
গাজীউল হাসান খান

বহুল প্রত্যাশিত রাষ্ট্র সংস্কার কিংবা জুলাই সনদ বাস্তবায়ন নিয়ে দেশের জনগণ এবং বিভিন্ন দলের, বিশেষ করে বামপন্থি হিসেবে পরিচিত নেতাদের মধ্যে দূরত্ব ক্রমেই দৃশ্যমান হয়ে উঠেছে। যেখানে দেশের ব্যাপক সংখ্যাগরিষ্ঠ জনগণ চায় ভবিষ্যতে দেশে সুশাসন প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় সংস্কারের দ্রুত বাস্তবায়ন, সেখানে কোনো কোনো দলের নেতারা সে প্রক্রিয়াকে বিভিন্ন সাংবিধানিক জটিলতার অজুহাতে বাধাগ্রস্ত করার প্রয়াস পাচ্ছেন। তার সঙ্গে সঙ্গে দু-একটি ভিন্ন দলের নেতারাও তাদের ভবিষ্যৎ শাসনকালকে আগের ফ্যাসিবাদী সরকারের মতোই দীর্ঘায়িত করতে নানা ধরনের কৌশলের আশ্রয় নিচ্ছেন। তারা সংস্কার বাস্তবায়ন কিংবা পরিবর্তনের আকাঙ্ক্ষাকে ভিন্ন কায়দায় ঠেকিয়ে দেওয়ার জন্য আগের সেই অকার্যকর কিংবা ব্যবহারের অনুপযোগী সংবিধানের কথা বলে থাকেন। তারা ভুলে যান যে বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার নেতৃত্বে সংঘটিত একটি গণঅভ্যুত্থানের ফসল। চব্বিশের সে অপরাজেয় অভ্যুত্থানের ফলেই ১৬ বছর স্থায়ী একটি ফ্যাসিবাদী সরকারের অন্যায় শাসন-শোষণের অবসান ঘটেছে এবং তারা (উল্লিখিত নেতারা) আবার রাজনীতির মাঠে অবতীর্ণ হওয়ার সুযোগ পেয়েছেন। রাজধানী ঢাকাসহ দেশব্যাপী ছাত্র-জনতার এক মহান অভ্যুত্থানই প্রয়োজনীয় সংস্কার কিংবা পরিবর্তনের পথ সুপ্রশস্ত করেছে। তাদের অর্থাৎ ছাত্র-জনতাকে অধিকার দিয়েছে একটি অন্তর্বর্তী সরকার গঠনসহ অতি আবশ্যকীয় সংস্কারের দিকে এগিয়ে যেতে।
বৃহত্তর জনগোষ্ঠীর অভ্যুত্থান থেকে উৎসারিত একটি বৈপ্লবিক শক্তিই তাদের অধিকার দিয়েছে পুরোনো-অকেজো কিংবা বিতর্কিত, মনগড়া সংবিধানসহ সবকিছু ছুড়ে ফেলে দিয়ে একটি নতুন বাংলাদেশ গড়ার কাজে দৃপ্ত পদভারে এগিয়ে যেতে। সে কারণে দেশ ও জাতির চাহিদা অনুযায়ী অতি আবশ্যকীয় কিছু মৌলিক সংস্কার-সংবলিত ‘জুলাই ঘোষণা’ কিংবা রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিদের স্বাক্ষরিত ‘জুলাই সনদ’ একটি ঐতিহাসিক পর্যায়ে পৌঁছেছে। এখন প্রয়োজন অতিদ্রুত এই সনদ বাস্তবায়নের লক্ষ্যে একটি আইনি ভিত্তি দেওয়া। এটিই হবে স্বাক্ষরিত সনদের একটি যৌক্তিক পরিণতি, যা একে শুধু একটি কাগুজে ভিত্তি নয়, আইনিভাবে বৈধতা দেবে। নতুবা সেই স্বাক্ষরিত সনদ বাস্তবায়ন নিয়ে বিভিন্ন দলের নির্বাচিত প্রতিনিধিদের মধ্যে অদূর ভবিষ্যতে দেখা দেবে বিভিন্ন স্বার্থের কোন্দল, ক্ষমতা হারানোর সংশয় কিংবা দলীয় ও আর্থরাজনৈতিক দিক থেকে নানা দ্বিধাদ্বন্দ্ব। তাতে সম্পূর্ণ সংস্কার প্রক্রিয়াটিই শেষ পর্যন্ত হারিয়ে যেতে পারে তথাকথিত সাংবিধানিক জটিলতার অপ্রাসঙ্গিক তর্কবিতর্ক ও অহেতুক কালক্ষেপণের মধ্যে।
