মার্কিন রাজনীতির অন্যতম প্রভাবশালী ব্যক্তিত্ব ও প্রথম নারী হাউস স্পিকার ন্যান্সি পেলোসি কংগ্রেস থেকে অবসরের ঘোষণা দিয়েছেন।
বৃহস্পতিবার এক ভিডিও বার্তায় ৮৫ বছর বয়সী ক্যালিফোর্নিয়ার এই ডেমোক্র্যাট নেত্রী বলেন, “আমি আর কংগ্রেসে পুনর্নির্বাচনের জন্য প্রার্থী হচ্ছি না। ইতিহাস সৃষ্টি করেছি, অগ্রগতি অর্জন করেছি—এবং আমাদের গণতন্ত্র রক্ষায় এগিয়ে যেতে হবে।”
তিনি আরও যোগ করেন, “আমার প্রিয় শহর সান ফ্রান্সিসকোকে বলছি—তোমার শক্তি চিনে নাও।”
পেলোসি ১৯৮৭ সালে ৪৭ বছর বয়সে প্রথমবারের মতো সান ফ্রান্সিসকোর প্রতিনিধিত্ব করে কংগ্রেসে নির্বাচিত হন এবং দ্রুত দলের শীর্ষ সারিতে উঠে আসেন। ২০০৭ সালে তিনি প্রথম নারী হিসেবে হাউস স্পিকারের পদে নির্বাচিত হন। ২০১১ সাল পর্যন্ত দায়িত্ব পালন করেন, এরপর ২০১৯ থেকে ২০২৩ সাল পর্যন্ত আবারও স্পিকার হিসেবে দায়িত্বে ফিরে আসেন।
হাউস স্পিকার মার্কিন সংবিধান অনুযায়ী ভাইস-প্রেসিডেন্টের পর রাষ্ট্রপতির উত্তরসূরি হিসেবে দ্বিতীয় স্থানে থাকেন।
তিনি বারাক ওবামার স্বাস্থ্যসেবা আইন (“অ্যাফোর্ডেবল কেয়ার অ্যাক্ট”) পাসে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন এবং জো বাইডেন প্রশাসনের অধীনে অবকাঠামো ও জলবায়ু পরিবর্তন সংক্রান্ত একাধিক বিল পাসে নেতৃত্ব দেন।
ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রেসিডেন্সির সময় পেলোসি তাঁর অন্যতম প্রধান বিরোধী কণ্ঠ ছিলেন—সবচেয়ে আলোচিত ঘটনাগুলোর একটি ছিল ট্রাম্পের স্টেট অব দ্য ইউনিয়ন ভাষণের কপি তাঁর পেছনে দাঁড়িয়ে ছিঁড়ে ফেলা।
যদিও ২০১৯ সালে ট্রাম্পের অভিশংসন প্রক্রিয়া শুরু করতে প্রথমে দ্বিধান্বিত ছিলেন, পরে ইউক্রেন নিয়ে ট্রাম্পের কার্যক্রম প্রকাশ পাওয়ার পর পেলোসি বলেন, এটি “ক্ষমতার অপব্যবহার” এবং তা উপেক্ষা করা যাবে না।
পরে বাইডেন প্রশাসনের সময় তিনি সংকীর্ণ সংখ্যাগরিষ্ঠতার মধ্যেও কোভিড ত্রাণ বিল, অবকাঠামো প্যাকেজ, জলবায়ু ও সামাজিক ব্যয় কর্মসূচি এবং সমলিঙ্গ বিবাহ সুরক্ষা আইনসহ একাধিক গুরুত্বপূর্ণ আইন কংগ্রেসে পাস করান।
স্পিকার পদ ছাড়ার পরও পেলোসি রাজনীতিতে প্রভাবশালী থেকেছেন। সম্প্রতি ক্যালিফোর্নিয়ায় ডেমোক্র্যাটদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ “প্রপোজিশন ৫০” নামের নির্বাচনী এলাকার পুনর্বিন্যাস উদ্যোগ পাসে তিনি মুখ্য ভূমিকা রাখেন।
তার অবসর যুক্তরাষ্ট্রের কংগ্রেসে চার দশকেরও বেশি সময়ের এক ঐতিহাসিক যাত্রার ইতি টানছে।
এসআর
তথ্যসূত্র: বিবিসি নিউজ