তুরস্কের পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাকান ফিদান বলেছেন, “ফিলিস্তিন আমাদের সময়ের নৈতিক দিকনির্দেশনা হিসেবে রয়ে গেছে।” তিনি আরও বলেন, এটি মুসলিম বিশ্বের ভাগ করা মূল্যবোধকে সম্মিলিত কর্মকাণ্ডে রূপান্তর করতে পারবে কিনা—তার চূড়ান্ত পরীক্ষা।
শনিবার তুরস্কভিত্তিক গণমাধ্যম আনাদুলো এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে।
ইস্তাম্বুলে অনুষ্ঠিত আল শার্ক যুব সম্মেলনে বক্তব্য রাখতে গিয়ে ফিদান বলেন, এর অর্থ হলো ইসরাইলি আগ্রাসন প্রতিহত করা এবং ইসরাইলি সম্প্রসারণবাদের মোকাবিলা করা।
তিনি বলেন, ইসলামী বিশ্বে একটি সূক্ষ্ম কিন্তু বাস্তব রূপান্তর ঘটছে। “এই রূপান্তরের আরও প্রয়োজন রয়েছে, তবে সর্বোপরি ইসলামী বিশ্বের ঐক্য দরকার,” বলেন তিনি।
ফিদান জানান, এই সহযোগিতার ধারাবাহিকতা নিশ্চিত করতে তুরস্ক উল্লেখযোগ্য প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। একই সঙ্গে তিনি “নৈতিক সাহস ও স্থানীয় মালিকানা”র ওপর গুরুত্বারোপ করেন।
বিশ্বব্যাপী ক্ষমতার ভারসাম্য পরিবর্তনের কথা উল্লেখ করে তুরস্কের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, বিশ্ব বর্তমানে এমন এক সময় অতিক্রম করছে যেখানে বিভিন্ন অঞ্চলে সংঘাত অব্যাহত রয়েছে এবং বৈশ্বিক কৌশলগত প্রতিযোগিতার প্রভাব বিস্তৃত হচ্ছে।
তিনি জোর দিয়ে বলেন, “আমাদের ইতিহাসের পরবর্তী অধ্যায় প্রতিযোগিতা ও বিভাজন নয়, বরং সহযোগিতা দ্বারা চিহ্নিত হওয়া উচিত। এটি মেরুকরণ নয়, অংশীদারিত্বের যুগ হওয়া উচিত।”
আঞ্চলিক ও অর্থনৈতিক সহযোগিতার পাশাপাশি ইসলামী বিশ্বের নিরাপত্তা, প্রতিরক্ষা এবং যৌথ দৃষ্টিভঙ্গির ভিত্তিতে সম্মিলিত উদ্যোগ নেওয়া জরুরি বলেও মন্তব্য করেন ফিদান।
ফিদান বলেন, আঙ্কারার বিশ্বাস হলো—“কেবল আঞ্চলিক অভিনেতারাই আঞ্চলিক সমস্যার টেকসই সমাধান দিতে পারে।” তাঁর মতে, ইতিহাস ও অভিজ্ঞতার আলোকে সংঘাতের মূল কারণ বোঝার সক্ষমতা একমাত্র আঞ্চলিক শক্তিগুলোরই রয়েছে।
গাজা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, যুদ্ধবিরতির পর একটি নতুন কাঠামোর প্রয়োজন রয়েছে। যুদ্ধবিরতি মানেই শান্তি নয়, কারণ শান্তির জন্য ন্যায়বিচার অপরিহার্য। আর ন্যায়বিচারের জন্য দরকার একটি সার্বভৌম, মুক্ত ও কার্যকর ফিলিস্তিনি রাষ্ট্র।
তরুণদের উদ্দেশে তুরস্কের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, কূটনীতি অধ্যবসায়ের ওপর ভিত্তি করে গড়ে ওঠে এবং প্রায়শই পর্দার আড়ালে বিভাজন দূর করার কাজ করে। তিনি নীতিগত দৃঢ়তার গুরুত্ব তুলে ধরে বলেন, এর মাধ্যমেই কূটনৈতিক বাধা অতিক্রম করা সম্ভব।
তিনি তরুণদের আহ্বান জানান, যেন তারা চারপাশের সংকটে নিজেদের সংজ্ঞায়িত না করে বরং সমাধান তৈরিতে এগিয়ে আসে এবং উন্মুক্ত, সৃজনশীল ও সাহসী থাকে।