‘নৈতিক মহাবিশ্বের বাঁক অনেক দীর্ঘ, কিন্তু এটি ন্যায়বিচারের দিকে ঝুঁকে পড়ে।’ —মার্টিন লুথার কিং জুনিয়র
একটি জাতির জীবনে এমন কিছু মুহূর্ত আসে, যখন সময় থেমে আছে বলে মনে হয়—যখন যন্ত্রণা ভয়ের ওপরে ওঠে, আর দীর্ঘদিন চাপা থাকা সত্য হঠাৎ করেই উচ্চারিত হয়। বাংলাদেশের জন্য শেখ হাসিনা ও আসাদুজ্জামান খান কামালের রায় সেরকম এক মুহূর্ত ছিল, যেন একটি জাতির দীর্ঘদিনের আটকে রাখা নিঃশ্বাস একসঙ্গে ছেড়ে দেওয়ার শব্দ।
এটি কেবল একটি রায় নয়, এটি এক আবেগঘন হিসাবনিকাশ—একটি দেশের সেই মোড় বদলের মুহূর্ত, যে দেশ কথা বলা ভুলে ফিসফিস করতে শিখেছিল; আশা নয়, ভয়কে বুকে ধারণ করতে শিখেছিল। যে মায়েরা কখনো না খোলা কারাফটকের সামনে দাঁড়িয়ে ছিলেন, যেসব শিক্ষার্থীর ভবিষ্যৎ দমন-পীড়নের ভারে চূর্ণ হয়েছিল, আর যেসব পরিবার চিহ্নহীন গুমের কারণে ছিন্নভিন্ন হয়েছে—তাদের জন্য এই রায় কোনো ‘শেষ কথা’ নিয়ে আসেনি; এটি এনেছে আরো গভীর কিছু: আরোগ্যের শুরু।
ন্যায়বিচার ছিনিয়ে আনা হয়েছে
এই মুহূর্তটি জনগণের হাতে তুলে দেওয়া হয়নি; তারা এটি লড়ে অর্জন করেছে—জুলাই বিপ্লবে রাস্তায় থাকা ছাত্রদের মাধ্যমে, যারা চুপ থাকতে অস্বীকার করেছিল, সেই সব কর্মীর মাধ্যমে, যারা নীরবতায় আত্মসমর্পণ করেনি, আর এক অন্তর্বর্তী নেতার মাধ্যমে, যিনি রাজনৈতিক সুবিধার ওপরে নৈতিক সাহসকে স্থান দিয়েছেন।
বহু বছর ধরে বাংলাদেশ এমন এক সরকারের অধীনে বাস করেছে, যে সরকার ভয় ও অস্বীকারের মাধ্যমে শাসন করেছে। নীরবতা ছিল রাষ্ট্রনীতি। কিন্তু দমন-পীড়নের মধ্যেও একটি জাতির আত্মা কখনো নিভে যায় না; সেটি শুধু মাটিচাপা পড়ে থাকে। আর যখন সেই পরদা একসময় সরে গেল, মানুষ সত্যের দিকে তাকাল এবং মুখ ফিরিয়ে নিল না।
এই রায় গুরুত্বপূর্ণ শুধু এই কারণে নয় যে, দুজন মানুষকে শাস্তি দেওয়া হয়েছে; বরং আরো বড় কিছু পুনঃপ্রতিষ্ঠিত হয়েছে—জাতির নৈতিক দিকনির্দেশনা। এটি এমন এক ঘোষণা যে নেতৃত্বকে জবাবদিহিতার আওতায় আনতেই হবে, গণতন্ত্র কেবল একটি চটকদার শব্দ হবে না, এবং আইনের শাসন ক্ষমতাবানদের খেলনা হবে না, হবে সাধারণ মানুষের বর্ম।
এই বিজয় ভঙ্গুর। ন্যায়বিচার কোনো সমাপ্তি নয়, এটি একটি সূচনা; এটি যত্ন, অঙ্গীকার এবং ভয় ও দুর্নীতি যা কিছু ছিঁড়ে ফেলেছে, তা আবার গড়ে তোলার সাহস দাবি করে।
