ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যকার সংঘাত ঠেকাতে উভয় দেশকে ২৫০% শুল্ক আরোপের হুমকি দিয়েছিলেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। বুধবার (২৯ অক্টোবর) দক্ষিণ কোরিয়ায় এশীয়-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অর্থনৈতিক সহযোগিতা সংস্থার (এপেক) শীর্ষ সম্মেলনে তিনি এই দাবি করেন।
চলতি বছরের মে মাসের ভারত-পাকিস্তার সংঘাত প্রসঙ্গ ট্রাম্প বলেন, ‘আপনারা যদি ভারত ও পাকিস্তানের তারা পাল্টাপাল্টি হামলা করে বড় সংঘাতের দিকে এগোচ্ছিল, এছাড়া ওই সময় সাতটি বিমানও ভূপাতিত হয়েছিল।
ট্রাম্প বলেন, সংঘাত বন্ধ করতে তিনি ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এবং পাকিস্তানের নেতাদের ফোন করেছিলেন। বলেছিলেন, সংঘাত বন্ধ না হলে তিনি তাঁদের সঙ্গে ব্যবসা বন্ধ করে দেবেন এবং বড় ধরনের শুল্ক আরোপ করবেন।
ট্রাম্প আরো বলেন, ‘আমি বলেছিলাম, আমি দুই দেশের ওপর ২৫০ শতাংশ করে শুল্ক আরোপ করব। এর মানে হলো, আপনি আর ব্যবসা করতে পারবেন না। এর মধ্য দিয়ে আমি এই কথাটা বুঝিয়েছিলাম, আমরা আপনাদের সঙ্গে ব্যবসা করতে চাই না।’
এসময় ট্রাম্পের কথা বক্তৃতা শুনে শ্রোতারা হাততালি দেন।
তবে ট্রাম্প এর আগেও একই ধরনের দাবি করেছিলেন, কিন্তু ভারত তা প্রত্যাখান করেছে।
ট্রাম্পের আজকের এই মন্তব্যের বিষয়ে জানতে ভারত ও পাকিস্তানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে বার্তা সংস্থা রয়টার্স যোগাযোগ করে, কিন্তু তাৎক্ষণিকভাবে তারা মন্তব্য করতে রাজি হয়নি।
এর আগে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছিল, ট্রাম্পের সঙ্গে মোদি’র ফোনালাপে, চার দিনের সংঘাতের সময় যুক্তরাষ্ট্র-ভারতের মধ্যে বাণিজ্য বা মার্কিন মধ্যস্থতা নিয়ে কোনো আলোচনা হয়নি।
দিল্লি বরাবরই বলে আসছে, পাকিস্তানের অনুরোধে মে মাসের সংঘাত বন্ধ হয়েছিল। এতে যুক্তরাষ্ট্র বা তৃতীয় কোনো পক্ষের ভূমিকা ছিল না। তবে সংঘাত বন্ধে মধ্যস্থতা করায় ট্রাম্পকে ধন্যবাদ জানিয়েছিল এমনকি তাকে নোবেল শান্তি পুরস্কারের জন্যও মনোনীত করেছিল।
কিন্তু এপেক শীর্ষ সম্মেলনে ট্রাম্প জানান, প্রথমে উভয় পক্ষই অস্ত্রবিরতির আহ্বান প্রত্যাখ্যান করলেও পরবর্তীতে তারা রাজি হয়।
ট্রাম্প বলেন, ‘তারা উভয়েই বলেছিল, না, না, না। তাদেরকে লড়াই চালিয়ে যেতে দেওয়া উচিত। কিন্তু দুই দিন পর, তারা ফোন করে বলল, আমরা বুঝতে পেরেছি। এরপর তারা সংঘাত বন্ধ করল।’
পরবর্তীতে ওয়াশিংটন ভারতীয় কিছু পণ্যের উপর ৫০% পর্যন্ত শাস্তিমূলক শুল্ক আরোপ করে, এবং পরবর্তীতে ২৭শে আগস্ট থেকে রাশিয়ান তেল ক্রয়ের উপর অতিরিক্ত ২৫% শুল্ক আরোপ করা হয়। যদিও উভয় পক্ষই বাণিজ্য চুক্তি নিয়ে আলোচনা করছে।
অন্যদিকে, ট্রাম্প পাকিস্তানের ওপর ২৯ শতাংশ শুল্ক আরোপ করা হলেও পরে তা ১৯ শতাংশে নামিয়ে আনা হয়।