ‘আমার ভাই কবরে, খুনি কেন বাহিরে’, ‘আওয়ামী লীগের দালালেরা, হুঁশিয়ার সাবধান’, ‘চব্বিশের হাতিয়ার, গর্জে উঠুক আবার’, ‘দিল্লি না ঢাকা, ঢাকা, ঢাকা’ এবং ‘ইনকিলাব জিন্দাবাদ’ স্লোগান দেওয়া হয়।
সমাবেশে বাকৃবি শাখা শিবিরের সভাপতি আবু নাসের ত্বোহা ও সেক্রেটারি আব্দুল্লাহ আল মঈন উপস্থিত ছিলেন। এতে প্রায় তিন শতাধিক শিক্ষার্থী অংশ নেন। সমাবেশে বক্তারা বলেন, শরিফ ওসমান বিন হাদির হত্যাকাণ্ড কোনো বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়; এটি মতপ্রকাশ ও প্রতিবাদের কণ্ঠ রোধের ধারাবাহিক অংশ। তারা অভিযোগ করেন, ফ্যাসিবাদী রাজনীতি ও বিদেশি আধিপত্যের বিরুদ্ধে কথা বলার কারণেই হাদিকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে। দ্রুত হত্যাকাণ্ডের সুষ্ঠু তদন্ত, দোষীদের গ্রেপ্তার এবং দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান তারা। একই সঙ্গে ন্যায়বিচার নিশ্চিত না হলে আন্দোলন আরও তীব্র করার হুঁশিয়ারি দেন শিক্ষার্থীরা।
অন্যদিকে, ওসমান হাদির হত্যার বিচার দাবিতে পৃথক বিক্ষোভ মিছিল করেছে সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট বাকৃবি শাখা। সংগঠনটির সাধারণ সম্পাদক জায়েদ হাসান ওয়ালিদ বলেন, ওসমান হাদীর হত্যাকারীদের দ্রুত বিচারের আওতায় আনতে সরকারকে অবিলম্বে কঠোর ও কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে। একই সঙ্গে অপশক্তির উসকানি ও বিভ্রান্তি থেকে দূরে থেকে শৃঙ্খলা, শান্তি ও সম্প্রীতি বজায় রাখার আহ্বান জানান তিনি।
প্রসঙ্গত, গত ১২ ডিসেম্বর রাজধানীর বিজয়নগর এলাকায় চলন্ত মোটরসাইকেল থেকে শরিফ ওসমান বিন হাদিকে লক্ষ্য করে গুলি করা হয়। গুলিটি তার মাথায় লাগে। গুরুতর আহত অবস্থায় তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে অস্ত্রোপচারের পর এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরবর্তীতে উন্নত চিকিৎসার জন্য এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে তাকে সিঙ্গাপুরে নেওয়া হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় বৃহস্পতিবার (১৮ ডিসেম্বর) তিনি মারা যান।