আইন যখন নিজের কণ্ঠ ফিরে পায়
‘ন্যায়বিচার হলো কর্মে প্রতিফলিত সত্য।’ —বেঞ্জামিন ডিজরেলি
অনেক দিন ধরে বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক প্রতিশ্রুতি শ্বাসরুদ্ধ ছিল, প্রতিষ্ঠানগুলো ক্ষয়প্রাপ্ত হচ্ছিল, ভিন্নমত দমন করা হচ্ছিল। শেখ হাসিনা ও আসাদুজ্জামান খান কামালের দণ্ড হঠাৎ করে আসেনি; এটি ছিল এক দীর্ঘ সময়ের জমে থাকা যন্ত্রণা, সাহস ও স্পষ্টতার পরিণতি। হাসিনা, যিনি একসময় বিদেশের মঞ্চে স্থিতিশীলতার প্রতীক হিসেবে প্রশংসিত ছিলেন, গড়ে তুলেছিলেন এক এমন শাসনব্যবস্থা, যা বাইরে থেকে শৃঙ্খলাপূর্ণ মনে হলেও ভেতরে ছিল নজরদারি, সেন্সরশিপ ও দমন-পীড়নের উপর দাঁড়ানো। তার আমলে উন্নয়ন ছিল আধিপত্যের মুখোশ।
আর বিচারিক অনুসন্ধানের কেন্দ্রে ছিল ‘জুলাই গণহত্যা’ নামে পরিচিত হয়ে ওঠা সেই বিভীষিকা—প্রতিবাদরত ছাত্রদের ওপর পরিকল্পিত হামলা। প্রমাণ ছিল স্পষ্ট ও রুদ্ধশ্বাসকর—স্নাইপারের গুলি, আটককৃত যোগাযোগ, ফরেনসিক বিশ্লেষণ।
ন্যায়বিচারের অহিংস দাবির জবাবে রাষ্ট্রের প্রতিক্রিয়া ছিল প্রাণঘাতী। পরে প্রকাশ পায়, শেখ হাসিনা ও তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালই এই সহিংসতার নির্দেশদাতা। তারা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে সন্ত্রাসের যন্ত্রে পরিণত করেছিলেন। অপহরণ, নির্যাতন, হত্যাকাণ্ড—সবই করা হয়েছে ‘রাজনৈতিক টিকে থাকা’র নামে। পুলিশ পরিণত হয়েছিল জল্লাদে; গোয়েন্দা সংস্থাগুলো নীরবতার শাসন প্রতিষ্ঠার ‘কার্যকর বাহিনী’তে।
এক নীরব জাতীয় বিপ্লব
বাংলাদেশ এমন এক পথ বেছে নিয়েছে, যা কল্পনাও করা হয়নি—মর্যাদা, সংযম, আর গভীর জাতীয় সাহসের পথ। অনেক দেশের মতো এখানে কোনো গৃহযুদ্ধের ভাঙাচোরা, কিংবা বিদেশি সেনাবাহিনীর হস্তক্ষেপের পর ন্যায়বিচার আসেনি। বাংলাদেশ করেছে এক অসাধারণ কাজ; নিজেদের সবচেয়ে ক্ষমতাবান নেতাদের জবাবদিহিতার আওতায় এনেছে—একটি বেসামরিক ও শান্তিপূর্ণ গণআন্দোলনের পর প্রতিষ্ঠিত সরকারের অধীনে। এখানে কোনো আন্তর্জাতিক ট্রাইব্যুনাল বসানো হয়নি কোনো দূরদেশের রাজধানীতে। ন্যায়বিচার এসেছে ভেতর থেকে—ওপর থেকে বা বাইরে থেকে নয়।
