বিশ্ব ক্রিকেটের নিয়ন্ত্রক সংস্থা মুশফিকুর রহিমকে শততম টেস্টের শুভেচ্ছা জানিয়েছিল অজি কিংবদন্তি রিকি পন্টিংয়ের মাধ্যমে। শততম টেস্টে দুই ইনিংসে সেঞ্চুরি করা একমাত্র ক্রিকেটার এই রিকি পন্টিং। নিজের শততম টেস্টে পন্টিংকেই স্পর্শ করার দ্বারপ্রান্তে ছিলেন মুশফিক। শেষ পর্যন্ত এই অজি কিংবদন্তির রেকর্ড স্পর্শ করতে পারেননি। তবে তার কাছাকাছি গিয়ে নতুন এক রেকর্ড গড়েছেন। মিরপুরে মুশফিকের দারুণ ব্যাটিংয়ের সঙ্গে দলের দারুণ পারফরম্যান্সে টেস্ট জয়ের পথে বাংলাদেশ। এতে রঙিন হয়েছে মুশফিকের শততম টেস্ট।
প্রথম বাংলাদেশি হিসেবে শততম টেস্ট খেলতে নামে মুশফিক। তার এই মাইলফলক ঘিরে ছিল বাড়তি উন্মাদনা। এমন বাড়তি উন্মাদনার মাঝে মুশফিকের পারফরম্যান্স কতটা উজ্জ্বল হবে—তা নিয়ে ছিল সংশয়। পুরো ম্যাচের আলো যখন তার দিকে তখনই জ্বলে উঠল ব্যাট। প্রথম ইনিংসে খেললেন ১০৬ রানের ইনিংস। আর দ্বিতীয় ইনিংসে অপরাজিত ছিলেন ৫৩ রানে। তাতে ১১তম ক্রিকেটার হিসেবে নিজের শততম টেস্টে সেঞ্চুরি করার রেকর্ড গড়েন মুশফিক। সুযোগ ছিল দ্বিতীয় ক্রিকেটার হিসেবে শততম টেস্টে দুই ইনিংসে সেঞ্চুরি করার। তবে জয়ের জন্য পর্যাপ্ত রান হয়ে যাওয়ায় বাংলাদেশ অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত ঘোষণা করেন ইনিংস। তাতে ৫৩ রানে অপরাজিত থেকে ফিরতে হয় ড্রেসিংরুমে।
তাতেও অবশ্য নতুন রেকর্ডের জন্ম দিয়েছেন মুশফিকুর রহিম। প্রথম ক্রিকেটার হিসেবে নিজের শততম টেস্টে এক ইনিংসে সেঞ্চুরি ও অন্য ইনিংসে ফিফটি করেছেন। আরো একটু যদি বড় করে দেখানো যায়—তাহলে দুই ইনিংসেই পঞ্চাশোর্ধ্ব রানের ইনিংস খেলা দ্বিতীয় ক্রিকেটার তিনি। এর আগে এই কীর্তি গড়েছিলেন আইসিসির মাধ্যমে মুশফিককে শততম টেস্টে শুভ কামনা জানানো রিকি পন্টিং। এটা নিশ্চিত কাকতাল। তবে এত আলোকচ্ছটার মধ্যে মুশফিক পারফর্ম করতে পারবেন—তা যেন কারও কল্পনাতেও ছিল না।
দূরতম ভাবনাতেও কেউ যখন মুশফিকের এমন পারফরম্যান্সের কথা চিন্তা করতে পারেনি, তখন দারুণ ব্যাটিং করে রাঙিয়ে তোলেন নিজের শততম টেস্ট। শুধু তিনিই রাঙাননি, জয়ের দ্বারপ্রান্তে থাকা পুরো বাংলাদেশ দলও রাঙিয়ে তুলেছে তার শততম টেস্টের মুহূর্তগুলো। অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে টেস্ট সিরিজ শুরুর আগে বলেছিলেন, মিরপুরে পাঁচটা দিনই উপভোগ করতে চান। চার দিনের একদিনই ম্যাচে ব্যাকফুটে ছিল না বাংলাদেশ। ফলে নিশ্চিত করেই বলা যায়, মাঠে পুরোটা সময় উপভোগ করেছে শান্ত-লিটনরা। সেই উপভোগের কেন্দ্রবিন্দুতে শুধুই মুশফিকুর রহিম। শততম টেস্টটা হয়ে উঠল রঙিন, সারা জীবন মনে রাখার মতো আরো একটি বাড়তি মুহূর্ত পেলেন তিনি।