এ অবস্থায় সনদ বাস্তবায়নের প্রথম ধাপ হিসেবে বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের একটি আদেশ জারি এবং তার ভিত্তিতে দ্বিতীয় ধাপে একটি গণভোট অনুষ্ঠান করাই হবে অভ্যুত্থান-পরবর্তী যেকোনো সরকারকে জনগণ প্রদত্ত একটি কাঙ্ক্ষিত বৈপ্লবিক ম্যান্ডেট। এ ক্ষেত্রে স্বার্থান্বেষী মহলের বিভিন্ন যুক্তিতর্ক কিংবা বিদেশি শক্তির দেশীয় এজেন্টদের নানা গালভরা বুলি এ দেশ ও জাতির কোনো কাজে আসবে না। দেশের আপামর জনগণ দৃশ্যত এখন জুলাই সনদের দ্রুত বাস্তবায়নের লক্ষ্যে একটি আইনি ভিত্তি দেওয়ার জন্য গণভোটের পক্ষে তৈরি হয়ে অপেক্ষা করছে। তাতে বিভিন্ন দলের নেতাদের কোনো মতবিরোধের তোয়াক্কা করে না তারা। যারা গণভোটকে ভয় পায়, তারা প্রকৃতপক্ষে জনগণের মতামতের ধার ধারে না। তারা সত্যিকার অর্থে নিজেদের স্বার্থ ও রাষ্ট্র শাসন দলের স্থায়িত্বের ব্যাপারে আগ্রহী। যাতে বিদায়ি ফ্যাসিবাদী শাসকদের মতো তারাও ক্ষমতার মসনদকে ধরে রাখতে পারে, তাদের অভিলাষ অনুযায়ী।
স্বাধীনতা-পরবর্তী প্রায় সাড়ে ৫ দশকে সংঘটিত বিভিন্ন গণআন্দোলন ও অভ্যুত্থান থেকে সে শিক্ষাই পেয়েছে দেশের শোষিত, বঞ্চিত ও নিপীড়িত মানুষ। সুতরাং চব্বিশে সংঘটিত বর্ষাবিপ্লব কিংবা অভ্যুত্থানের শিক্ষা তাদের কাছে এখন সম্পূর্ণ এক ভিন্ন তাৎপর্য বহন করে। জনগণের বিপ্লব কিংবা সামাজিক-রাজনৈতিক অভ্যুত্থান নিয়ম করে কোনো জাতির জীবনে আসে না। সুতরাং চব্বিশের সংঘটিত অভ্যুত্থানের কাঙ্ক্ষিত ফসল নিজেদের গোলায় তুলতে আর ব্যর্থ হওয়া চলবে না। অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন, ‘জুলাই সনদে স্বাক্ষরের মধ্য দিয়ে এক নতুন বাংলাদেশের সূচনা হয়েছে।’

বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ‘জুলাই সনদে স্বাক্ষরদান বাংলাদেশের রাজনীতির ইতিহাসে একটি নতুন অধ্যায়ের সূচনা করেছে।’ ‘স্বাক্ষরিত সনদ বাস্তবায়িত হলে দেশের রাজনীতিতে একটি গুণগত পরিবর্তন আসবে।’ বলেছেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির সৈয়দ আবদুল্লাহ আবু তাহের। যদি বিভিন্ন আইনি মারপ্যাঁচে এই সনদ নির্বাচনের আগে বাস্তবায়নের আইনি ভিত্তি বা প্রতিশ্রুতি না পায়, তাহলে ভবিষ্যতে জাতির জীবনে এটি শুধু একটি ঐতিহাসিক বা রাজনৈতিক কাগুজে স্মৃতি হয়ে থাকবে, বাস্তবে এর কোনো কার্যকারিতা থাকবে না। বিভিন্ন ঘটনার ঘনঘটায় এই মহান গণঅভ্যুত্থানের স্মৃতিও একদিন আমরা বিস্মৃত হতে পারি, তাতে কোনো সন্দেহ নেই। পাকিস্তান ও বাংলাদেশের অতীত রাজনৈতিক ইতিহাস থেকে আমরা প্রতিশ্রুতিভঙ্গের এমন বহু ঘটনা খুঁজে পাব, যা রীতিমতো বিশ্বাসঘাতকতা ছাড়া আর কিছুই নয়।
জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) নেতারা গত ১৭ অক্টোবর জাতীয় সংসদ ভবনের দক্ষিণ প্লাজায় আয়োজিত জুলাই সনদে স্বাক্ষরদান অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করেননি; বরং সক্রিয়ভাবে বিরোধিতা করেছেন। বলেছেন, এ ঐতিহাসিক সনদ বাস্তবায়নের নিষ্কণ্টক প্রতিশ্রুতি কিংবা পরিপূর্ণ আইনগত বা আইনি ভিত্তি না দিলে জুলাই সনদে স্বাক্ষর করে কোনো রাজনৈতিক বিজয় সূচিত হবে না। এটি শুধু ঘটনা পরম্পরায় একটি কাগুজে দলিল হয়েই থাকবে। যদি এ চুক্তির বাস্তবায়ন প্রক্রিয়া চূড়ান্ত করা এবং মৌলিক সংস্কারগুলো সুরক্ষা করা হয়, তাহলে এনসিপি এ সনদে স্বাক্ষর করবে—বলেছেন দলটির যুগ্ম আহ্বায়ক খালেদ সাইফুল্লাহ। তাছাড়া মহাসচিব নাহিদ ইসলাম বলেছেন, জুলাই সনদে স্বাক্ষর এটি বাস্তবায়নে কোনো আইনগত ভিত্তি নিশ্চিত করবে না। এটি একটি আনুষ্ঠানিকতা মাত্র। আমরা বহুবার এর আইনগত ভিত্তির কথা আলোচনা করেছি। এ বিষয়টি নিয়ে তারা জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের বর্ধিত সময়কালের সভায় আলোচনা করতে আগ্রহী বলে জানিয়েছেন। এ ক্ষেত্রে এনসিপির বক্তব্য হচ্ছে—আমাদের দাবি মেনে নিলে আমরা জুলাই সনদে স্বাক্ষর করতে প্রস্তুত।
সে কারণেই জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহসভাপতি ড. আলী রীয়াজ বলেছেন, ‘রাষ্ট্র সংস্কারের লক্ষ্যে স্বাক্ষরিত এই সনদটি আমাদের সাফল্যকে নিশ্চিত করবে না। আমাদের আরো অনেকটা পথ পেরুতে হবে। জাতীয় সনদ শুধু বিভিন্ন দলের মধ্যে স্বাক্ষরিত একটি চুক্তিই নয়, এটি দেশের নাগরিক ও রাজনৈতিক দল এবং রাষ্ট্রের মধ্যে একটি সামাজিক চুক্তি বলে উল্লেখ করেছেন ড. রীয়াজ। এখানে উল্লেখ্য যে, গত ১৪ অক্টোবর, তৃতীয় রাউন্ডের পরিসমাপ্তির পর জাতীয় ঐকমত্য কমিশন সনদের চূড়ান্ত কপি বিভিন্ন দলের কাছে পাঠিয়েছে, তাতে সনদের পূর্ণ বাস্তবায়নের বিষয়টির ব্যাপারে তাদের (বিভিন্ন স্বাক্ষরকারী দলের) জোর প্রতিশ্রুতি চাওয়া হয়েছিল। সংস্কার প্রস্তাব ছাড়াও এ সনদ বিভিন্ন দলের কাছে ভবিষ্যতে সংবিধানে লিপিবদ্ধ করার প্রতিশ্রুতি বা অঙ্গীকারও চাওয়া হয়েছে। তবে এ সনদকে প্রকৃত অর্থে আইনি ভিত্তি দেওয়ার যে চূড়ান্ত কাজ, তা সম্পন্ন করার অপেক্ষায় এখন প্রহর গুনছে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন। তাতে সনদ বাস্তবায়নের প্রথম ধাপ হিসেবে অন্তর্বর্তী সরকারের দিক থেকে একটি বিশেষ আদেশ জারি হতে পারে সপ্তাহান্তে যেকোনো সময়ে।
