হোম > ফিচার > তথ্য-প্রযুক্তি

ইউটিউবে কপিরাইট স্ট্রাইক এড়ানোর উপায়

আরিফ বিন নজরুল

ইউটিউব এখন শুধু বিনোদনের প্ল্যাটফর্ম নয়; বরং লাখো মানুষের আয়ের অন্যতম বড় মাধ্যম। কিন্তু কনটেন্ট তৈরি করতে গিয়ে অনেক ক্রিয়েটরই হঠাৎ কপিরাইট স্ট্রাইকের মুখে পড়েন, যা শুধু আয় বন্ধ করে দেয় না; বরং চ্যানেলের অস্তিত্বকেও ঝুঁকির মুখে ফেলে দেয়। তিনটি স্ট্রাইক হলে আপনার বছরের পর বছর গড়ে তোলা চ্যানেল মুহূর্তেই মুছে যাবে। তাই কপিরাইট নিয়ে সঠিক ধারণা এবং তা এড়ানোর কৌশল জানা একান্ত জরুরি। প্রথমেই বুঝতে হবে, কপিরাইট স্ট্রাইক তখনই আসে, যখন আপনি অন্যের মালিকানাধীন ভিডিও, অডিও বা ছবি অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করেন। অনেকে ভুল করে ভাবেন, ইন্টারনেটে পাওয়া যেকোনো উপাদানই ফ্রি। কিন্তু বাস্তবে তা নয়। এমনকি কোনো জনপ্রিয় গানের কয়েক সেকেন্ড ব্যবহার করলেও সেটি কপিরাইট ভঙ্গ হিসেবে গণ্য হতে পারে।

সবচেয়ে নিরাপদ উপায় হলো নিজস্ব কনটেন্ট তৈরি করা। নিজের তোলা ভিডিও, লেখা স্ক্রিপ্ট, রেকর্ড করা ভয়েসÑসবকিছু মৌলিক হলে ঝুঁকি কার্যত শূন্য। যদি অন্যের কনটেন্ট ব্যবহার করতেই হয়, তবে সেটি Creative Commons লাইসেন্সযুক্ত কি না, দেখে নিতে হবে। তবে এখানেও সতর্ক থাকতে হবে। কারণ অনেকেই ভুলভাবে ভিডিওতে CC ট্যাগ লাগিয়ে দেন।

দ্বিতীয়ত, Royalty-Free মিউজিক ও ফুটেজ ব্যবহার করতে পারেন। মিউজিকের জন্য ইউটিউবের Audio Library বা Epidemic Sound, Artlist-এর মতো রয়্যালটি-ফ্রি প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করতে পারেন। ভিডিও ফুটেজের জন্য Pexels, Pixabay, বা Unsplash বেশ নির্ভরযোগ্য। এগুলো ব্যবহার করলে অবশ্যই লাইসেন্স প্রমাণ সংরক্ষণ করে রাখবেন, যেন প্রয়োজনে দেখাতে পারেন।

আরো একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো, অন্যের ভিডিও রি-আপলোড না করা এবং কপিরাইট ক্লেইম আসলে তা অবহেলা না করা। যদি মনে করেন ক্লেইমটি ভুল হয়েছে। তবে প্রমাণসহ আপিল করতে হবে। কিন্তু যদি সত্যিই অন্যের কনটেন্ট হয়ে থাকে, তাহলে অবিলম্বে মুছে ফেলা উত্তম। মনে রাখবেন, এক বা দুটি কপিরাইট স্ট্রাইক হয়তো চ্যানেল মুছে ফেলবে না। কিন্তু তিনটি স্ট্রাইক একসঙ্গে হলে আপনার বছরের পর বছর গড়ে তোলা চ্যানেল মুহূর্তেই হারিয়ে যাবে। তাই সচেতনভাবে পরিকল্পনা করে কনটেন্ট তৈরি করুন, যাতে সৃজনশীলতা বজায় থাকে এবং আইন মেনে চলা হয়।

Fair Use নীতিমালা নিয়েও অনেক বিভ্রান্তি আছে। শিক্ষামূলক, রিভিউ, সমালোচনা বা সংবাদ প্রতিবেদনে সীমিত পরিমাণে অন্যের কনটেন্ট ব্যবহার কখনো কখনো বৈধ হলেও এর সুনির্দিষ্ট নিয়ম রয়েছে। ভুলভাবে Fair Use-এর দোহাই দিলে উল্টো স্ট্রাইকের সম্ভাবনা বেড়ে যায়।

সাম্প্রতিক সময়ে ইউটিউব কপিরাইট সিস্টেম আরো শক্তিশালী করেছে। উন্নত AI এখন শুধু অডিও নয়, ভিডিওর ভিজ্যুয়াল এলিমেন্টও শনাক্ত করতে পারে। তাই ভিডিও উল্টো করে দেওয়া, ফিল্টার লাগানো বা গতি পরিবর্তন করেও আর কপিরাইট এড়ানো সম্ভব নয়। ২০২৫ সালের নতুন ইউটিউব নীতিমালায় বলা হয়েছে, কপিরাইট লঙ্ঘনকারী ভিডিওর আয়ের পুরোটা সরাসরি কনটেন্ট মালিকের কাছে চলে যাবে। even যদি ভিডিও আংশিক মনিটাইজড থাকে।

সবশেষে ইউটিউবের Content ID সিস্টেম নিয়ে সচেতন থাকুন। ভিডিও আপলোডের পর যদি কোনো ম্যাচিং পাওয়া যায়, সঙ্গে সঙ্গে ইউটিউব আপনাকে জানাবে। তখনই ভিডিও এডিট বা রিপ্লেস করে সমস্যা সমাধান করুন, যাতে স্ট্রাইক না পড়ে।

মনে রাখবেন, একটি কপিরাইট স্ট্রাইক আপনার আয়, সুনাম এবং ভবিষ্যৎকে একসঙ্গে ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে। তাই শুরু থেকেই নীতিমালা মেনে মৌলিক ও সৃজনশীল কনটেন্ট তৈরি করুন। এভাবেই আপনি আপনার চ্যানেলকে দীর্ঘ মেয়াদে নিরাপদ ও সফল রাখতে পারবেন।

স্মার্টফোনে সিনেমাটিক ভিডিও

নির্বাচনকে সামনে রেখে ডিপফেকের ছড়াছড়ি

এআই আবেগ বুঝতে পারে না

কোন সিস্টেমে কম মেইনটেন্যান্স লাগে?

উদ্ভাবন ও দক্ষ প্রকৌশলীদের অবদান অনস্বীকার্য: ফয়েজ তৈয়ব

অস্ত যাওয়ার সময় সূর্য কেন কমলা-লাল রং ধারণ করে

ফেসবুক অ্যাপে আসছে বড় পরিবর্তন

সরকার সারা দেশে দ্রুতগতিতে ডিজিটাল সেবা সম্প্রসারণ করছে

আনঅফিশিয়াল ফোন ব্যবসায়ীদের এক ছাতার নিচে আনছে বিটিআরসি

এআই ভিডিও এডিটিং