দীর্ঘদিনের আলোচনাপর্ব ও ঐকমত্য কমিশনের আলাপ-আলোচনার পর স্বাক্ষরিত হয়েছে ‘জুলাই জাতীয় সনদ’—যা বাংলাদেশের রাষ্ট্র থেকে ফ্যাসিবাদী ব্যবস্থা নির্মূল ও গণতান্ত্রিক সংস্কার নিশ্চিত করার লক্ষ্যে সকল রাজনৈতিক দলের ঐক্যমতের ভিত্তিতে প্রণীত।
তবে সনদের আইনি ও সাংবিধানিক ভিত্তি এখনও সুস্পষ্ট নয়—এই আশঙ্কা থেকেই ন্যাশনাল ওলামা এলায়েন্স (এনইউএ) আয়োজন করেছিল “জুলাই সনদ বাস্তবায়নের রূপরেখা নিয়ে তরুণ আলেমদের ভাবনা” শীর্ষক গোলটেবিল বৈঠক।
শনিবার রাজধানীর পল্টনস্থ বিএমএ মিলনায়তনের শহীদ শামসুল আলম সভাকক্ষে অনুষ্ঠিত এই বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন বিশিষ্ট আলেম, গবেষক, লেখক ও সংগঠকবৃন্দ।
আলোচনায় অংশ নেন এনসিপির মুখ্য সমন্বয়ক নাসির উদ্দিন পাটোয়ারী, এনসিপির যুগ্ম আহ্বায়ক সারওয়ার তুষার, মাওলানা রেজাউল করিম আবরার (সাধারণ সম্পাদক, ওলামা মাশায়েখ আইম্মা পরিষদ), মাওলানা রিদওয়ান হাসান (সভাপতি, সাধারণ আলেম সমাজ), মাওলানা মাবরুরুল হক (সভাপতি, তরুণ আলেম প্রজন্ম), মাওলানা ফজলুল করিম মারুফ (দাওয়াহ সম্পাদক, আইএবি), মুফতি মাওলানা ইফতেখার জামিল, চৌধুরীসহ বিভিন্ন সংগঠনের প্রতিনিধি।
বক্তারা বলেন, জুলাই সনদ বাস্তবায়ন প্রক্রিয়ায় আইনি ও সাংবিধানিক ভিত্তি নিশ্চিত করা সরকারের প্রথম দায়িত্ব।
এ বিষয়ে ন্যাশনাল ওলামা এলায়েন্সের প্রস্তাব
১. ড. ইউনুস সনদের ওপর আদেশ জারি করবেন। ২. আদেশের ভিত্তিতে গণভোট আয়োজন করা হবে। ৩. গণভোটের মাধ্যমে সনদের সাংবিধানিক বৈধতা প্রতিষ্ঠা পাবে। ৪. জনগণের সরাসরি অংশগ্রহণই হবে সনদের বাস্তবায়নের শক্ত ভিত্তি।
বক্তারা আরও বলেন, ‘নোট অব ডিসেন্ট’ থাকা কোনো অস্থিতিশীলতার ইঙ্গিত নয়; বরং জনগণের অংশগ্রহণের মাধ্যমে এই প্রশ্নের সমাধানই হবে গণতান্ত্রিক ও বাস্তবসম্মত পথ। তরুণ আলেম সমাজ বিশ্বাস করে—জুলাই সনদের সঠিক বাস্তবায়ন শুধু নির্বাচনী প্রক্রিয়া নয়, বরং দেশের রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা, সামাজিক ন্যায়বিচার ও গণতান্ত্রিক সংস্কারের ভিত্তি সুদৃঢ় করবে।
সভায় বক্তারা আশা প্রকাশ করেন, সরকার ও জনগণ একযোগে জুলাই সনদের আইনি ও সাংবিধানিক বৈধতা নিশ্চিত করে গণভোটের মাধ্যমে এর বাস্তবায়ন সম্পন্ন করবে। এটি হবে বাংলাদেশের রাজনৈতিক ইতিহাসে একটি নতুন দিগন্তের সূচনা।