এ কথা ঠিক যে, গত ১৭ অক্টোবর জুলাই সনদ স্বাক্ষর অনুষ্ঠানের পর থেকে তা বাস্তবায়নের পথ নিয়ে বিভিন্ন দলগুলোর অবস্থানের ভিন্নতার প্রেক্ষাপটে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ইউনূস নেতাদের সঙ্গে আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছেন বলে জানা গেছে। সে কারণেই সমগ্র দেশবাসী এখন কানপেতে রয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকার প্রধান ড. ইউনূসের কাছ থেকে একটি বিশেষ ঘোষণার জন্য। এক সপ্তাহ ধরে গ্রামগঞ্জে হাটবাজার থেকে শহর-নগরের অফিস-আদালতে জুলাই সনদের প্রকৃত বাস্তবায়ন নিয়ে শেষ পর্যন্ত একটি গণভোট হবে কি না—সেটি নিয়ে আলোচনা চলছে। কবে নাগাদ হতে পারে সিই কাঙ্ক্ষিত গণভোট? আগামী মাসের অর্থাৎ নভেম্বরের শেষ দিকে অথবা ফেব্রুয়ারির মাঝামাঝি অনুষ্ঠেয় প্রস্তাবিত জাতীয় নির্বাচনের সঙ্গে? গত বছর ৫ আগস্ট ফ্যাসিবাদী শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর থেকে দেশব্যাপী গণতন্ত্র, মানবাধিকার ও আইনের শাসন প্রতিষ্ঠার এক দৃঢ় প্রত্যয় জেগে উঠেছে সাধারণ মানুষের মধ্যে। তারা এই দেশে কোনোভাবেই আর স্বৈরাচারের পুনরাবির্ভাব দেখতে চায় না। দেখতে চায় না অপশাসন, শোষণ ও রাজনৈতিক নির্যাতন। বিদেশি শক্তির তাঁবেদারি থেকে সম্পূর্ণরূপে মুক্তি চায় বাংলাদেশের জনগণ।
সে কারণেই সম্প্রতি স্বাক্ষরিত জুলাই সনদ ও তার পূর্ণাঙ্গ বাস্তবায়ন চায় এই দেশের মানুষ। তারা জানে শেখ হাসিনার পতন ও একটি নির্দিষ্ট দলীয় গোষ্ঠীর অপশাসনের অবসান দেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার যে সুবর্ণ সুযোগ এনে দিয়েছে, তা একবার হাতছাড়া হলে আর কবে ফিরে আসবে জানা নেই। তারা চায় জুলাই সনদের পূর্ণাঙ্গ বাস্তবায়ন। সংস্কার, বিচার ও একটি সুষ্ঠু নির্বাচন। জুলাই সনদ ও তার বাস্তবায়ন বাংলাদেশে সুষ্ঠুভাবে ক্ষমতা হস্তান্তর, জবাবদিহিমূলক রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানগুলোর স্বাধীনতা এবং সক্ষমতা, নাগরিক অধিকারের সত্যিকারের বাস্তবায়ন, রাষ্ট্রীয় সম্পদ ও সামর্থ্যের ব্যবস্থাপনা নিশ্চিত করবে। আমাদের নিশ্চিত করতে হবে ভবিষ্যতে কোনো সরকারই যেন আর ফ্যাসিস্ট হয়ে উঠতে