দেশের কোনো এলাকায় তাপমাত্রা সর্বনিম্ন ৮ দশমিক ১ থেকে ১০ ডিগ্রি সেলসিয়াস থাকলে আবহাওয়া অধিদপ্তরের ভাষায় তাকে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ বলে। একইভাবে তাপমাত্রা ৬ দশমিক ১ থেকে ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস হলে তাকে বলা হয় মাঝারি শৈত্যপ্রবাহ; তাপমাত্রা ৪ দশমিক ১ থেকে ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস হলে তা তীব্র শৈত্যপ্রবাহ বলে গণ্য করা হয়; আর তাপমাত্রা ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াসের নিচে গেলে তাকে অতি তীব্র শৈত্যপ্রবাহ বলা হয়।
এদিক থেকে বর্তমানে দেশের কোথাও শৈত্যপ্রবাহ নেই; কিন্তু এরপরও বেশি শীত অনুভুত হচ্ছে। আবহাওয়াবিদরা বলছেন, ঘন কুয়াশার কারণে দিনের বেশির ভাগ সময় সূর্যের আলো দেখা না দেওয়ায় শীত বেশি অনুভুত হচ্ছে। এ অবস্থা আরো কয়েকদিন থাকতে পারে।
রোববার সকাল থেকেই রাজধানীসহ দেশের অধিকাংশ এলাকার আকাশ ঘন কুয়াশায় ঢাকা। সকাল ১০টার পর থেকে রাজধানীতে সূর্য দেখা মিললেও দেশের অন্যান্য এলাকায় দুপুর গড়িয়েও কাটেনি ঘন কুয়াশার ছায়া।
আবহাওয়া অধিদপ্তর বলছে, দেশের কোথাও শৈত্যপ্রবাহ নেই। আজ রোববার দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে কুড়িগ্রামের রাজারহাটে ১২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এ দিন রাজধানীতে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ১৭ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
তবে আগামী কয়েক দিন কুয়াশার এমন পরিস্থিতি অব্যাহত থাকতে পারে। আর তাতে শীতও বেশি অনুভূত হতে পারে। এছাড়া আগামী কয়েক দিনের মধ্যে দেশের কোথাও কোথাও শৈত্যপ্রবাহও বয়ে যেতে পারে।
আবহাওয়া অধিদপ্তরের শাহানাজ সুলতানা আজ বিকাল ৩টার দিকে আমার দেশকে বলেন, তাপমাত্রা তেমন একটা কমেনি; তবে কুয়াশার কারণে শীত বেশি অনুভুত হচ্ছে। মৌসুমের এ সময়ে ঘন কুয়াশা থাকবে এটাই স্বাভাবিক। আবহাওয়ার এ পরিস্থিতি আগামী কয়েক দিন বাড়তে পারে। আর দিনে কুয়াশা থাকলে সূর্যের আলোও কম দেখা দিতে পারে। তাতে শীতের অনুভূতি বাড়তে পারে।
তিনি আরো বলেন, এ তাপমাত্রা আরও কমতে পারে চলতি সপ্তাহেই। এসময় কোথাও কোথাও শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যেতে পারে। এরইমধ্যে কয়েক দফা পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়ায় তাপমাত্রা ১০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের নিচে আসে।
আবহাওয়াবিদ একেএম নাজমুল হক আমার দেশকে বলেন, দিল্লি থেকে কুমিল্লা নাগাদ ঘনকুয়াশার একটা ছায়া পড়েছে। এতে তাপমাত্রা না কমলেও দিনের খুব কম সময় সূর্যের দেখা মিলছে; সেইসাথে উত্তরের দিক থেকে ঠান্ডা বাতাস বইতে শুরু করেছে। এরফলে বেশি শীত অনুভুত হচ্ছে। তবে এটা খুব বেশি স্থায়ী হওয়ার সম্ভাবনা নেই।
তিনি বলেন, বর্তমানে দেশে শৈত্য প্রবাহের কোনো লক্ষণ দেখছি না। কেননা, শৈত্য প্রবাহ হতে হলে দেশের অন্তত ২-৩টি এলাকায় তাপমাত্রা ১০ ডিগ্রী সেলসিয়াসের নীচে নেমে আসতে হবে। কোনো বর্তমানে কোনো জেলায় এমন তাপমাত্রা নেই, সামনের কয়েকদিনে এ ধরনের পরিস্থিতিও দেখা যাচ্ছে না।
সিনপটিক অবস্থা সম্পর্কে আবহাওয়া দপ্তর বলছে, উপমহাদেশীয় উচ্চচাপ বলয়ের বর্ধিতাংশ পশ্চিমবঙ্গ এবং তৎসংলগ্ন এলাকায় অবস্থান করছে। মৌসুমের স্বাভাবিক লঘুচাপ দক্ষিণ বঙ্গোপসাগরে অবস্থান করছে, এর একটি বর্ধিতাংশ উত্তরপূর্ব বঙ্গোপসাগর পর্যন্ত বিস্তৃত রয়েছে।