হোম > মতামত

কোনো বাধাই দমাতে পারেনি আমার দেশকে

অলিউল্লাহ নোমান

জন্ম থেকেই নানামুখী সংকট যেন পত্রিকাটির নিত্যসঙ্গী। ঝড়ঝাপটা এবং বারবার নতুন চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করাই যেন প্রতিষ্ঠানটির নিয়তি। কখনো দমকা হাওয়া আবার কখনো সংকট রূপ নিয়েছে ঘূর্ণিঝড়ে। বাইরে-ভেতরের ষড়যন্ত্র কখনো ভূমিকম্পের মতোই মনে হয়েছে। এসব প্রতিকূলতা মোকাবিলা করেই প্রতিষ্ঠানটি এগিয়ে গেছে স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব ও মানবাধিকার সুরক্ষার প্রতিজ্ঞায়।

পত্রিকাটির শুরুর দিকে একটু পেছনের স্মৃতি স্মরণ করতে চাই। ২০০৩ সালের নভেম্বর মাস। নির্বাহী সম্পাদক রশিদ উন নবী বাবু ভাইয়ের ফোন পাই। একটু দেখা করার আমন্ত্রণ জানান তিনি। তখনো পত্রিকার অফিস নেই। এনটিভিতে প্রধান বার্তা সম্পাদকের দায়িত্বে তিনি। আমার দেশ তৈরির জন্য প্রস্তুতির দায়িত্ব অনেকটা তার ওপরে। ফোনে আমন্ত্রণ পেয়ে এনটিভিতে তার কার্যালয়েই দেখা করি। দীর্ঘ সময় নিয়ে পত্রিকাটির বিষয়ে বোঝালেন। একপর্যায়ে বললেন, তোমাকেও চাই আমাদের সঙ্গে। আমার সামনে একটি অফারও ঝুলিয়ে দিলেন তখন।

নভেম্বর পার হয়ে ডিসেম্বর মাস। আবারও তিনি ফোন দিলেন। বললেন, একবার সময় করে আসো। বিএসইসি ভবনের ১২ তলায় দুই রুমের একটি ক্যাম্প অফিস নেওয়া হয়েছে। সরাসরি ক্যাম্প অফিসে চলে আসো। এই ক্যাম্প অফিস থেকেই পত্রিকাটির সঙ্গে পথচলা শুরু। এই ক্যাম্প অফিস শুরুর আগেই সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম পত্রিকাটিতে যোগ দেব। দ্বিতীয় দিনের দেখায় পত্রিকাটির সঙ্গে যুক্ত হওয়ার সম্মতি জানিয়েছিলাম। তখন তিনি বললেন, যেহেতু যোগ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছ, নিয়োগপত্রটা আজকেই নিয়ে যাও। আমি তো সিভি আনিনি। বললাম তাকে। সিভি এখন লাগবে না। যেদিন জয়েন করতে আসবা সঙ্গে সিভি নিয়ে এলেই হবে। এভাবেই যুক্ত হয়েছিলাম পত্রিকাটির সঙ্গে। এতে একটি পত্রিকার জন্ম এবং সংকট মোকাবিলা করে কীভাবে এগিয়ে যায়, সেটা দেখার সৌভাগ্য হয়েছে সঙ্গে থেকে। অভ্যন্তরীণ সংকট, রাষ্ট্রীয় রোষানল। সবই মোকাবিলা করেছে এই পত্রিকা। পত্রিকাটির জন্মলগ্নটাও খুব সুখকর ছিল না। প্রস্তুতিকালে নিয়োগ প্রক্রিয়া ২০০৪ সালের মার্চ-এপ্রিলে শুরু হয়েছিল। যদিও অনিবার্য কারণে আমাকে যোগ দিতে হয়েছিল ফেব্রুয়ারিতে। তবে প্রকাশের তারিখ পরিবর্তন হচ্ছিল দফায় দফায়। এপ্রিল থেকে বসিয়ে বসিয়ে বেতন দেওয়া হয়েছে নিয়োগপ্রাপ্তদের। এর মাঝেই ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট গুলিস্তানে আওয়ামী লীগের সমাবেশে গ্রেনেড বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। নিহত হয় অনেক মানুষ। পত্রিকাটি তখনো বাজারে আসেনি। গুজব ছড়িয়ে পড়ে দেশের অবস্থা ভালো নয়। আমার দেশ আর বের হবে না। প্রেস ক্লাবে গেলেই এ রকম নানা নেগেটিভ প্রোপাগান্ডা শুনতে হয়েছে।

