হাসিনার পালানোর খবর শুনে দুবাইতে মিষ্টি বিতরণ করেছিলেন আজম। তিনি বলেন, ‘নয় সালের পর আর ভোট দিতে পারিনি। এবার দেশের ভোটের দিনের আনন্দে শরিক হতে চাই।’ আজমের এই কথায় জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) মুখ্য সংগঠক (দক্ষিণাঞ্চল) হাসনাত আবদুল্লাহ বলেছেন, প্রতিশ্রুতি দিচ্ছি, আমাদের অঙ্গীকার, এবার রাষ্ট্র হবে জনতার।
বৃহস্পতিবার দুবাই প্রবাসী এই আজমকে নিয়ে এক ফেসবুকে এসব কথা বলেন তিনি।
হাসনাত আবদুল্লাহ বলেন, লাল জামা পরা ভাইয়ের নাম আজম ভাই। দুবাই প্রবাসী। হাসিনার পালানোর খবর শুনে দুবাইতে মিষ্টি বিতরণ করেছিলেন। অক্টোবরের বারো তারিখ দেশে এসে মেয়ের বিয়ে দিয়েছেন। এই মাসের ৮ তারিখ তাঁর ফিরতি ফ্লাইট। তবে তিনি ভোটের এক সপ্তাহ আগে দেশে আসবেন। বললাম, এবার তো বিদেশে বসেও ভোট দিতে পারবেন, তাহলে দেশে আসবেন কেন? উত্তরে বললেন, ‘নয় সালের পর আর ভোট দিতে পারিনি। ভোটের উৎসব হারিয়ে গিয়েছিলো। এবার দেশের ভোটের দিনের আনন্দে শরিক হতে চাই।’
আর পাশের মানিক ভাই স্যাঁতসেঁতে অন্ধকারে ধোঁয়াটে আগুনের সামনে বসে চা বিক্রি করেন। রং চায়ের লিকারের সঙ্গে দুধ মিশানোর পর যে পিঙ্গল বর্ণ ধারণ করে, সেটি যেন মানিক ভাইয়ের দীর্ঘ লড়াইয়ের সচিত্র উপস্থাপন। ফ্যাকাশে হয়ে যাওয়া দুই চোখে পুরো কাচের চশমা দেওয়া শূন্য দৃষ্টিতে চা বেচে যাওয়া টিএসসির স্বপন মামা থেকে শুরু করে এই পাহারের মানিক ভাইয়ের বানানো চায়ের পিঙ্গল বর্ণ যেন তাঁদের জীবনের মর্মান্তিক পরিণতি ও তাঁদের সঙ্গে হওয়া রাষ্ট্রীয় জালিয়াতির সচিত্র উপস্থাপন।
মানিক ভাই জানালেন, তাঁকে এলাকায় সবাই এনসিপির সভাপতি বলে খোঁচা দেয়। তাঁকে জিজ্ঞেস করলাম, ‘আপনার খারাপ লাগে না?’ বললেন, ‘খারাপ লাগবে কেন? তোমাদের জন্যই তো এখন মন খুলে কথা বলি। এনসিপির সভাপতি বললেই বা কী, না বললেই বা কী, আমি তোমাদের হয়ে কথা বলবই।’
বিশ্বের নিঃস্বতম গণতন্ত্র রক্ষার নির্বাচনে কে হারে, কে জেতে,সেটি জনগণের ব্যালটই নির্ধারণ করুক। কিন্তু প্রান্তিক জনপদ, ভাসমান জীবন ও ছিন্নবিচ্ছিন্ন মানুষের পক্ষ হয়ে পর্বতসম মহিমাকে স্পর্শ করতে চাওয়া আমাদের এই নিরক্ষর, নগণ্য, কুঁজো আজম ভাই ও মানিক ভাইয়ের কাছে আমাদের অনেক দায় রয়েছে। এবার আমাদের এই দায় মেটানোর পালা।
নির্বাচনের অপেক্ষা করতে থাকা আজম ভাই ও এনসিপির পক্ষ হয়ে, আমাদের পক্ষ হয়ে, আমাদের নিভৃতে কথা বলে যাওয়া মানিক ভাইকে প্রতিশ্রুতি দিচ্ছি,আমাদের অঙ্গীকার, এবার রাষ্ট্র হবে জনতার।