দীর্ঘ ২০ বছরের অপেক্ষার অবসান ঘটিয়ে অবশেষে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ—জকসু—এর সংবিধি পাস হয়েছে।
সোমবার (২৭ অক্টোবর) বিকেলে রাষ্ট্রপতি কার্যালয় থেকে সংবিধির অনুমোদন দেওয়া হয়।
বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক মো. রেজাউল করিম বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, “আমি কিছুক্ষণ আগেই খবর পেয়েছি। আলহামদুলিল্লাহ, ছাত্রদের দীর্ঘদিনের আকাঙ্ক্ষা পূরণ হয়েছে। হাতে কাগজ পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে আমরা দ্রুত কাজ শুরু করব।”
তিনি আরও জানান, সংবিধি পাসের আগেই একটি নির্বাচন প্রস্তুতি কমিটি গঠন করা হয়েছিল। “হাতে কাগজ পাওয়ার পর এই কমিটি প্রয়োজনীয় সংস্করণ করে দ্রুত নির্বাচনের কাজ শুরু করবে,” বলেন উপাচার্য।
জকসু নীতিমালা প্রস্তুত কমিটির সদস্য অধ্যাপক ড. মো. বিলাল হোসাইন বলেন, “জকসু নীতিমালার সংবিধি অনুমোদিত হয়েছে। আশা করছি আগামীকালই বিশ্ববিদ্যালয়ে কাগজ পৌঁছাবে। আমরা দ্রুত এবং সুষ্ঠুভাবে জকসু নির্বাচন আয়োজন করতে চাই।”
এর আগে গত ৭ অক্টোবর মঙ্গলবার রাতে জকসু নির্বাচন সুষ্ঠুভাবে সম্পাদনের জন্য পাঁচ সদস্যের একটি নির্বাচন প্রস্তুতি কমিটি গঠন করা হয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার (রুটিন দায়িত্ব) অধ্যাপক শেখ রফিকুল ইসলামের স্বাক্ষরিত অফিস আদেশে এ তথ্য জানানো হয়।
কমিটিতে আহ্বায়ক হিসেবে দায়িত্ব পেয়েছেন সমাজকর্ম বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক মোস্তফা হাসান এবং সদস্যসচিব হিসেবে রয়েছেন ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মো. আনিসুর রহমান। অন্য সদস্যরা হলেন আইন বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক মো. শহিদুল ইসলাম, পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক কানিজ ফাতেমা কাকলী এবং কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অধ্যাপক মো. জুলফিকার মাহমুদ।
দীর্ঘ সময় ধরে জকসু নির্বাচন না হওয়ায় শিক্ষার্থীরা বারবার নির্বাচনের দাবিতে আন্দোলন ও কর্মসূচি পালন করে আসছিলেন। সংবিধি অনুমোদনের মধ্য দিয়ে এখন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা অচিরেই তারা গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে নিজেদের প্রতিনিধি নির্বাচিত করার সুযোগ পাবেন বলে আশা ব্যক্ত করেন৷
এ বিষয়ে জাতীয় ছাত্রশক্তির সদস্য সচিব শাহিন মিয়া বলেন, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের দীর্ঘদিনের চাওয়া এবং গণতান্ত্রিক ধারা ফিরিয়ে আনার অন্যতম প্রধান মাধ্যম ছাত্র সংসদ নির্বাচন। সেই নীতিমালা আজকে পাশ হয়েছে এটাতে আমরা অত্যন্ত আনন্দিত পাশাপাশি চিন্তিত কারণ বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র সংসদের জন্য কোন রুম বা ভবন নেই যেখানে বসে ছাত্রসংসদের নির্বাচিত প্রতিনিধিরা কার্যক্রম পরিচালনা করবে। তবে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে চাওয়া থাকবে যেন সুষ্ঠুভাবে নির্বাচনটা সম্পন্ন করে।
শাখা সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্টের সভাপতি ইভান তাহসিভ বলেন, “সংবিধি পাস হওয়া নিঃসন্দেহে একটি ইতিবাচক দিক। এখন প্রয়োজন জকসুর পূর্ণ সংস্করণ করে একটি স্পষ্ট ও সুন্দর রোডম্যাপ প্রণয়ন করা। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন যেন শিক্ষার্থী ও ক্রিয়াশীল ছাত্রসংগঠনগুলোর সঙ্গে সমন্বয় করে একটি সুষ্ঠু ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন আয়োজন করে—এটাই আমাদের প্রত্যাশা।”