হোম > প্রকৃতি ও পরিবেশ

সুফল মিলছে না পরিবেশ দূষণবিরোধী অভিযানে

সরদার আনিছ

বাজারে পলিথিন ব্যাগ নিষিদ্ধ ঘোষণার পরও কমেনি ব্যবহার, বন্ধ হয়নি বেচাকেনা। শব্দদূষণের বিরুদ্ধেও জনসচেতনতামূলক কর্মসূচি ও চলমান অভিযানে মিলছে না সুফল। এতে পরিবেশ দূষণে স্বাস্থ্যঝুঁকি বাড়ার পাশাপাশি চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছে সরকারি উদ্যোগ। এরই পরিপ্রেক্ষিতে সম্প্রতি নিষিদ্ধ পলিথিন ও শব্দ দূষণের বিরুদ্ধে সারা দেশে ব্যাপকভাবে অভিযান শুরু করেছে পরিবেশ অধিদপ্তর।

পরিবেশ অধিদপ্তর সূত্র জানায়, চলতি বছরের ২ জানুয়ারি থেকে ৩১ জুলাই পর্যন্ত পরিবেশ অধিদপ্তর দেশজুড়ে ১ হাজার ২৯৬টি ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করে। এতে ৩ হাজার ১৭০টি মামলায় ২৫ কোটি ৮১ লাখ ৮৮ হাজার টাকা জরিমানা আদায় করা হয়।

এ সময়ে ৪৮৪টি ইটভাটার চিমনি ভেঙে কার্যক্রম বন্ধ করা হয়েছে। ২১৬টি ইটভাটার বিরুদ্ধে বন্ধের নির্দেশনা এবং ১৩৩টি ভাটার কাঁচা ইট ধ্বংস করা হয়েছে। এছাড়া ১৬টি পলিথিন কারখানার সেবা সংযোগ বিচ্ছিন্ন ও সিলগালা করা হয়েছে। ১০৮টি প্রতিষ্ঠানের বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়েছে। ২ জনকে এক মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। ১২টি প্রতিষ্ঠানে অভিযান চালিয়ে ৯টি ট্রাকভর্তি সিসা ও ব্যাটারি গলানোর যন্ত্রপাতি জব্দ করা হয়েছে এবং কারখানাগুলো বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। এছাড়াও নিষিদ্ধ পলিথিন ও শব্দ দূষণের বিরুদ্ধে পরিবেশ অধিদপ্তর সারা দেশে একযোগে অভিযান পরিচালনা অব্যাহত রয়েছে।

সংস্থাটি জানায়, গত ২১ জুলাই পরিবেশ অধিদপ্তর সারা দেশে একযোগে অভিযান পরিচালনা করে বাংলাদেশ পরিবেশ সংরক্ষণ আইন, ১৯৯৫ (সংশোধিত ২০১০) এর ৬(ক) ধারা লঙ্ঘনের কারণে নেত্রকোণা, কিশোরগঞ্জ, খুলনা, বান্দরবান ও ঢাকার পলাশী মোড়, চকবাজার, ইমামগঞ্জ, সোয়ারিঘাট ও লালবাগ এলাকায় ছয়টি ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করে।

এতে নিষিদ্ধ পলিথিন উৎপাদন, বিক্রয়, সরবরাহ ও বাজারজাতকরণের দায়ে ১২টি মামলা করা হয়। এসব মামলায় মোট ২৪ হাজার ৫০০ টাকা জরিমানা আদায় করা হয় এবং ৪ হাজার ৫৬০ কেজি পলিথিন জব্দ করা হয়।

একই দিনে নীলফামারীতে শব্দ দূষণবিরোধী অভিযান চলে। একটি মোবাইল কোর্ট দুটি মামলায় ১ হাজার টাকা জরিমানা আদায় করে এবং দুটি হাইড্রোলিক হর্ন জব্দ করে। এ সময় কয়েকজন চালককে সতর্ক করা হয়।