মজার বিষয় হচ্ছে, নানা শঙ্কা ও আতঙ্কের মধ্যে হঠাৎ করেই এক দিন ঘোষণা করা হয়, ২৩ সেপ্টেম্বর পত্রিকা প্রকাশ হবে। আমাদের মনে কিছুটা স্বস্তি ফিরে আসে। তবে তখনো কোনো ডামি সংখ্যা প্রকাশ হয়নি। যাছাই-বাছাই হয়নি কেমন হচ্ছে পত্রিকার প্রস্তুতি। ডামি ছাড়াই ২৩ সেপ্টেম্বর পত্রিকা বাজারে দেওয়ার প্রস্তুতি চূড়ান্ত হয়। ডামি পত্রিকা বের করে রিহার্সাল ছাড়া একটি জাতীয় দৈনিক বের হওয়ার ইতিহাস বিরল। আমার দেশ তখন এই নজির তৈরি করতে সক্ষম হয়েছিল। যদিও প্রথম দিন হোঁচট খেতে হয়েছিল ছাপা নিয়ে। প্রথম দিন ছাপাখানায় দেখা দেয় যান্ত্রিক সমস্যা। এতে পত্রিকাটির প্রথম সংখ্যা ঢাকার বাইরে পৌঁছানো সম্ভব হয়নি। ৬০ পৃষ্ঠার উদ্বোধনী সংখ্যাটি শুধু ঢাকার পাঠকদের হাতে পৌঁছানো সম্ভব হয়েছিল।

শুরুতে পত্রিকাটির সম্পাদক ছিলেন একসময়ের সাংবাদিক নেতা আমানুল্লাহ কবীর। উপদেষ্টা সম্পাদক হিসেবে দায়িত্বে ছিলেন সাংবাদিকতা জগতের উজ্জ্বল নক্ষত্র বিবিসিখ্যাত আতাউস সামাদ। আগেই উল্লেখ করেছি রশিদ উন নবী বাবু ছিলেন নির্বাহী সম্পাদক। তার হাতেই ছিল মূলত নিয়োগের দায়িত্ব। একই সঙ্গে বার্তা সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করতেন তিনি। একঝাঁক নবীন ও প্রবীণ সাংবাদিকের সমন্বয় ঘটানো হয়েছিল শুরুতে।

এখানে একটা বিষয় বলে রাখতে চাই। পত্রিকাটির শুরুর দিকে ভোরের কাগজ, আজকের কাগজ, জনকণ্ঠ, প্রথম আলো, ইনকিলাব, মানবজমিন, দিনকাল ও সংগ্রামসহ সব মতের সংবাদকর্মীদের একটি মিলনকেন্দ্রে পরিণত হয়েছিল। আওয়ামী ও ইন্ডিয়াপন্থি পত্রিকায় কাজ করা সাংবাদিকসহ নানা মতের লোকদের জড়ো করা হয়েছিল। তখন উপসম্পাদক হিসেবে যোগ দিয়েছিলেন লেখক ইমদাদুল হক মিলন।

পত্রিকাটির শুরুতে অত্যাধুনিক প্রেস (ছাপানোর যন্ত্র), সিটিপিসহ অফিসের সবই ছিল তখনকার সময়ে সবচেয়ে আধুনিক। বেতন-ভাতা ছিল সর্বশেষ ওয়েজবোর্ড অনুযায়ী রেগুলার। শুরুতেই পত্রিকাটি বাজারে পাঠকের সামনে একটি জায়গা করে নিতেও সক্ষম হয়েছিল।

সংকটে আমার দেশ : শুরু থেকে ভালোই চলছি। হোঁচট খায় জরুরি আইনের সরকারের সময়। ২০০৭ সালের ১১ জানুয়ারি দেশে জারি হয় জরুরি আইন। মঈন উদ্দিন ও ফখর উদ্দিনের জরুরি আইনের সময় শুরু হয়, গ্রেপ্তার অভিযান। আমার দেশ পাবলিকেশনস-এর চেয়ারম্যান ছিলেন তখন মোসাদ্দেক আলী ফালু। কোম্পানির পরিচালনা পর্ষদে ছিলেন এনায়েতুর রহমান বাপ্পি (এনটিভির তৎকালীন এমডি) এবং ওরিয়ন গ্রুপের ওবায়দুল করিম ও জেরাউল করিম ভ্রাতৃদ্বয়। গ্রেপ্তার অভিযানে মোসাদ্দেক আলী ফালু এবং এনায়েতুর রহমান বাপ্পি আটক হন যৌথ বাহিনীর হাতে। যথারীতি তারা কারাগারে আটক থাকেন দীর্ঘদিন। ওবায়দুল করিম দেশ ছেড়ে পালিয়ে বিদেশে। পত্রিকার এমডি ও প্রকাশক হাসমত আলী দেশে। জরুরি আইনের সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর মার্চ মাস থেকেই শুরু হয় বেতন-ভাতার সংকট।