বিশ্বের খুব অল্প কয়েকটি দেশই আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের (আইসিসি) রোম সংবিধি অনুমোদন করেছে; বাংলাদেশ তাদের একটি। কিন্তু এই রায়ের মাধ্যমে বাংলাদেশ আরো দূর এগিয়েছে; প্রমাণ করেছে, ন্যায়বিচার সত্যিই ঘরোয়া হতে পারে—স্বকীয়, অটল ও আপসহীন।
রাজবংশের সমাপ্তি
বহু দশক ধরে আওয়ামী লীগ ছিল দক্ষিণ এশিয়ার সবচেয়ে দীর্ঘস্থায়ী রাজনৈতিক শক্তিগুলোর একটি। শেখ হাসিনাকে কেন্দ্র করেই পরিচিত ছিল। তার গ্রেপ্তার ও দণ্ড এই রাজনৈতিক বংশকে গভীরভাবে নাড়া দিয়েছে।
আজ আওয়ামী লীগ এক সন্ধিক্ষণে দাঁড়িয়ে। বহু বছর ধরে একটি নাম, একটি পরিবার এবং একটি ব্যক্তিত্বই দলটির পরিচয় হয়ে উঠেছিলেন। সেই অধ্যায় এখন শেষ। সামনে নতুন প্রশ্ন—
যদি দলটি অভ্যন্তরীণ বিভাজন অতিক্রম করে স্বচ্ছতা, অন্তর্ভুক্তি ও সংস্কারকে কেন্দ্র করে নিজেকে পুনর্গঠন করতে পারে, তবে নতুন বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে এখনো ভূমিকা রাখতে পারে। আর যদি না পারে, তবে ইতিহাস তাকে পেছনে ফেলে এগিয়ে যাবে।
দীর্ঘ নিদ্রা থেকে জেগে ওঠা প্রতিষ্ঠানগুলো
বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় ‘অলৌকিকতা’ বাইরে থেকে সহজে দেখা যায় না। রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানগুলোয় শান্ত ও নীরব পুনর্জাগরণ হচ্ছে, যেগুলো দীর্ঘদিন ধরে দমন, নীরবতা আর রাজনৈতিক ইচ্ছাধীনতায় বন্দি ছিল।
পূর্ববর্তী শাসনামলে বিচারকরা সততার কারণে বদলি হয়েছেন। নিরপেক্ষ থাকার অপরাধে আমলারা শাস্তি পেয়েছেন। পুলিশ জনগণের নিরাপত্তারক্ষী না হয়ে দলীয় বাহিনী হিসেবে কাজ করেছে। রাষ্ট্রযন্ত্রকে এমনভাবে পুনর্নির্মাণ করা হয়েছিল, যেন তা কেবল ক্ষমতাসীনদের স্বার্থই রক্ষা করে।
এটি বিশৃঙ্খলা নয়; এটি পুনর্জন্ম।
পুরো দক্ষিণ এশিয়া নীরবে তাকিয়ে আছে
শেখ হাসিনা ও কামালের পতন গোটা অঞ্চলে কম্পন তুলেছে। কেন? কারণ দক্ষিণ এশিয়া অভ্যস্ত—এখানে ‘স্ট্রংম্যান’রা সাধারণত টিকে যায়, বিচারকের কাঠগড়ায় দাঁড়ায় না।
এক দশকেরও বেশি সময় ধরে ভারতের বাংলাদেশনীতি একটি নোঙরের ওপর দাঁড় করিয়েছিলেন হাসিনা। সেই অংশীদারত্ব এখন শেষ। ভারতকে এখন প্রশ্ন শুনতে হচ্ছে—তারা কি ব্যক্তিনির্ভর সম্পর্ক বজায় রাখবে, নাকি প্রতিষ্ঠাননির্ভর সম্পর্ক গড়ে তুলবে?
