হোম > বিশ্ব

ট্রাম্পকে না বোঝার খেসারত গুনতে হবে মোদিকে

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

আমেরিকার যে কোনো পণ্য আমদানিতে ভারতের ওপর ৫০ শতাংশ শুল্কারোপ করেছেন আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। ১ আগস্ট থেকে নতুন এ শুল্ক কার্যকর হওয়ায় এখন থেকে এ শুল্ক পরিশোধ করতে হবে মোদি সরকারকে। আর এ নিয়ে ওয়াশিংটন ও দিল্লির মধ্যে শুরু হয়েছে বাগ্‌যুদ্ধ। যা একসময় ছিল রাজনৈতিক সাফল্যের গল্প। ওয়াশিংটনের বক্তব্য শুল্ক কমাতে হলে দিল্লিকে ছাড়তে হবে রাশিয়ার তেল আমদানি। কারণ এ তেল আমদানির কারণেই মোদির ওপর একপ্রকার চটেছেন ট্রাম্প। তবে ট্রাম্পের এমন সিদ্ধান্তকে ‘অযৌক্তিক’ বলে অভিহিত করেছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেদ্র মোদি। একই সঙ্গে ওয়াশিংটনের দ্বিমুখী নীতির নিন্দাও করেছেন।

একসময় তথাকথিত মোদি-ট্রাম্প প্রেম, যাকে কূটনৈতিক জয় হিসেবে প্রচার করা হতো, সে সুমধুর সম্পর্কই এখন কঠোর বাস্তবতার ভারে ভেঙে পড়ছে। হিউস্টনে ‘হাউডি মোদি’ অনুষ্ঠান থেকে শুরু করে আহমেদাবাদে ‘নমস্তে ট্রাম্প’ সংবর্ধনা জনগণের কাছে ব্যাপক প্রশংসিত হয়েছিল। কিন্তু শুল্কের খড়্‌গে সবই এখন পরিণত হয়েছে অভিযোগ আর সমালোচনায়।

তবে এক্ষেত্রে ভারতের হিসাবটিতে ছিল মারাত্মক ভুল। নয়াদিল্লির একটি প্রধান ভুল ছিল তারা ধরেই নিয়েছিল ট্রাম্পের সঙ্গে উষ্ণ করমর্দন কিংবা মেগার‌্যালিতে যোগদান কঠোর অর্থনৈতিক স্বার্থকে ছাপিয়ে যেতে পারবে। ট্রাম্পের প্রতি মোদির যোগাযোগ ছিল ব্যক্তিগত, প্রকাশ্য এবং আবেগপ্রবণ, কিন্তু ট্রাম্প ব্যবসাকে ব্যক্তিগত সুসম্পর্কের বাইরে আলাদা করেননি। মোদিকে ‘মহান বন্ধু’ আখ্যান দেওয়া ভারতকে শুধু মিথ্যা আত্মবিশ্বাসই দিয়েছিল, যার মাশুল গুনতে হবে ভারতকে।

তবে ভারত ট্রাম্পকে একজন অস্থির ব্যবসায়ী-প্রেসিডেন্ট হিসেবে দেখেনি। দেখেছিল একজন চুক্তিকারী হিসেবে, যিনি ‘বন্ধুদের’ পক্ষে ছিলেন। কিন্তু বাস্তবতা কী? ট্রাম্প বন্ধুত্ব করেন না, বন্ধুত্বের আড়ালে নিজের স্বার্থ দেখেন। আর ভারত ট্রাম্পের সেই দৃষ্টিভঙ্গিকে একেবারেই বুঝে উঠতে পারেননি।