বিএসইসি ভবনে অগ্নিকাণ্ড : একে তো বেতন-ভাতার সংকটের আশঙ্কা। এর মাঝেই যেন মড়ার উপর খাঁড়ার ঘা। ফেব্রুয়ারির শেষ সপ্তাহে বিএসইসি ভবনে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। ২০০৭ সালের ফেব্রুয়ারি মাসের এই অগ্নিকাণ্ড ছিল ঢাকার ইতিহাসে বড় আগুন লাগার ঘটনা। সেদিন অনেকেই মনে করেছিলেন পত্রিকা হয়তো আর বের হওয়া সম্ভব হবে না। এমনিতেই নানা গুজব আর অনিশ্চয়তা। এর মধ্যে আবার আগুনে পুড়েছে অফিস। সেদিনই উপদেষ্টা সম্পাদক আতাউস সামাদের নেতৃত্বে দৃঢ় সিদ্ধান্ত হয়, যেকোনো মূল্যে পত্রিকা বের হবে। প্রথম দিন দৈনিক দিনকাল ও যায়যায়দিন অফিসে আমাদের আমন্ত্রণ জানানো হয়। এই দুই পত্রিকা তখন পাশে দাঁড়ায় আমার দেশ বের করার সুযোগ করে দিতে। দিনকাল এবং যায়যায়দিনের অফিস ব্যবহারের সহযোগিতা নিয়ে ভবন আগুনে পুড়ে গেলেও পত্রিকা বের হয়েছে সেদিনও। পরের দিনই ত্রিপল টাঙিয়ে তেজগাঁওয়ে আমার দেশ ছাপাখানার সামনের খালি জায়গায় অস্থায়ী অফিস বানানো হয়। তখন মশার প্রচণ্ড উপদ্রব ওই এলাকায়। মশার উৎপাত মোকাবিলা করে ত্রিপলের নিচে বসে প্রায় তিন মাস কাজ করেছি। কেউ কেউ ব্যবহার করেছি যায়যায়দিনের অফিস। তবে পত্রিকা প্রকাশ হয়েছে নিয়মিত। এই সংকটকালে আজকের কাগজ, ভোরের কাগজ ও জনকণ্ঠ থেকে আসা অনেকে বিভিন্ন জায়গায় চাকরি নিয়ে চলে যেতে শুরু করেন। আতাউস সামাদ স্যারকে তখন পুড়ে যাওয়া এনটিভির বাড়তি দায়িত্ব দেওয়া হয়। তারপরও বটবৃক্ষের মতো আমার দেশ-এর উপদেষ্টা সম্পাদক হিসেবে ছায়া দিয়ে ছিলেন। তার ছায়ার নিচে ছিল একঝাঁক প্রতিশ্রুতিশীল দেশপ্রেমিক সাংবাদিক। তারা প্রতিকূলতা মোকাবিলা করে পত্রিকাটি বাঁচিয়ে রাখতে তখন দৃঢ়প্রতিজ্ঞ।

বেতন-ভাতার সংকট : বেতন-ভাতার সংকট শুরু হয় ২০০৭ সালের মার্চ মাস থেকেই। কখনো মাসের অর্ধেক বেতন, আবার কোনো মাসে বেতনই নেই। এ রকম করেই চলতে থাকে আমার দেশ। ধীরে ধীরে বকেয়া বেতন বাড়তে থাকে। বেতন-ভাতা নিয়ে প্রায়ই অফিসের ভেতর অস্থিরতা তৈরি হতো। তবে পত্রিকা প্রকাশনায় কোনো বিঘ্ন ঘটাতে দেয়নি আতাউস সামাদের নেতৃত্বে সৈয়দ আবদাল আহমদ ও জাহেদ চৌধুরীর মতো প্রতিশ্রুতিশীল সিনিয়ররা। অনেক দিন মনে হয়েছে হয়তো পরের দিন আর পত্রিকা বের হবে না। বেতন তো নেই। অফিসে গিয়ে শুনতাম ছাপার জন্য কাগজ কেনার টাকাও নেই। এ কথা শোনে মনে হতো আগামীকাল হয়তো আর পত্রিকা বের হবে না। এ অবস্থায়ও পত্রিকা বের হয়েছে যথারীতি।

আবু সুফিয়ানের পলায়ন ও আমানুল্লাহ কবীরের পদত্যাগ : পত্রিকাটির শুরুতেই জেনারেল ম্যানেজার ছিলেন আবু সুফিয়ান। তিনি আমার দেশ পাবলিকেশনস-এর তৎকালীন চেয়ারম্যান ও এমডি সাহেবের আত্মীয় বলে সবাই জানতাম। ২০০৮ সালের এপ্রিল মাস তখন। বেতন বকেয়া ১০ মাসের বেশি। সংগত কারণেই সাংবাদিক, কর্মকর্তা, কর্মচারী সবাই ছিলেন সংকটে। এ অবস্থায় একটি গায়েবি খবর প্রচার হয় পত্রিকা অফিসে। জেনারেল ম্যানেজার আবু সুফিয়ানের বরাত দিয়ে প্রচার করা হয়, আগুনে পুড়ে যাওয়ার ক্ষতিপূরণ হিসেবে ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি থেকে মোটা অঙ্কের টাকা পাওয়া যাবে। এই টাকা পাওয়া সাপেক্ষে তিন মাসের বেতন একত্রে দেওয়া হবে। সবাই আশায় বুক বাঁধে। দিন-তারিখও ঠিক হয় টাকা পাওয়া এবং তিন মাসের বেতন একসঙ্গে দেওয়ার। সেই প্রত্যাশায় আমরা অনেকেই অফিসে আসি হাসিমুখে। বকেয়া তিন মাসের বেতন একত্রে পাওয়া মানে অনেক বড় খুশির বিষয়।

