আগামী বছরের ইউরোভিশন গানের প্রতিযোগিতা বয়কটের ঘোষণা দিয়েছে ইউরোপের চার দেশ। ইসরাইলকে অংশগ্রহণের অনুমতি দেওয়ায় প্রতিযোগিতা বর্জনের ঘোষণা দিয়েছে আয়ারল্যান্ড, স্পেন, নেদারল্যান্ডস ও স্লোভেনিয়া।
এসব দেশ জানায়, গাজায় গণহত্যার অভিযোগ থাকা অবস্থায় ইসরাইলকে সুযোগ দেওয়া গ্রহণযোগ্য নয়। খবর বিবিসির।
গাজার আগ্রাসনের প্রতিবাদে এসব দেশ আগে থেকেই ইসরাইলকে বাদ দেওয়ার দাবি জানিয়ে আসছিল।
জেনেভায় বৈঠকে গোপন ভোটের প্রস্তাব তোলে স্পেনের সম্প্রচার সংস্থা আরটিভিই। তারা জানায়, আয়োজকরা সেই দাবি না মানায় প্রতিযোগিতার প্রতি তাদের অবিশ্বাস আরো বেড়েছে।
আয়ারল্যান্ডের সম্প্রচার সংস্থা আরটিই জানায়, গাজার ভয়াবহ প্রাণহানি ও চলমান মানবিক সংকটের সময়ে প্রতিযোগিতায় অংশ নেওয়া তাদের জন্য গ্রহণযোগ্য নয়।
স্পেন ইউরোভিশনের ‘বিগ ফাইভ’ দেশের একটি হওয়ায় তাদের শিল্পীরা সরাসরি ফাইনালে ওঠে। ফ্রান্স, জার্মানি, ইতালি ও যুক্তরাজ্যের সঙ্গে তারা ইবিইউতে সবচেয়ে বেশি অর্থ দেয়।
গত বৃহস্পতিবার প্রায় ৫০টি সম্প্রচার সংস্থা ইউরোপিয়ান ব্রডকাস্টিং ইউনিয়নের (ইবিইউ) বৈঠকে যোগ দেয়। প্রতি বছর ১৫ কোটির বেশি মানুষ এই প্রতিযোগিতা দেখে।
বৈঠকে ইসরাইলের অংশগ্রহণকারী ইউভাল রাফায়েলের পক্ষে ভোট বাড়াতে সরকার ও তৃতীয় পক্ষের প্রভাব খাটানোর অভিযোগ উঠলে ইবিইউ সেই প্রভাব ঠেকাতে নতুন নিয়মে সম্মতি চায়। ইবিইউর নিয়ম অনুযায়ী, যে দেশগুলো নতুন বিধান মানতে রাজি হবে, কেবল তারাই ইউরোভিশন ২০২৬–এ থাকতে পারবে।
নতুন নিয়মে সম্মত হওয়ার ভোটের সঙ্গে একটি শর্ত দেওয়া হয় যে, সদস্যরা রাজি হলে ইসরাইলকে নিয়ে আর কোনো ভোট হবে না। ইবিইউ বলছে, সদস্যরা ইসরাইলের অংশগ্রহণ নিয়ে খোলামেলা আলোচনার সুযোগ পেয়েছে এবং ভোটে দেখা গেছে, অধিকাংশ দেশ চায় প্রতিযোগিতাটি রাজনৈতিক মঞ্চে পরিণত না হোক। ইউরোভিশন পরিচালক মার্টিন গ্রিন বলেন, সদস্যদের প্রধান অবস্থান হলো প্রতিযোগিতার নিরপেক্ষতা বজায় রাখা।
ইসরাইলের প্রেসিডেন্ট আইজ্যাক হেরজগ সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়ে বলেন, এটি সংহতি, বন্ধুত্ব ও সহযোগিতার প্রতীক এবং ইসরাইল বিশ্বমঞ্চে প্রতিনিধিত্ব পাওয়ার যোগ্য।
যুক্তরাজ্যে ইউরোভিশন সম্প্রচার করে বিবিসি। সংস্থাটি জানায়, তারা ইবিইউর নিয়ম কার্যকরকে সমর্থন করে; তবে এই সিদ্ধান্ত ইউরোভিশন সম্প্রদায়ের ভেতরে বড় বিভাজন তৈরি করেছে।
নেদারল্যান্ডসের অ্যাভরোট্রস জানায়, বর্তমান পরিস্থিতিতে অংশগ্রহণ তাদের মূল মূল্যবোধের সঙ্গে যায় না।
স্পেনের আরটিভিই জানায়, ইসরায়েল থাকলে তারা অংশ নেবে না—এই সিদ্ধান্ত গত সেপ্টেম্বরে নেওয়া হয়েছিল। ফলে তারা ২০২৬ সালের ফাইনাল ও সেমিফাইনালও সম্প্রচার করবে না।
স্লোভেনিয়ার আরটিভিও জানায়, নিয়ম বদলালেও তাদের অবস্থান বদলায়নি এবং ন্যায়নীতি রক্ষা করাই তাদের দায়িত্ব।