মোদি-ট্রাম্প সম্পর্কের অবনতির অন্যতম কারণ হয়ে উঠেছে রাশিয়ার ওপর ভারতের তেলনির্ভরতা। অপরিশোধিত তেলের দাম অস্থির এবং জ্বালানিনিরাপত্তা, সর্বোপরি ছাড়ের সরবরাহের জন্য ভারত মস্কোর দিকে ঝুঁকেছে। রাশিয়া থেকে ৪০ শতাংশ তেল আমদানি করে ভারত। তাই লাভ-ক্ষতির দৃষ্টিকোণ থেকে পররাষ্ট্রনীতি দেখা ট্রাম্প এটিকে দেখছেন ভারতের বিশ্বাসঘাতকতা হিসেবে। তেল ক্রয়ের মাধ্যমে ভারতকে ইউক্রেন যুদ্ধে পুতিনকে সহায়তা করার অভিযোগ করেছেন ট্রাম্প। আর এর শাস্তিই দেওয়া হচ্ছে শুল্কের মাধ্যমে।

সমস্ত ভারতীয় পণ্যের ওপর ট্রাম্পের ২৫ শতাংশ শুল্কারোপের ঘটনা কেবল অর্থনৈতিক নমনীয়তা ছিল না, এটি একটি সতর্কীকরণ ছিল। সম্ভবত ভারতের জন্য সবচেয়ে বিরক্তিকর ছিল ট্রাম্পের পাকিস্তানবিরোধী অবস্থান, সামরিক বৈঠক, জ্বালানি সহযোগিতার আলোচনা এবং আঞ্চলিক ভারসাম্যের অস্পষ্ট প্রস্তাব। তারা আশা করেছিল ট্রাম্প দৃঢ়ভাবে পাকিস্তানবিরোধী কোণে থাকবেন। কিন্তু তা না করে উল্টো পাকিস্তানের পক্ষে অবস্থান সুস্পষ্ট করেছেন তিনি। যাকে বিশ্বাসঘাতকতা বলে মনে করেছে ভারত।

তবে এ থেকে উত্তরণে এখন ভারতকে ব্যক্তিগত কূটনীতির ভ্রম ত্যাগ করতে হবে। ট্রাম্প একজন আলোচক, বন্ধু নন, তিনি আনুগত্য নন, উত্তোলনকে সম্মান করেন। নয়াদিল্লিকে আবেগপ্রবণতা থেকে কৌশলে, আনুষ্ঠানিক প্রদর্শন থেকে বাস্তববাদী নীতিতে ফিরে আসতে হবে। ভারতের জন্য সবচেয়ে বড় শিক্ষা জাতীয় কৌশলকে পৃথক নেতাদের সঙ্গে সংযুক্ত করা যাবে না। বরং আমেরিকার ‘নীতি’ কঠোর বাস্তববাদের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে এবং ভারতকেও একই কাজ করতে হবে। এর অর্থ অনুমোদনের জন্য জুনিয়র অংশীদার হিসেবে নয়, বরং বহুমেরু বিশ্বে নেভিগেটকারী একটি সার্বভৌম শক্তি হিসেবে নিজেদের তুলে ধরতে হবে।

মামদানি উঠছেন গ্রেসি ম্যানশনে, কী কী সুবিধা আছে সেখানে

ইসরাইলের গুলিতে বেশির ভাগ জিম্মিই নিহত

যুক্তরাষ্ট্রে এইচ-১বি ভিসার নতুন নিয়ম, জটিলতায় ভারতীয়রা

ট্রাম্পকে শান্তি পুরস্কার দিয়ে সংকটে পড়ছেন ফিফা প্রেসিডেন্ট

লন্ডনের মেয়র সাদিক খানকে নিয়ে যা বললেন ট্রাম্প

সুদানে সামরিক বিমান বিধ্বস্ত, সকল আরোহী নিহত

রাডারের ঘটনায় চীনের সাথে বিরোধে জাপানের পাশে যুক্তরাষ্ট্র

এবার ইউরোপের অবৈধ অভিবাসীদের বহিষ্কারের আহ্বান ট্রাম্পের

মাচাদোর পক্ষে নোবেল গ্রহণ করবেন তার কন্যা

জন্মসূত্রে নাগরিকত্ব ছিল দাসদের জন্য, ধনীদের নয়: ট্রাম্প