কিন্তু সবার এই প্রত্যাশার পারদ ১৯০ ডিগ্রি উল্টে যায় সেদিন দুপুরের পর। বেতন দেওয়া তো দূরের কথা। দুপুরের পর হঠাৎ করেই খবর চাউর হয় আবু সুফিয়ান অফিসে নেই। কাউকে কিছু না বলে, অফিস থেকে পালিয়ে গেছেন তিনি। এ খবরে চরম উত্তেজনায় ফেটে পড়ে পুরো অফিস। নানা স্লোগানে ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ ঘটতে থাকে অফিসে। অন্য গণমাধ্যমকর্মীরা আসেন আমার দেশ-এর সর্বশেষ খবর জানতে। বিকেল গড়িয়ে সন্ধ্যা। সবার ক্ষোভের নিশানা তখন সম্পাদক আমানুল্লাহ কবীরের প্রতি। তিনি মিথ্যা আশ্বাস দিলেন কেন! তার কাছ থেকে সঠিক কোনো জবাব পাওয়া যায়নি তখন।

সন্ধ্যার পর বর্তমান বার্তা সম্পাদক জাহেদ চৌধুরী ফোনে কথা বলেন পত্রিকার এমডি আলফাজ হাসমত আলীর সঙ্গে। সবার সামনে বসেই লাউড স্পিকারে কথা বলেন তিনি। এমডি সাহেব তখন জানান, তিনি সাভারে। বারবার অনুরোধ করা হচ্ছিল অফিসে আসার জন্য। তিনি সাফ জানিয়ে দিলেন, কোনো অবস্থায় অফিসে আসতে পারবেন না। আরও জানিয়ে দিলেন, পত্রিকা তারা আর চালাতে চান না। প্রতিষ্ঠান বিক্রি করে দেবেন। জাহেদ চৌধুরীর নানা প্রশ্নের প্রতি-উত্তরে এও জানিয়ে দেন, সাংবাদিকরা চালাতে চাইলে নিজ দায়িত্বে চালাতে হবে। তিনি কাগজপত্রে স্বাক্ষর করে শুধু সহযোগিতা করবেন।

জাহেদ চৌধুরী ফোনে কথা বলা শেষ করেই সবাইকে নিয়ে বৈঠকে বসেন। এতে উপদেষ্টা সম্পাদক আতাউস সামাদ সভাপতিত্ব করেন। প্রথমে সম্পাদক আমানুল্লাহ কবীর বৈঠকে উপস্থিত হতে অনীহা প্রকাশ করেন। একপর্যায়ে বৈঠকের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী জাহেদ চৌধুরীসহ আমরা কয়েকজন এসে আমানুল্লাহ কবীরকে বৈঠকে উপস্থিত হওয়ার জন্য অনুরোধ জানাই। তিনি শেষ পর্যন্ত রাজি হলেন। বৈঠকে তার কাছে উপদেষ্টা সম্পাদক বেশ কয়েকটি প্রশ্ন রাখেন। সদুত্তর দিতে না পেরে পদত্যাগ করে চলে যাবেন জানিয়ে বৈঠকস্থল ত্যাগ করেন।

বৈঠক শেষ হতে রাত সাড়ে ১০টার বেশি হয়ে গেছে। তখনই তাৎক্ষণিক সিদ্ধান্ত হয় পত্রিকা পরের দিন বের হবে। সবাইকে যার যার কাজে বসার অনুরোধ জানানো হয় আতাউস সামাদ, সৈয়দ আবদাল আহমদ ও জাহেদ চৌধুরীর পক্ষ থেকে। সঙ্গে সঙ্গে সবাই কাজ শুরু করেন এবং পত্রিকা যথারীতি বের হয় পরের দিন।

রাতে কমিটি গঠন : পত্রিকা বের করার কাজ শেষ করে আমরা কয়েকজন বাড়ি ফিরিনি। রাতভর পত্রিকা অফিসে ছিলাম। যেকোনো সাবোটাজ ঘটিয়ে আমাদের ওপর দায় চাপানোর আশঙ্কা রয়েছে। তাই লাগাতার অফিস পাহারা দেওয়ার জন্য কয়েকজন দিন-রাত পালা করে থাকার সিদ্ধান্ত হয়। বর্তমান ব্যবস্থাপনা সম্পাদক জাহেদ চৌধুরী এবং আমার মধ্যে একটি সিদ্ধান্ত ছিল, আমরা দুজনের দৃষ্টির মধ্যে রাখতে হবে অফিস। সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ভোরে জাহেদ ভাই আমাকে বলতেন আপনি এখন বাসায় চলে যান। রেস্ট নিয়ে আপনি ১১/১২ টার দিকে আসেন। তখন তিনি বাসায় ফিরবেন। পরে সন্ধ্যায় এসে কাজ করবেন। এভাবে আমরা দুজন ২৪ ঘণ্টা দৃষ্টি রাখি অফিসে বেশ কিছুদিন।