পরিবর্তনে ঝুঁকি আছে, কিন্তু সম্ভাবনাও বিশাল। একটি গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ মানেই একটি বেশি স্থিতিশীল বাংলাদেশ। এখন ভারতের উচিত ব্যক্তিবিশেষকে রক্ষা করার রাজনীতি ছেড়ে দিয়ে বহুদলীয় গণতন্ত্র ও প্রাতিষ্ঠানিক স্থিতিশীলতাকে শক্তিশালী করার দিকে ঝুঁকে পড়া।
বেইজিং ঐতিহাসিকভাবে স্বচ্ছতাবিমুখ ও অগণতান্ত্রিক শাসকদের সঙ্গে ‘অন্ধকার ঘরের’ চুক্তি করতে অভ্যস্ত। কিন্তু যে বাংলাদেশ এখন জবাবদিহিতা ও স্বচ্ছতাকে মূল্য দেয়, সে দেশে আর অদৃশ্য চুক্তি চালানো সহজ হবে না। চীন এখনো প্রভাব বিস্তার করতে চাইবে, কিন্তু এবার তাকে তা অর্জন করতে হবে, কেবল কিনে নেওয়া যাবে না।
পাকিস্তান লক্ষণীয়ভাবে নীরব। ১৯৭১ সালের যুদ্ধ, বেলুচিস্তানের দমন, গুম—নিজেদের অপরাধের কোনো বাস্তব জবাবদিহিতা এখনো সেখানে হয়নি। বাংলাদেশের সাহসী পদক্ষেপ তাদের সামনে এক অস্বস্তিকর আয়না ধরে রেখেছে। পাকিস্তানের নাগরিক সমাজের জন্য এটি অনুপ্রেরণা, কিন্তু তার শাসকদের কাছে এটি এক কঠোর সতর্কবার্তা।
যখন বাংলাদেশ আদালতের মাধ্যমে ন্যায়বিচার করছে, তখন মিয়ানমার গণহত্যার পথে আরো এগিয়ে যাচ্ছে। বাংলাদেশ একদিকে শরণার্থীদের পুনর্বাসিত করার চেষ্টা করছে এবং অতীতের মুখোমুখি হতে চাইছে; অন্যদিকে এমন এক শাসন, যা বন্দুক ও ভয়ের আড়ালে লুকিয়ে আছে। এক টালমাটাল অঞ্চলেও বাংলাদেশ দেখাচ্ছে—নৈতিক নেতৃত্ব কেমন হতে পারে।
নীরব কিন্তু সুস্পষ্ট স্বীকৃতি
জাতিসংঘের মানবাধিকার-বিষয়ক হাইকমিশনারের কার্যালয় কোনো বিজয়োল্লাসপূর্ণ বিবৃতি দেয়নি, উচ্চকণ্ঠ প্রশংসাও করেনি; এর পরিবর্তে যা দিয়েছে, তা আরো গুরুত্বপূর্ণ—স্বীকৃতি। তারা অপরাধের গুরুত্ব, আদালতে উপস্থাপিত বিস্তারিত প্রমাণ এবং শেখ হাসিনার শাসনামলে মানবাধিকার লঙ্ঘন নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে উত্থাপিত উদ্বেগের কথা উল্লেখ করেছে। সবচেয়ে তাৎপর্যপূর্ণ হলো—যদিও জাতিসংঘ মৃত্যুদণ্ড সম্পর্কে আনুষ্ঠানিক কোনো অবস্থান নেয় না, তারা সতর্কভাবে এটাই ইঙ্গিত করেছে যে, এই বিচারে ন্যায্য প্রক্রিয়া (due process) সম্মানিত হয়েছে; মানবমর্যাদা ভূলুণ্ঠিত হয়নি। এখানে ন্যায়বিচার কোনো রাজনৈতিক প্রতিশোধের হাতিয়ার ছিল না; বরং তা অর্জিত হয়েছে সযত্ন, স্বচ্ছ ও আইনসম্মত প্রক্রিয়ায়।
