হোম > জাতীয়

শাপলা চত্বর হত্যাকাণ্ড: ভয়াবহ অভিজ্ঞতা তুলে ধরলেন প্রেস সচিব

আমার দেশ অনলাইন

২০১৩ সালের ৫ মে রাতে সংঘটিত শাপলা চত্বরের বর্বরতার প্রত্যক্ষ অভিজ্ঞতার কথা জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম। সোমবার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে দেওয়া এক পোস্টে তিনি তার অভিজ্ঞতার বিস্তারিত তুলে ধরেন।

ফেসবুক পোস্টে তিনি লিখেন, “শাপলা চত্বর হত্যাকাণ্ড’ বলতে সাধারণত মতিঝিলের শাপলা স্কয়ার এলাকাকে কেন্দ্র করে হওয়া হত্যাকাণ্ডকেই বোঝানো হয়। ৫ মে রাতেই শাপলা চত্বরের হত্যাকাণ্ড থেকে প্রথম দফায় হতাহতের খবর আসতে শুরু করে। পল্টন, বিজয়নগর, নাইটিঙ্গেল মোড় এবং মতিঝিলের বিভিন্ন স্থানে সংঘর্ষ হচ্ছিল। ২০১৩ সালে এএফপি’র ঢাকা অফিস ছিল তৎকালীন শিল্প ব্যাংক (বর্তমান বিডিবিএল ভবন), দিলকুশা-মতিঝিলে।

আমাদের জানালা থেকে দেখা যাচ্ছিল, শাপলা চত্বরে এবং মতিঝিলের মূল সড়কজুড়ে কয়েক দশক হাজার হেফাজত সমর্থকের ভিড়। রাত গভীর হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে এক-দুটি লাশ শাপলা চত্বরে আনা হলো। আমরা জানতাম না তারা কোথায় বা কীভাবে মারা গেছে।’’

তিনি পোস্টে আরো লিখেন, ‘রাত আটটার দিকে আমরা প্রথম বড় তথ্যটি পাই।

শাহিদবাগ-মালিবাগের বারাকা জেনারেল হাসপাতালে হেফাজত সমর্থকের ছয়টি লাশ নেওয়া হয়েছে। প্রতিটি লাশের মাথায় গুলি করা। আমার সহকর্মী কামরুল তথ্যটি যাচাই করতে হাসপাতালটিতে অন্তত এক ডজন ফোন করেন। বহুবার চেষ্টা করার পর হাসপাতালের ম্যানেজার মৃত্যুর ঘটনাটি নিশ্চিত করেন। আমি খবরটি রেড-অ্যালার্ট হেডলাইন হিসেবে ছাপাতে চাইছিলাম, কিন্তু নিউ দিল্লির আমাদের ব্রিটিশ সম্পাদক জোর দিলেন- আরেকটি উৎস থেকে নিশ্চয়তা পাওয়া প্রয়োজন।

দ্বিতীয় উৎস নিশ্চিত করার পর আমাদের মৃত্যুর সংখ্যা স্থানীয় কোনো পত্রিকা বা টিভি স্টেশনের রিপোর্ট করা সংখ্যাকে ছাড়িয়ে যায়।’

পরদিন আমরা কাকরাইলের ইসলামি ব্যাংক হাসপাতালে আরো লাশের তথ্য নিশ্চিত করি উল্লেখ করে প্রেস সচিব লিখেন, ‘সংখ্যা বাড়তেই থাকল। এরপর খবর আসে নারায়ণগঞ্জের কাঁচপুর–সিদ্ধিরগঞ্জ এলাকায় একটি বড় হত্যাকাণ্ডের। ভোরে পুলিশ তাড়ানোর পর হেফাজতের একটি বড় দল পরিবহন বন্ধ থাকায় হেঁটে বাড়ি ফিরছিল। আমরা জানতে পারি, বিজিবি (বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ) সদস্যরা তাদের ওপর গুলি চালায় এবং প্রায় ২০ জনকে হত্যা করে। নারায়ণগঞ্জের প্রতিটি হাসপাতালে আমরা লাশগুলো খুঁজতে যাই। পুলিশ ও বিজিবি কোনো তথ্য দিতে অস্বীকৃতি জানায়, কিন্তু হাসপাতালের কর্মীরা মৃত্যুর ঘটনা নিশ্চিত করেন।’