পাশাপাশি রাতেই পত্রিকা পরিচালনার জন্য সিনিয়র সাংবাদিকদের নেতৃত্বে একটি কমিটি গঠন করা হয়। নির্বাহী সম্পাদক সৈয়দ আবদাল আহমদ, জাহেদ চৌধুরী এবং আমি-আমরা তিনজনে বসে কমিটির তালিকা তৈরি করেছিলাম। পত্রিকার বিভিন্ন বিভাগ দেখার জন্য কমিটির সদস্যদের মধ্য থেকে একজনকে দায়িত্ব দেওয়া হয়। এই কমিটির মূল নেতৃত্বে ছিলেন শ্রদ্ধেয় আতাউস সামাদ। তাকে সে রাতেই ভারপ্রাপ্ত সম্পাদকের দায়িত্ব নিতে অনুরোধ করেন উপস্থিত সাংবাদিকরা। তিনি রাজি হন এবং তার নেতৃত্বে কমিটি পত্রিকা পরিচালনার দায়িত্বভার নেয়।

এখানে একটি বিষয় উল্লেখ্য, পরে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, আমার দেশ অফিসের কোনো ধরনের ইন্স্যুরেন্সই ছিল না। ভুয়া খবর ছড়িয়েছিলেন আবু সুফিয়ান। কেন তিনি এমন ভুয়া খবর প্রচার করেছিলেন, সেটা আর কখনো জানা যায়নি। তারও খোঁজ মেলেনি।

কমিটি দায়িত্ব নেওয়ার পর নিজেদের পরিচালনার মাধ্যমে কাগজের দাম মিটিয়ে প্রতি মাসেই অর্ধেক বেতন দিতে সক্ষম হয়েছিল। বলা যায়, প্রতিশ্রুতিশীল ও দৃঢ়প্রতিজ্ঞ সাংবাদিকদের নিরন্তর প্রচেষ্টায় সেই রাতে পত্রিকাটি চূড়ান্ত শাটডাউনের হাত থেকে রক্ষা পেয়েছিল। তবে এই সংকটের রাতে অনুপস্থিত থেকে অনেকে নিজেকে পত্রিকার ত্রাতা হিসেবে মনে করে থাকেন। সেদিনের ষড়যন্ত্র সফল হলে আমার দেশ-এর পরবর্তী গন্তব্য কী হতো সেটা আল্লাহই ভালো জানেন।

মাহমুদুর রহমানের নেতৃত্বে দায়িত্ব গ্রহণ : সব ষড়যন্ত্র ব্যর্থ করে দিয়ে সাংবাদিকদের বিভিন্ন ইউনিটের সমন্বয়ে গড়ে ওঠা কমিটির দৃঢ়তার সঙ্গে প্রতিষ্ঠানটি বাঁচিয়ে রাখার প্রতিজ্ঞা নেন। উপদেষ্টা ও ভারপ্রাপ্ত সম্পাদকের নেতৃত্বে সাংবাদিকরা নিজেরা পত্রিকাটি পরিচালনা করলেও খোঁজা হচ্ছিল নতুন মালিক। কারণ, সাংবাদিকরা নিজ দায়িত্বে এত বড় প্রতিষ্ঠান পরিচালনা করা সম্ভব নয়। এ জন্য এমন একজনকে খোঁজা হচ্ছিল, যারা প্রতিষ্ঠানটি কিনে বাঁচিয়ে রাখবেন। কর্মরত সবার চাকরিও বাঁচবে। অনেক ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠান এগিয়ে এসেছিল। কিন্তু তারা নানা শর্ত দিতেন। পরিচালনার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট কমিটি এসব শর্ত মেনে পত্রিকা কারও কাছে হস্তান্তরে নারাজ ছিল। মোটকথা, কমিটির সিদ্ধান্তই ছিল তখন চূড়ান্ত।

একপর্যায়ে উপদেষ্টা ও ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক আতাউস সামাদের অনুরোধে সাড়া দেন বর্তমান সম্পাদক ও প্রকাশক ড. মাহমুদুর রহমান। তৎকালীন উপদেষ্টা ও ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক আতাউস সামাদের কাছ থেকে পত্রিকাটির হালহকিকত জানার পর ৪ শতাধিক সাংবাদিক-কর্মচারীর চাকরি রক্ষা ও একটি পত্রিকা বাঁচিয়ে রাখতে সম্মতি জানান তিনি। প্রসঙ্গক্রমে উল্লেখ্য, ২০১০ সালের ১ জুন সম্পাদক মাহমুদুর রহমান গ্রেপ্তার হওয়ার পর মরহুম আতাউস সামাদ আক্ষেপ করেই বলেছিলেন, ‘লোকটাকে আমি অনুরোধ করে আমার দেশ-এর দায়িত্ব নিতে রাজি করিয়েছিলাম। আমার দেশ-এর দায়িত্ব না নিলে হয়তো তাকে এভাবে গ্রেপ্তার হতে হতো না।’

