শেষ তিন ওভারে (১৮ বলে) জিততে ওয়েস্ট ইন্ডিজের প্রয়োজন ছিল ৫২ রান, হাতে ৩ উইকেট। পুরো ইনিংসে ক্যারিবীয়দের ব্যাটিং বিবেচনায় এই রান কঠিনই মনে হচ্ছিলো। ম্যাথু ফোর্ডের রান তখন ১ বলে ১। পরের দুই ওভারে ঝড় তুললেন এই অলরাউন্ডার। ১৮তম ওভারে ৩ ছক্কায় ২২ ও ১৯তম ওভার থেকে ফোর্ড-পাওয়েল মিলে তোলেন ১৪ রান। তাতেই শেষ ওভারের সমীকরণ দাঁড়ায় ৬ বলে ১৬। এখানেই থ্রিলারের চূড়ান্তটা দেখালেন কাইল জেমিসন।
জেমিসনের প্রথম ৩ বলে ফোর্ডে নেন ১১। পরের বলে আউট পাওয়েল। শেষ বলে সমীকরণ দাঁড়ায় ৫। আগের দুই ওভারে ঝড় তোলা ফোর্ডে এবার আর পারলেন না। কাইল জেমিসনের স্লোয়ারে ১ রানের বেশি নিতে পারেননি তিনি। আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে রান তাড়ায় নেমে শেষ ৫ ওভারে রেকর্ড ৮৭ রান তুলেও হতাশায় ডুবতে হলো ক্যারিবীয়দের। ৩ রানের জয়ে পাঁচ ম্যাচের সিরিজে ১-১ ব্যবধানে সমতায় ফিরেছে নিউজিল্যান্ড।
টস হেরে ব্যাট করতে নেমে নিউজিল্যান্ডের টপ অর্ডার রান তোলে ওয়ানডে স্টাইলে। উদ্বোধনী জুটিতে আসে ৪৩ বলে ৫৫ রান। এরপর টানা দুই ওভারে দুই উইকেট হারায় নিউজিল্যান্ড। আউট হয়ে যান দুই ওপেনার টিম রবিনসন (২৫ বলে ৩৯ রান) ও ডেভন কনওয়ে (২৪ বলে মাত্র ১৬ রান)।
এরপর তৃতীয় উইকেটে ২৯ বলে ৪৮ রানের জুটি গড়েন মার্ক চ্যাপম্যান ও রাচিন রবীন্দ্র। রাচিন অনেকটাই স্লো ছিলেন। ১৫ বলে ১১ রানের অবদান ছিল তার। অন্যদিকে ঝড় তোপেন চ্যাপম্যান। যার ফলে মাত্র ১৮ বলে ৫৭ রানের জুটি আসে মিচেল ও চ্যাপম্যানের ব্যাট থেকে। চ্যাপম্যান মাত্র ২৮ বলে খেলেন ৭৮ রানের ইনিংস। প্রায় ২৭৯ স্ট্রাইকরেটের এই ইনিংসে ছিল ৬টি চার ও ৭টি ছক্কা।
শেষদিকে মিচেল ১৪ বলে ২৮ ও মিচেল স্যান্টনার ৮ বলে ১৮ রানের ক্যামিও খেলেন। আর তাতে নির্ধারিত ২০ ওভারে ২০৭ রানের বড় সংগ্রহ পায় নিউজিল্যান্ড।
বিশাল লক্ষ্য তাড়াইয় নেমে রানের খাতা খোলার আগেই বিদায় নেন ব্রেন্ডন কিং। দ্বিতীয় উইকেটে ৪১ বলে ৪৯ রানের জুটি গড়েন শাই হোপ ও অ্যালিক অ্যাথানাজে। ২৫ বলে ৩৩ রান করে আউট হন অ্যাথানাজে। হোপ ২৬ বলে করেন ২৪ রান। ১০ ওভারে ৩ উইকেটে ৭১ রান তোলা ক্যারিবীয়দের জাগিয়ে তোলেন জেসন হোল্ডার। তার ৮ বলে ১৬ রানের ক্যামিও ধরে পালে আশার হাওয়া লাগান রোভম্যান পাওয়েল ও রোমারিও শেফার্ড। সপ্তম উইকেটে ২৪ বলে ৬২ রানের বিধ্বংসী জুটি পায় ক্যারিবীয়রা।
পাওয়েল ও শেফার্ডের জুটি ভাঙেন স্যান্টনার। ১৬ বলে ৩৪ রান করে বিদায় নেন শেফার্ড। এরপর পাওয়েল ১৬ বলে ৪৫ রান করে আউট হওয়ার পর ম্যাথু ফোর্ডের লড়াই। শেষ বলে গড়ানো লড়াইয়ে শেষ হাসি নিউজিল্যান্ডের।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
নিউজিল্যান্ড: ২০ ওভারে ২০৭/৫ (চ্যাপম্যান ৭৮, রবিনসন ৩৯, মিচেল ২৮*; চেজ ২/৩৩)। ওয়েস্ট ইন্ডিজ: ২০ ওভারে ২০৪/৮ (পাওয়েল ৪৫, শেফার্ড ৩৪, অ্যাথানেজ ৩৩, ফোর্ড ২৯; স্যান্টনার ৩/৩১, সোধি ৩/৩৯)।
ফল: নিউজিল্যান্ড ৩ রানে জয়ী।
সিরিজ: ৫–ম্যাচ সিরিজে ১–১ সমতা।
ম্যান অব দ্য ম্যাচ: মার্ক চ্যাপম্যান।