বহু বছর ধরে জাতিসংঘের নির্যাতনবিরোধী, গুম, বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডবিষয়ক বিশেষ প্রতিবেদনকারীরা বাংলাদেশের অন্ধকার বাস্তবতা নথিভুক্ত করে আসছিলেন। সেই প্রতিবেদনগুলো অনেক সময় উপেক্ষিত হয়েছে, অনেক সময় গুরুত্ব পায়নি। এবার সেসব সত্য প্রথমবারের মতো একটি আদালতের রায়ে প্রতিফলিত হয়েছে।
এই রায় শুধু সেই তদন্তগুলোকে ওজন দিয়েছে তা-ই নয়; গুম হওয়া মানুষের পরিবারগুলোর দীর্ঘদিনের যন্ত্রণাকে আন্তর্জাতিক স্বীকৃতিও দিয়েছে। তাদের কাছে এটি শুধু সংবাদ নয়, এটি সেই স্বীকৃতি যে, তাদের শোক বিশ্ব অগ্রাহ্য করেনি।
ট্রাইব্যুনাল নিজে: শুধু আদালত নয়, এক ঘোষণাপত্র
‘আকাশ ভেঙে পড়লেও ন্যায়বিচার হোক।’ — লর্ড ম্যানসফিল্ড
দক্ষিণ এশিয়ার উপমহাদেশ বিচারব্যবস্থার আপসের গল্পে ভরপুর। প্রায়ই আদালত জনগণের নয়, রাজনীতির সেবা করেছে। বাংলাদেশের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল সেই ধারা ভেঙেছে। শুরু থেকেই আদালত চাপ প্রতিরোধ করেছে। রাজনৈতিক, আবেগিক, এমনকি আন্তর্জাতিক চাপও। ক্রুদ্ধ জনতার দাবি মেটাতে তাড়াহুড়া করে রায় দেয়নি। নিজ দায়িত্ব অনুযায়ী সময় নিয়েছে; আসামিপক্ষকে সুযোগ দিয়েছে, সাক্ষীদের সুরক্ষা দিয়েছে, প্রমাণ সংগ্রহে সূক্ষ্মতা দেখিয়েছে। প্রতিশোধপরায়ণতা ছিল না; ছিল ধীর, পরিমিত ও সচেতন ন্যায়বিচার।
ট্রাইব্যুনালের প্রমাণের মানদণ্ড ছিল অত্যন্ত উচ্চ। শুধু অভিযোগের তীব্রতা বা আবেগের ওপর নির্ভর করা হয়নি; ব্যবহার করা হয়েছে বহু সাক্ষ্য, যাচাই করা অডিও-ভিডিও রেকর্ডিং, ফরেনসিক বিশ্লেষণ ও গোয়েন্দা নথি। ট্রাইব্যুনাল আবেগ বা বক্তৃতার ওপর ভর করেনি; নির্ভর করেছে তথ্যের ওপর। এর ফলে রায় কেবল বৈধই নয়, দৃঢ় ও অটল হয়ে উঠেছে।
বাংলাদেশের সীমানার বাইরে পৌঁছে যাওয়া বার্তা
ঢাকার আদালতে যা ঘটেছে, তার প্রতিধ্বনি এখন দেশের সীমানা পেরিয়ে ছড়িয়ে পড়ছে। দক্ষিণ এশিয়ার এমন এক প্রেক্ষাপটে, যেখানে রাজনৈতিক বংশানুক্রম, সামরিক শক্তি ও দায়মুক্তি এক অদৃশ্য ‘নিয়ম’ হয়ে দাঁড়িয়েছিল, সেখানে এই বিচার প্রত্যাশার মানদণ্ড বদলে দিয়েছে। বাংলাদেশ শুধু সাবেক শাসকদের বিচার করেনি; প্রমাণ করেছে—একটি দেশ শান্তিপূর্ণ ও আইনসম্মত পথে নিজেদের অতীতের মুখোমুখি দাঁড়াতে পারে। এতে বিশ্ব শুধু একটি আদালতের উদাহরণ দেখেনি, দেখেছে একটি নাগরিক উদাহরণও।
এই প্রক্রিয়া মাধ্যমে বাংলাদেশ বিশ্বকে স্মরণ করিয়ে দিয়েছে—যথাযথ ন্যায়বিচার একটি দেশকে ভেঙে দেয় না; বরং তাকে আবার একত্রিত করে।
লেখক : সাভানা স্টেট বিশ্ববিদ্যালয়, সাভানা, জর্জিয়া, যুক্তরাষ্ট্রের সাংবাদিকতা ও গণযোগাযোগের প্রফেসর