রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় উপাচার্য প্রফেসর ড. সালেহ্ হাসান নকীব বলেছেন, ৩২ বছর বয়সী হাদির পাশে দাঁড়ানোর মতো বর্তমানে এই বাংলাদেশে কেউ নেই। সম্ভবত বাংলাদেশে তার মতো এমন কোনো মানুষ ছিল না যে বাংলাদেশের সকল পর্যায়ের মানুষের ভালোবাসায় সিক্ত হয়েছিল।
সোমবার বিকেলে রাকসুর আয়োজনে বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেট ভবনে অনুষ্ঠিত ‘বুদ্ধিবৃত্তিক, সাংস্কৃতিক ও ইনসাফের বাংলাদেশ বিনির্মাণের লড়াইয়ে পথপ্রদর্শক একজন হাদি’ শীর্ষক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব মন্তব্য করেন।
উপাচার্য বলেন, ইনসাফ প্রতিষ্ঠা করতে গেলে নিজের সাথেই নিজেরই লড়াই করতে হবে৷ ইনসাফ মানে এই না যে আমি আমার বন্ধুর জন্য কিছু করবো, ইনসাফ মানে এই যে আমি মানুষের অধিকার কীভাবে রক্ষা করবো। মানুষের অধিকার রক্ষা করতে গেলে নিশ্চয় তোমার ক্ষতি করার সম্ভাবনা রয়েছে।
হিংসা বিদ্বেষ করে দেশ এগিয়ে নেওয়া যাবে না মন্তব্য করে তিনি বলেন, 'যারা হাদির অনুসারী বলে দাবি করে তাদের মধ্যেই ইনসাফ নেই, যারা অনুসারী দাবি করে তারা আছে দখলদারিত্ব, ভাগবাটোয়ারার মধ্যে। আমরা হাদির জন্য দোয়া করি, এবং আমি খুব করে চাই যেন হাদির কিছু গুণাবলি বর্তমান তরুণ প্রজন্মের মধ্যে বর্তায়৷'
অনুষ্ঠানের বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক মো. রফিকুল ইসলাম। তিনি বলেন, আমরা হাদির দর্শন প্রত্যক্ষ করেছি। তিনি ছিলেন জুলাই গণঅভ্যুত্থানের অন্যতম নায়ক। দলীয় পরিচয়ের ঊর্ধ্বে উঠে তিনি ইনসাফ-ভিত্তিক সংগ্রাম প্রতিষ্ঠা করতে চেয়েছিলেন। প্রচলিত সামাজিক ব্যবস্থার বাইরে গিয়ে তিনি একটি সুন্দর ও ন্যায্য সমাজব্যবস্থার স্বপ্ন দেখতেন।
তিনি আরো বলেন, আমরা হাদীকে শুধু স্মরণই করব না, বরং অনুস্মরণ করব যুগ যুগান্তরে। দেশকে নিয়ে তার ভালোবাসা ও চিন্তাভাবনা ছিল অসাধারণ। অল্প বয়সেই তিনি কীভাবে বাংলাদেশকে সামনের দিকে এগিয়ে নেওয়া যায়—সে বিষয়ে গভীর উপলব্ধি অর্জন করেছিলেন। ইতিহাস সম্পর্কে তার জ্ঞান ছিল বিস্তৃত, যা অনেক প্রবীণ রাজনীতিবিদের মধ্যেও দেখা যায় না।
অনুষ্ঠানের সভাপতিত্ব করেন রাকসু'র সহ-সভাপতি (ভিপি) মোস্তাকুর রহমান জাহিদ। সভাপতির বক্তব্যে তিনি বলেন, এই দেশে ভারতীয় আধিপত্যবাদ প্রতিষ্ঠিত করতে চাইলে আমরা নতুন করে লক্ষ্য হাদি তৈরি হবো। তিনি বলেন, যারা আজকে ভয় দেখিয়ে শাসন করতে চায়, যে শাসন ফ্যাসিবাদ কায়েমের প্রচেষ্টা চালায়, যে শাসন ভারতীয় আধিপত্যবাদ কায়েম করতে চায়, আমরা তার মুখ চেপে ধরবো ইনশাআল্লাহ।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে আরো উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ দপ্তরের প্রশাসক অধ্যাপক মো. আখতার হোসেন মজুমদার এবং ছাত্র-উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মো. আমিরুল ইসলাম কনক।