চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য একাডেমিক অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ শামীম উদ্দিন খানের শহীদ বুদ্ধিজীবী হত্যাকাণ্ড সংক্রান্ত বক্তব্যের বিষয়ে বিভ্রান্তি দূর করতে প্রেস বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।
সোমবার সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার অধ্যাপক ড. সাইফুল ইসলাম সাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, ১৪ ডিসেম্বর শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস উপলক্ষে উপাচার্য দপ্তরের সম্মেলন কক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভায় উপ-উপাচার্যের বক্তব্যের কিছু খণ্ডিত অংশ গণমাধ্যমে প্রচার হওয়ায় জনমনে বিভ্রান্তি সৃষ্টি হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গতকাল রোববার বেলা ১১টায় অনুষ্ঠিত 'মুক্তচিন্তা, মুক্তিযুদ্ধ এবং একাত্তরের বুদ্ধিজীবী হত্যা' শীর্ষক আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন উপ-উপাচার্য প্রশাসন ও অনুষ্ঠানের আহ্বায়ক অধ্যাপক ড. মো. কামাল উদ্দিন। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন উপাচার্য অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইয়াহ্ইয়া আখতার। প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন চবি জাদুঘরের পরিচালক ও ইতিহাস বিভাগের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ জাহিদুর রহমান।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে উপ-উপাচার্য একাডেমিক অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ শামীম উদ্দিন খান শহীদ বুদ্ধিজীবীদের শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করেন এবং ভাষা আন্দোলন, মুক্তিযুদ্ধ ও সাম্প্রতিক জুলাই আন্দোলনে শহীদদের রুহের মাগফিরাত কামনা করেন।
তিনি বলেন, সত্যিকার ইতিহাস জানতে হলে ইতিহাসের সঠিক পদ্ধতি অনুসরণ করে গবেষণা করা জরুরি। গবেষণার বাইরে গিয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্তে পৌঁছানো সম্ভব নয়। একাডেমিক আলোচনার অংশ হিসেবে তিনি বুদ্ধিজীবী হত্যাকাণ্ড আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্রের অংশ হতে পারে—এমন মত তুলে ধরেন এবং এ বিষয়ে স্বাধীন ও নিরপেক্ষ তদন্ত কমিশন গঠনের দাবি জানান।
প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বক্তব্য প্রদানের সময় উপ-উপাচার্য অনিচ্ছাকৃতভাবে ‘পাকিস্তানি বাহিনী’র পরিবর্তে ‘পাকিস্তানি যোদ্ধা’ এবং ‘বিশ্বাসযোগ্য নয়’ বলতে গিয়ে ‘অবান্তর’ শব্দ ব্যবহার করেন, যা ভুল ব্যাখ্যার জন্ম দিয়েছে।
তিনি তার বক্তব্যে মুজিবনগর সরকারের ভ্রাম্যমাণ রাষ্ট্রদূত ও বীর মুক্তিযোদ্ধা নুরুল কাদিরের লেখা ‘দুশো ছেষট্টি দিনে স্বাধীন’ গ্রন্থ এবং শহীদ বুদ্ধিজীবী মুনীর চৌধুরীর ছেলে আসিফ মুনীরের একটি সাক্ষাৎকারের উদ্ধৃতি উল্লেখ করে বলেন, বুদ্ধিজীবী হত্যাকাণ্ডের পূর্ণাঙ্গ ও নিরপেক্ষ তদন্ত এখনো হয়নি।
এ ছাড়া ১৯৭২ সালে নিখোঁজ চলচ্চিত্রকার জহির রায়হানের প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, জহির রায়হান শহীদ বুদ্ধিজীবী হত্যা তদন্ত কমিশনের চেয়ারম্যান ছিলেন। তাকে খুঁজে পাওয়া গেলে এ বিষয়ে অনেক অজানা তথ্য সামনে আসতে পারত বলেও তিনি মন্তব্য করেন।
বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ সংবাদপত্রের স্বাধীনতায় পূর্ণ আস্থাশীল। তবে সংবাদ পরিবেশনের ক্ষেত্রে জনমনে বিভ্রান্তি সৃষ্টি না হয়—সে বিষয়ে সংশ্লিষ্টদের সতর্ক থাকার আহ্বান জানানো হয়েছে।