২০০৮ সালের আগস্টের প্রথম সপ্তাহে পত্রিকাটির মালিকানার দায়িত্ব বোঝে পেয়ে বর্তমান সম্পাদক ও প্রকাশক মাহমুদুর রহমান সাংবাদিকদের নিয়ে বৈঠক করেন। অফিসের মাঝে দাঁড়িয়েই অনুষ্ঠিত হয় এই বৈঠক। ঘোষণা করেছিলেন এখন থেকে বেতন-ভাতা নিয়মিত দেওয়া হবে। যেই কথা সেই কাজ। প্রায় দেড় বছর পর আগস্টের প্রথম সপ্তাহে এক মাসের বেতন একসঙ্গে পেয়েছিলেন পত্রিকাটির সংবাদকর্মীরা। এরপর থেকে প্রতি মাসের প্রথম সপ্তাহে বেতন-ভাতা দেওয়া হতো। আতাউস সমাদ তখনো উপদেষ্টা সম্পাদক ছিলেন। শ্রদ্ধেয় মাহমুদুর রহমান দায়িত্ব নেওয়ার পর পত্রিকার সার্কুলেশন দিনে দিনে বাড়তে থাকে। জনপ্রিয় ওঠে দ্রুত। শেখ হাসিনা সরকারের ফ্যাসিবাদী হয়ে ওঠার নানা তথ্য আমার দেশ তখন প্রকাশ করত নির্ভীকভাবে।

শেখ হাসিনার ফ্যাসিবাদী আচরণে বন্ধ হয় আমার দেশ : ২০১০ সালের ৩০ মে। হঠাৎ করেই খবর ছড়িয়ে পড়ে আমার দেশ বন্ধ করে দিচ্ছে সরকার। দিনভর এ নিয়ে উত্তেজনা। আমার দেশ-এর সর্বশেষ পরিস্থিতি জানতে অন্য গণমাধ্যমকর্মীরা ভিড় করেন আমার দেশ কার্যালয়ে। সম্পাদক বিকেলে সংবাদ ব্রিফিং করেন সর্বশেষ পরিস্থিতি নিয়ে। একদিকে উত্তেজনা, অন্যদিকে চলছে পরের দিনের পত্রিকা প্রকাশের কাজ। সন্ধ্যার পর ছাপাখানায় পত্রিকা ছাপানোর কাজও শুরু হয়। হঠাৎ করে খবর আসে ডিসি অফিস আমার দেশ-এর ডিক্লারেশন বাতিল করেছে। পুলিশ পত্রিকা অফিস ঘেরাও করে সম্পাদককে গ্রেপ্তারের উদ্দেশ্যে। তেজগাঁও ছাপাখানা রাত ১০টার পর পুলিশ দখলে নেয় জোর করে। ভোরে অর্থাৎ ১ জুন সম্পাদককে পত্রিকা কার্যালয় থেকে গ্রেপ্তার করে নিয়ে যায় পুলিশ। তার বিরুদ্ধে পরের দিনই চারটি ভৌতিক মামলায় শ্যোন অ্যারেস্ট দেখানো হয় এবং অনুগত ম্যাজিস্ট্রেট যথারীতি রিমান্ড মঞ্জুর করেন।

আইনি লড়াই : সুপ্রিম কোর্ট তখনো পুরোপুরি ফ্যাসিবাদের কব্জায় যায়নি। আইনি লড়াইয়ে পরের সপ্তাহেই আমার দেশ প্রকাশের পক্ষে রায় দেয় হাইকোর্ট বিভাগের একটি বেঞ্চ। রাজপথে লড়াইয়ের পাশাপাশি পত্রিকাটির সাংবাদিক-কর্মচারীরা আইনি লড়াইয়ে প্রথম বিজয় দেখতে পান। কিন্তু পরের দিনই সরকার অনুগত চেম্বার জজ হাইকোর্ট বিভাগের আদেশ স্থগিত করে দেয়। এই স্থগিতাদেশ কাটিয়ে উঠে যাতে দ্রুত শুনানি করা হয়, সেই আবেদন করা হয়েছিল আমার দেশ-এর পক্ষ থেকে। তখন চেম্বার জজের দায়িত্বে থাকা সুরেন্দ্র কুমার সিনহা এক মাস পর শুনানির দিন ধার্য করেন আপিল বিভাগের ফুলকোর্টে। সুরেন্দ্র কুমার কায়দা করে পত্রিকাটি আরও এক মাস বন্ধ রাখার ব্যবস্থা করেন। নির্ধারিত এক মাস পর ফুলকোর্টে শুনানির পর পত্রিকাটি বের করার পক্ষে রায় পাওয়া যায়। সুপ্রিম কোর্টের সিনিয়র আইনজীবী টি এইচ খান, ব্যারিস্টার রফিক উল হক, ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ, ব্যারিস্টার জমির উদ্দিন সরকার, খন্দকার মাহবুব হোসেন, এ জে মোহাম্মদ আলীসহ অনেক সিনিয়র আইনজীবী সেদিন আপিল বিভাগে আমার দেশ-এর পক্ষে উপস্থিত ছিলেন। মূল শুনানি করেছিলেন ব্যারিস্টার আবদুর রাজ্জাক ও রফিক উল হক।