তিনি লিখেন, ‘ঢাকায় ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতা, আইজিপি এবং ডিএমপি কমিশনার বেনজীর আহমেদ দৃঢ়ভাবে অস্বীকার করলেন যে পুলিশ কাউকে হত্যা করেছে। তারা আন্দোলন প্রতিরোধকে নিজেদের ‘দেশকে তালেবান রাষ্ট্র হওয়া থেকে রক্ষা করার’ জয় হিসেবে প্রচার করতে লাগল এবং দাবি করল যে অভিযানে খুব সামান্য হতাহত হয়েছে। কিন্তু আমাদের মৃত্যুর সংখ্যা বাড়তেই থাকে। পুলিশ যখন এখনও সাতজন মৃত্যুর কথা বলছে, তখন আমাদের হিসাব ৪৯-এ পৌঁছে গেছে।

আমরা জানতাম কর্তৃপক্ষ আমাদের রিপোর্টকে চ্যালেঞ্জ করবে। তাই বাধ্য হয়ে প্রতিটি মৃত্যুর উৎস উল্লেখ করতে হয়- এটি আমাদের বিশ্বাসযোগ্যতা বাড়ালেও রিপোর্টটিকে ভারী ও জটিল করে তোলে। পরে অধিকার সংগঠন মৃতের সংখ্যা প্রায় ৬০ বলে অনুমান করে। হিউম্যান রাইটস ওয়াচও তদন্ত করে একই রকম সংখ্যা পায়। পরে আমি আরেকটি ব্যাপার জানতে পারি, পল্টন ও ঢাকার কেন্দ্রীয় এলাকায় অনেক হত্যাকাণ্ডই করেছে অস্ত্রধারী যুবলীগ ও ছাত্রলীগের কর্মীরা। তাদের মধ্যে দুজনকে আমি ব্যক্তিগতভাবে চিনতাম। একজন জাহিদ সিদ্দিকী তারেক অন্যজন রিয়াজ মিল্কি। করুণ পরিণতিতে তারেক পরবর্তীতে মিল্কিকে এক মার্কেটের সামনে গুলি করে হত্যা করে- ঘটনাটি সিসিটিভিতে ধরা পড়ে। পরে তারেককে র‍্যাব খুঁজে বের করে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ মেরে ফেলে। এরপরের ১১ বছর ধরে আওয়ামী লীগ একই কৌশলই বারবার ব্যবহার করেছে: যুবলীগ–ছাত্রলীগকে লাগিয়ে রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে আক্রমণ, ভয় দেখানো ও হত্যা। অবশেষে ২০২৪ সালের জুলাইয়ে তারা পুরো জাতির প্রতিরোধের মুখে পড়ে।”

বাড়ি ভাড়া বাড়িয়ে এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের বেতনের সরকারি আদেশ জারি

বুধবার ত্রয়োদশ সংসদের তফসিল রেকর্ডে বিটিভি-বেতারকে ইসির চিঠি

জাতীয় সংসদ নির্বাচন স্থগিতের রিট খারিজ

বিজয় ও বুদ্ধিজীবী দিবসের নিরাপত্তা কৌশলগত পরিকল্পনা চূড়ান্ত হয়েছে

খালেদা জিয়ার জন্য এয়ার অ্যাম্বুলেন্স মঙ্গলবার আসছে না

মাছ শুধু বাণিজ্যিক পণ্য নয়, খাদ্য নিরাপত্তার সাথে সম্পৃক্ত

ঢাবির ডেপুটি রেজিস্ট্রার লাভলু ৩ দিনের রিমান্ডে

ভোটের আগে সব অপরাধ দমন করার ম্যাজিক নেই

প্রবাসীদের ফোন রেজিস্ট্রেশনের ব্যাখ্যা দিলেন আসিফ নজরুল

গুজব ছড়ানো ও গিবত করা ইসলামের দৃষ্টিতে অনেক বড় পাপ