যুক্তরাষ্ট্রে ২০২৫ সালে দুই দশকের মধ্যে সবচেয়ে কম গণহারে হত্যা হয়েছে। এ ধরনের ঘটনার হিসাব রাখা একটি ডাটাবেজ থেকে মঙ্গলবার এ তথ্য মিলেছে।
মূলত ইউএসএ টুডে ও নর্থইস্টার্ন ইউনিভার্সিটির সঙ্গে এই ধরনের তথ্য নথিভুক্ত করে থাকে বার্তা সংস্থা অ্যাসোসিয়েটেড প্রেস (এপি)। খবর আলজাজিরার।
এপি জানিয়েছে, সম্প্রতি ক্যালিফোর্নিয়া অঙ্গরাজ্যের স্টকটনে একটি পারিবারিক অনুষ্ঠানে এলোপাতাড়ি গুলি চালিয়ে চারজনকে হত্যা করা হয়। চলতি বছরে এটি ছিল গণহারে হত্যার ১৭তম ঘটনা।
যদিও ডিসেম্বরে এই সংখ্যা আরো বাড়তে পারে। তা-ও এটি ২০১৯ সালের তুলনায় প্রায় ৫৯ শতাংশ কম, ওই বছর গণহারে হত্যার ৪১টি ঘটনা ঘটেছিল।
গণহারে হত্যার হিসাব রাখতে পুলিশ, এফবিআই ও গণমাধ্যমের প্রতিবেদন এবং আদালতের নথি ব্যবহার করা হয়েছে। ২৪ ঘণ্টায় চারজন বা তার বেশি মানুষকে হত্যা করা হয়েছে, এমন ঘটনাগুলোকে গণহারে হত্যা হিসেবে নথিভুক্ত করা হয়েছে।
ডাটাবেজ পরিচালনায় যুক্ত নর্থইস্টার্ন ইউনিভার্সিটির অপরাধ বিশেষজ্ঞ জেমস অ্যালান ফক্স বলেন, ২০২৪ সালের তুলনায় ২০২৫ সালে এসব ঘটনা প্রায় ২৪ শতাংশ কমেছে; যা ২০২৩ সালের তুলনায় আবার প্রায় ২০ শতাংশ কম।
মিনেসোটার মেট্রোপলিটন স্টেট ইউনিভার্সিটির অধ্যাপক জেমস ডেনসলি বলেন, ‘যেহেতু বছরে গণহারে হত্যার মাত্র কয়েক ডজন ঘটনা ঘটে, তাই একটি ছোট পরিবর্তন একটি তরঙ্গের মতো দেখাতে পারে।’
তিনি বলেন, ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপটে ২০২৫ সত্যিই ভালো দেখাচ্ছে কিন্তু আমরা এমন ভান করতে পারি না যে সমস্যাটি চিরতরে চলে গেছে।’
গণহারে হত্যা কমার পেছনে বেশ কিছু কারণ থাকতে পারে উল্লেখ করে তিনি বলেন, কোভিড-১৯ মহামারির সময় বেড়ে যাওয়া খুন ও সহিংস অপরাধের মাত্রা সামগ্রিকভাবে কমেছে। গণহারে হত্যার ঘটনায় সাড়াদানের উন্নতিও এক্ষেত্রে ভূমিকা পালন করতে পারে।
গত আগস্টে মিনেসোটার একটি স্কুলে প্রার্থনার সময় গুলি চালানোর ঘটনা উল্লেখ করেন তিনি, যেখানে দুই শিশু নিহত এবং ২০ জনেরও বেশি আহত হয়েছিল। মাত্র দুটি মৃত্যু হওয়ায় ঘটনাটি ডাটাবেসে রেকর্ড করা হয়নি।
ওয়াশিংটন-টাকোমা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফৌজদারি বিচার বিভাগের অধ্যাপক এরিক ম্যাডফিস বলেন, যদিও যুক্তরাষ্ট্রে বন্দুক সহিংসতা এবং এর সাথে সম্পর্কিত মৃত্যুর হার কমেছে, তা সত্ত্বেও বিশ্বের অন্য যেকোনো স্থানের তুলনায় আমাদের কাছে এখনো গণহত্যার হার এবং সংখ্যা অনেক বেশি।
২০২৫ সালে যুক্তরাষ্ট্রে প্রায় ৮২ শতাংশ গণহারে হত্যা আগ্নেয়াস্ত্র দিয়ে ঘটানো হয়। ২০০৬ সালে ডাটাবেস চালু হওয়ার পর থেকে ৩ হাজার ২৩৪ জন গণহারে হত্যা করা হয়েছে, যাদের ৮১ শতাংশকে গুলি করে হত্যা করা হয়েছে।