আপিল বিভাগের আদেশ নিয়ে সেই বিকেলেই শুরু হয় পত্রিকা বের করার প্রস্তুতি।

সম্পাদক মাহমুদুর রহমান তখনো কারাগারে। তিনি কারাগারে থাকা অবস্থায়ও শেখ হাসিনার ফ্যাসিবাদ পত্রিকাটি প্রকাশনায় নানাভাবে প্রতিবন্ধকতা তৈরির অপচেষ্টা চালিয়েছিল। আল্লাহর অশেষ রহমতে তখন পত্রিকাটির প্রকাশনা অব্যাহত রাখতে সক্ষম হয় সাংবাদিক, কর্মকর্তা, কর্মচারীদের দৃঢ়তার কারণে।

এখানে বিশেষভাবে উল্লেখ্য, সম্পাদক কারাগারে থাকাকালে তার স্ত্রী ফিরোজা মাহমুদ পত্রিকাটির প্রকাশনা অব্যাহত রাখতে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ ছিলেন। তার শক্ত অবস্থানের কারণেই তখন প্রকাশনা অব্যাহত রাখা সম্ভব হয়েছিল।

২০১১ সালের ১৯ মার্চ সম্পাদকের মুক্তি : দীর্ঘ আইনি লড়াই শেষ করে ৯ মাস ১৯ দিন কারাভোগের পর মুক্তি পান আমার দেশ সম্পাদক মাহমুদুর রহমান। গাজীপুরের জেলা কারাগার থেকে মুক্তি পেয়ে তিনি সরাসরি আসেন আমার দেশ কার্যালয়ে।

কারাগার থেকে বের হয়ে সম্পাদক আগের মতোই সংস্কৃতির লড়াই অব্যাহত রাখার ঘোষণা দেন। তিনি নিজে নিয়মিত কলাম লিখে শেখ হাসিনার ফ্যাসিবাদ ও ভারতীয় আধিপত্যবাদ নিয়ে মানুষকে সতর্ক করার চেষ্টা করেন। দুর্নীতি ও দুঃশাসনের বিরুদ্ধে এবং মানবাধিকারের পক্ষে সংবাদ খোঁজার জন্য পত্রিকাটিতে কর্মরত সাংবাদিকদের নিয়মিত উদ্বুদ্ধ করতেন তিনি। সত্য প্রকাশে তার মতো দৃঢ়চিত্তের সম্পাদক ছিলেন বলেই স্কাইপ স্ক্যান্ডাল প্রকাশ সম্ভব হয়েছিল। পরে শাহবাগের ভারতপন্থি জাগরণের বিরুদ্ধে তিনি ছিলেন সোচ্চার। স্রোতের বিরুদ্ধে গিয়ে আমার দেশ-এর দৃঢ় অবস্থানের ফলেই শাহবাগে ফ্যাসিবাদী উল্লাস তাসের ঘরের মতো ভেঙে পড়েছিল।

থেমে ছিলেন না শেখ হাসিনা : যেকোনো মূল্যে আমার দেশ-এর প্রকাশনা বন্ধ করতে মরিয়া ছিলেন শেখ হাসিনা। তার তৎকালীন মোসাহেব তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনুদের ষড়যন্ত্রে ২০১৩ সালের ১১ এপ্রিল আবারও জোর করে আমার দেশ-এর ছাপাখানা দখলে নেয় সরকার। সেদিনই সকালে আমার দেশ অফিস থেকে আগের মতোই সম্পাদককে আটক করে নিয়ে যাওয়া হয় ডিবি অফিসে। স্কাইপ স্ক্যান্ডাল প্রকাশের কারণে তথ্যপ্রযুক্তি ও রাষ্ট্রদ্রোহ আইনে করা মামলায় তাকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে রিমান্ডে নেওয়া হয়। এবারও অনেক ভৌতিক মামলায় শ্যোন অ্যারেস্ট দেখিয়ে রিমান্ডে নিয়ে নির্যাতন করা হয় তাকে। দুই দফা গ্রেপ্তারে ৩৯ দিন রিমান্ডে নিপীড়নের মুখোমুখি ছিলেন সম্পাদক মাহমুদুর রহমান।

দীর্ঘ আইনি লড়াইয়ের একপর্যায়ে প্রায় চার বছর কারাভোগের পর জামিনে মুক্তি পেতে সক্ষম হয়েছিলেন তিনি।

