মহান বিজয়ের মাস উদযাপন উপলক্ষে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) উদ্যোগে বর্ণাঢ্য বিজয় র্যালি অনুষ্ঠিত হয়েছে।
সোমবার (১ ডিসেম্বর) সকাল ৯টায় অপরাজেয় বাংলা থেকে শুরু হওয়া র্যালিটি টিএসসি প্রদক্ষিণ করে স্মৃতি চিরন্তন চত্বরে গিয়ে শেষ হয়। র্যালিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য, প্রশাসনিক কর্মকর্তা, শিক্ষক, শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা-কর্মচারীসহ বিপুল সংখ্যক বিশ্ববিদ্যালয় পরিবারের সদস্য অংশ নেন।
মহান বিজয় দিবস ২০২৫ উদযাপন উপলক্ষে আয়োজিত এই র্যালির নেতৃত্ব দেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. নিয়াজ আহমদ খান। র্যালি শুরুর আগে সকাল ৮টা ৪৫ মিনিটে শিক্ষক, শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা অপরাজেয় বাংলার পাদদেশে সমবেত হন।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন প্রো-ভাইস চ্যান্সেলর (প্রশাসন) অধ্যাপক ড. সায়মা হক বিদিশা, প্রো-ভাইস চ্যান্সেলর (শিক্ষা) অধ্যাপক ড. মামুন আহমেদ, কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. এম. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী, প্রক্টর অধ্যাপক সাইফুদ্দীন আহমদ, ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার মুনসী শামস উদ্দিন আহম্মদ, ডাকসুর সাধারণ সম্পাদক এস এম ফরহাদসহ সিনেট-সিন্ডিকেট সদস্য, ডিন, বিভাগীয় চেয়ারম্যান, বিভিন্ন ইনস্টিটিউটের পরিচালক, প্রভোস্ট এবং বিপুল সংখ্যক শিক্ষক-কর্মকর্তা-কর্মচারী।
স্মৃতি চিরন্তন চত্বরে পৌঁছে বিশ্ববিদ্যালয়ের সংগীত বিভাগের তত্ত্বাবধানে মুক্তিযুদ্ধ ও বিজয় দিবসভিত্তিক দেশাত্মবোধক গান পরিবেশনের মধ্য দিয়ে বিজয় র্যালির আনুষ্ঠানিকতা শেষ হয়।
র্যালি শেষে সংক্ষিপ্ত বক্তব্যে উপাচার্য অধ্যাপক ড. নিয়াজ আহমদ খান বলেন, “ডিসেম্বর আমাদের জাতির পরিচয়ের এক অনন্য মাইলফলক। ১৯৭১ সালের এ মাসেই বাঙালি জাতি চূড়ান্তভাবে রুখে দাঁড়িয়ে অর্জন করেছিল মহান বিজয়।” তিনি গভীর শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করেন ১৪ ডিসেম্বরের শহীদ বুদ্ধিজীবীদের, যাঁদের আত্মত্যাগে স্বাধীনতার ভিত্তি আরও সুদৃঢ় হয়েছে।
তিনি বলেন, “জাতি প্রয়োজনের মুহূর্তে সবসময় ঐক্যবদ্ধ হতে জানে। দেশমাতৃকার সংকটে জাতি-ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে আমরা একত্রে দাঁড়াই—ইতিহাস বারবার এই সত্য প্রমাণ করেছে। বিজয়ের এই মাস সেই ঐক্যচেতনাকে আরও দৃঢ় করুক—এটাই কামনা।”
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ঐতিহাসিক ভূমিকা তুলে ধরে উপাচার্য আরও বলেন, “অন্যায় ও অবিচারের বিরুদ্ধে সংগ্রামের সুনাম এ বিশ্ববিদ্যালয় সমৃদ্ধ করেছে। ন্যায়, মানবিক মূল্যবোধ ও স্বাধিকার প্রতিষ্ঠার প্রশ্নে আমরা অটল—জাতির এই অর্জনকে আজ আমরা শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করছি।”
তিনি আরও বলেন, “ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সবসময় বেঁচে থাকে মানুষের মমতায়। আজকের বিজয় র্যালির মধ্য দিয়ে মাসব্যাপী যে কর্মসূচি শুরু হলো—এটি শুধু ঢাবির নয়, জাতির সম্মিলিত আয়োজন। বিজয়ের মাস জাতীয় ঐক্যের প্রতীক হয়ে উঠবে এবং সমাজে ভাঙনের কোনো সুর থাকবে না। ঐক্য, দেশপ্রেম ও পারস্পরিক শ্রদ্ধাই হবে পথচলার প্রধান শক্তি।”
এসআর