নারায়ণগঞ্জে পরিবেশ অধিদপ্তরের আরেকটি অভিযানে অবৈধভাবে পরিচালিত একটি কারখানার সেবা সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয় এবং কার্যক্রম বন্ধ করে দেওয়া হয়।

এনভায়রনমেন্ট অ্যান্ড সোশ্যাল ডেভেলপমেন্ট অর্গানাইজেশনের (এসডো) তথ্য বলছে, দৈনিক শুধু ঢাকা শহরেই সাড়ে ৪ কোটি পলিথিন বর্জ্য তৈরি হয়। এছাড়া প্যাকেজিংয়ের কাজে ব্যবহৃত পলিথিন তো আছেই। সংস্থাটির গবেষণা প্রতিবেদন অনুযায়ী, যারা প্লাস্টিক জাতীয় পণ্য উৎপাদনের সঙ্গে জড়িত, তাদের ওপর এ বিষাক্ত রাসায়নিকের সবচেয়ে বড় নেতিবাচক স্বাস্থ্যগত প্রভাব পড়ে।

শাহানাজ বেগম নামে গৃহবধূ কারওয়ানবাজার থেকে পলিথিনে করে সবজি নিয়ে বাসায় ফেরার সময় তাকে নিষেধাজ্ঞার বিষয়ে জিজ্ঞেস করলে তিনি বলেন, উৎপাদন ও পাইকারি বাজারে বন্ধ না করে কাঁচাবাজারে এসে সচেতন করলে কোনো লাভ হবে না।

এসডোর গবেষণা প্রতিবেদন অনুযায়ী খাবার, পানি ও বাতাস, প্রায় সব দিকেই প্লাস্টিকের কণা ছড়িয়ে পড়ে মানবদেহের জন্য স্বাস্থ্যঝুঁকি তৈরি করে। বেশি মাত্রায় প্লাস্টিক থেকে নিঃসৃত রাসায়নিকের সংস্পর্শে এলে হাঁপানি, হৃদরোগ, পাকস্থলি, ফুসফুস অথবা দৃষ্টিশক্তি সমস্যা, চর্মরোগসহ নানা রোগ দেখা দিতে পারে। বিষাক্ত রাসায়নিকের প্রভাবে ঢাকায় ওষুধ ও চিকিৎসা বাবদ মাসে প্রায় ৫০০ কোটি টাকা খরচ হয়।

সম্প্রতি এক অনুষ্ঠানে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তনবিষয়ক উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেন, ‘আমরা পলিথিন ব্যাগ মুক্ত সমাজের স্বপ্ন দেখি, এর প্রথম ধাপ হিসেবে দেশের সব সুপার মার্কেট পলিথিন মুক্ত করা হয়েছে। এখনো আমরা কাঁচাবাজার বা অন্যান্য জায়গায় চ্যালেঞ্জের মধ্যে আছি, সেখানে আমাদের বিকল্প দিতে হবে। এরই মধ্যে গাজীপুরের সব পলিথিন ব্যাগ উৎপাদন কারখানা বন্ধ করে দিতে সক্ষম হয়েছি। এ ধরনের অভিযান অব্যাহত থাকবে।’

দেশের আবহাওয়া কেমন থাকবে, জানাল অধিদপ্তর

দিন-রাতের তাপমাত্রা কমবে, বাড়বে শীত

আজ ঢাকার আবহাওয়া কেমন থাকবে

ঢাকায় তাপমাত্রা নেমেছে ১৬ ডিগ্রিতে

ঢাকায় বাড়ছে শীতের অনুভূতি, ১৬ ডিগ্রিতে নেমেছে তাপমাত্রা

তাপমাত্রা কমে শীতের আমেজ বাড়ছে

ঢাকার আবহাওয়া কেমন থাকবে, জানাল আবহাওয়া অধিদপ্তর

বায়ুদূষণে ঢাকাকেও ছাড়িয়ে গেল যে জেলা

ঢাকার আকাশ মেঘলা থাকতে পারে

শীতে কাঁপছে কুড়িগ্রাম, তাপমাত্রা ১২ ডিগ্রিতে