কুষ্টিয়ায় আমার দেশ সম্পাদককে হত্যাচেষ্টা : পত্রিকা বন্ধ করেই শেষ হয়নি শেখ হাসিনার রোষানল। সম্পাদকের বিরুদ্ধে বিভিন্ন জেলায় করা হয় সিরিজ মামলা। চলমান সিরিজ মামলায় ২০১৮ সালের ২২ জুলাই কুষ্টিয়ার আদালতে হাজিরা দিতে গেলে তার ওপর আক্রমণ চালায় চিহ্নিত আওয়ামী সন্ত্রাসীরা। আক্রমণের ধরন থেকেই স্পষ্ট তাকে হত্যার উদ্দেশ্যে চালানো হয়েছিল সন্ত্রাসী আগ্রাসন। এতে সহযোগিতা করে পুলিশ। আল্লাহর রহমতে সেদিন রক্তাক্ত অবস্থায় প্রাণে বেঁচে ফিরতে পেরেছিলেন তিনি।

হাইকোর্টে যেতে বারণ করা : কুষ্টিয়ায় আক্রমণের পর চিকিৎসারত অবস্থায় মাথায় ব্যান্ডেজ নিয়ে হাইকোর্টে গিয়েছিলেন একটি মামলায় জামিন চাইতে। জামিন দেওয়া তো দূরের কথা, কেন তিনি আদালত কক্ষে অপেক্ষমাণ অবস্থায় আইনজীবীর সঙ্গে বসেছিলেন, এ নিয়ে ভর্ৎসনা করেছিলেন বিচারকের আসনে বসা আওয়ামী গুণ্ডা মুজিবুর রহমান। তিনি সরাসরি জানিয়ে দিয়েছিলেন, হাইকোর্টের বিচারকরা তাকে পছন্দ করেন না। তাই তিনি যেন আর হাইকোর্টে বিচার চাইতে না যান সে হুকুম দিয়েছিলেন এই আওয়ামী বিচারক।

উচ্চ আদালতে আইনের আশ্রয় নেওয়ার দরজাও যখন বন্ধ হয়ে গিয়েছিল, তখন দেশত্যাগ ছাড়া আর কোনো বিকল্প ছিল না। মালয়েশিয়া এবং তুরস্কের ইস্তাম্বুলে ছয় বছর নির্বাসিত জীবন কাটাতে হয়েছে তাকে। এই নির্বাসনের অবসান ঘটে ছাত্র-জনতার গণ-অভ্যুত্থানে।

নির্বাসন থেকে দেশে ফিরে বিমানবন্দরেই আমার দেশ প্রকাশের নতুন উদ্যোগ নেবেন বলে ঘোষণা দিয়েছিলেন। ভারতীয় আধিপত্যবাদ ও ফ্যাসিবাদী সংস্কৃতির বিরুদ্ধেই আমার দেশ-এর লড়াই অব্যাহত থাকবে- এই প্রতিজ্ঞা নিয়েই আবার প্রকাশ হয়েছে আজ।

এখানে আরও একটি বিষয় উল্লেখ করার দাবি রাখে। নির্বাসিত জীবনে তিনি বসে থাকেননি। লন্ডন থেকে আমার দেশ অনলাইন প্রকাশের উদ্যোগ নিয়েছিলেন। তখন প্রথম দিনেই আমার দেশ অনলাইন বাংলাদেশে ডাউনলোড বন্ধ করে দেয় ফ্যাসিবাদী সরকার। নানা প্রতিবন্ধকতা তৈরির অপচেষ্টা চালানো হয় লন্ডন থেকে শুরু হওয়া আমার দেশ-এর বিরুদ্ধে। এসব মোকাবিলা করেই ফ্যাসিবাদ ও ভারতীয় আধিপত্যবাদবিরোধী লড়াই অব্যাহত রাখা হয়।

পদে পদে কোনো বাধাই আমার দেশকে দমাতে পারেনি। আমার দেশ-এর দৃঢ়চিত্তের সংবাদকর্মীরাও আত্মসমর্পণ করেননি ফ্যাসিবাদের কাছে। আবারও বাধা এলে অতিক্রম করবে আমার দেশ, এই প্রতিজ্ঞা প্রত্রিকাটির সম্পাদকসহ সংবাদকর্মীদের।

লেখক : আবাসিক সম্পাদক, লন্ডন, আমার দেশ

কপ-৩০ সম্মেলন প্রত্যাশা ও প্রাপ্তি

বন্দর ব্যবস্থাপনা : ভারতের বয়ানে সমালোচনা

চীনের বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের নয়া ফ্রন্ট মধ্য এশিয়া

জুলাই বিপ্লবের উচ্ছ্বাস ও সামনের কঠিন বাস্তবতা

স্বাস্থ্য খাত সংস্কারে কিছু প্রস্তাব

চক্রের ফাঁদে পড়েছে চীন আর ভারত

আসল বাউল নকল বাউল

অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা শঙ্কা

মার্কিন রাজনীতিতে ইহুদি লবির প্রভাব

ভারত কেন শেখ হাসিনাকে রাখতে চায়?