যুক্তরাষ্ট্রের চাপ উপেক্ষা করে একাধিক চুক্তি করেছে ভারত ও রাশিয়া। শুক্রবার ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন এসব চুক্তিতে স্বাক্ষর করেন।
পুতিন জানান, আলোচনায় দুই দেশের সহযোগিতা জোরদারের উদ্দেশ্যে বেশ কিছু নতুন চুক্তি সই হয়েছে। খবর দ্য গার্ডিয়ানের।
রুশ প্রেসিডেন্ট বলেন, তেল, গ্যাস, কয়লা—ভারতের জ্বালানি উন্নয়নের জন্য যা যা প্রয়োজন, রাশিয়া সব কিছুরই নির্ভরযোগ্য সরবরাহকারী। দ্রুত বর্ধনশীল ভারতীয় অর্থনীতির জন্য আমরা জ্বালানি সরবরাহ অব্যাহত রাখতে প্রস্তুত।
এটি ছাড়া দুই দেশের মধ্যে আর কোন কোন নতুন চুক্তি হয়েছে, তার বিস্তারিত এখনো প্রকাশ করা হয়নি।
পুতিন জানান, আজকের দিনটি হবে ‘ফলপ্রসূ’। কারণ প্রতিরক্ষা, প্রযুক্তি, বিমান ও মহাকাশ—এসব খাতের বহু গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নিয়ে আলোচনা হবে।
ভারতীয় কর্মকর্তাদের সূত্রে জানা গেছে, সম্মেলনের আলোচ্যসূচিতে রয়েছে প্রতিরক্ষা, জ্বালানি ও শ্রমের গতিশীলতা।
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প আগস্টে অধিকাংশ ভারতীয় পণ্যের ওপর ৫০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করেন। নয়াদিল্লি রুশ তেল কেনা অব্যাহত রাখায় এমন কঠোর পদক্ষেপ নেয় ওয়াশিংটন। তাদের দাবি, তেল বিক্রির টাকা ইউক্রেনের বিরুদ্ধে যুদ্ধে ব্যবহার করছে রাশিয়া।
বিশ্লেষকদের মতে, পুতিনের এই সফর ভারতের জন্য কূটনৈতিক ভারসাম্যের বড় পরীক্ষা। কারণ দিল্লি একদিকে রাশিয়ার ঐতিহাসিক মিত্রতা ধরে রাখতে চাইছে, অন্যদিকে যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) সঙ্গে বাণিজ্য চুক্তি চায়; যা তাদের রপ্তানির জন্য অত্যন্ত জরুরি।
ইন্টারন্যাশনাল ক্রাইসিস গ্রুপের বিশ্লেষক প্রবীণ দোনথি বলেন, এই সফর দেখিয়ে দিচ্ছে যে, ভারত পশ্চিমা বিশ্বের চাপের মধ্যে থেকেও রাশিয়ার সঙ্গে সম্পর্ক বজায় রাখছে। একই সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের কৌশলগত অংশীদারও হতে চায়, এটাই বড় কূটনৈতিক চ্যালেঞ্জ।
বিশ্লেষকদের মতে, বৈশ্বিক উত্তেজনার এই সময় পুতিনের ভারতে আসা শুধু প্রতীকী নয়, এটা স্পষ্ট বার্তা যে ভারত-রাশিয়া সম্পর্ককে ওয়াশিংটনের চাপ দিয়ে দমিয়ে রাখা যাবে না। দুই দেশই তা প্রকাশ্যে জানিয়ে দিচ্ছে।