না পারে। এ প্রত্যয় শুধু নোবেলজয়ী অধ্যাপক ইউনূসের নয়। এ প্রত্যয় আমাদের প্রতিটি নাগরিকের। সে কারণেই আগামী ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে অনুষ্ঠেয় নির্বাচনের আগ পর্যন্ত সময়টি বাংলাদেশিদের কাছে এত গুরুত্বপূর্ণ। এর প্রতিটি মুহূর্ত আমাদের সংবিধানকে সময়োপযোগী করা কিংবা প্রকৃত অর্থে রাষ্ট্র মেরামত করে সামনের দিকে এগিয়ে যাওয়ার প্রস্তুতি নিতে হবে।
লেখক : বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থার (বাসস) সাবেক প্রধান সম্পাদক ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক
gaziulkhan@gmail.com

বহুল প্রত্যাশিত রাষ্ট্র সংস্কার কিংবা জুলাই সনদ বাস্তবায়ন নিয়ে দেশের জনগণ এবং বিভিন্ন দলের, বিশেষ করে বামপন্থি হিসেবে পরিচিত নেতাদের মধ্যে দূরত্ব ক্রমেই দৃশ্যমান হয়ে উঠেছে। যেখানে দেশের ব্যাপক সংখ্যাগরিষ্ঠ জনগণ চায় ভবিষ্যতে দেশে সুশাসন প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় সংস্কারের দ্রুত বাস্তবায়ন, সেখানে কোনো কোনো দলের নেতারা সে প্রক্রিয়াকে বিভিন্ন সাংবিধানিক জটিলতার অজুহাতে বাধাগ্রস্ত করার প্রয়াস পাচ্ছেন। তার সঙ্গে সঙ্গে দু-একটি ভিন্ন দলের নেতারাও তাদের ভবিষ্যৎ শাসনকালকে আগের ফ্যাসিবাদী সরকারের মতোই দীর্ঘায়িত করতে নানা ধরনের কৌশলের আশ্রয় নিচ্ছেন। তারা সংস্কার বাস্তবায়ন কিংবা পরিবর্তনের আকাঙ্ক্ষাকে ভিন্ন কায়দায় ঠেকিয়ে দেওয়ার জন্য আগের সেই অকার্যকর কিংবা ব্যবহারের অনুপযোগী সংবিধানের কথা বলে থাকেন। তারা ভুলে যান যে বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার নেতৃত্বে সংঘটিত একটি গণঅভ্যুত্থানের ফসল। চব্বিশের সে অপরাজেয় অভ্যুত্থানের ফলেই ১৬ বছর স্থায়ী একটি ফ্যাসিবাদী সরকারের অন্যায় শাসন-শোষণের অবসান ঘটেছে এবং তারা (উল্লিখিত নেতারা) আবার রাজনীতির মাঠে অবতীর্ণ হওয়ার সুযোগ পেয়েছেন। রাজধানী ঢাকাসহ দেশব্যাপী ছাত্র-জনতার এক মহান অভ্যুত্থানই প্রয়োজনীয় সংস্কার কিংবা পরিবর্তনের পথ সুপ্রশস্ত করেছে। তাদের অর্থাৎ ছাত্র-জনতাকে অধিকার দিয়েছে একটি অন্তর্বর্তী সরকার গঠনসহ অতি আবশ্যকীয় সংস্কারের দিকে এগিয়ে যেতে।
বৃহত্তর জনগোষ্ঠীর অভ্যুত্থান থেকে উৎসারিত একটি বৈপ্লবিক শক্তিই তাদের অধিকার দিয়েছে পুরোনো-অকেজো কিংবা বিতর্কিত, মনগড়া সংবিধানসহ সবকিছু ছুড়ে ফেলে দিয়ে একটি নতুন বাংলাদেশ গড়ার কাজে দৃপ্ত পদভারে এগিয়ে যেতে। সে কারণে দেশ ও জাতির চাহিদা অনুযায়ী অতি আবশ্যকীয় কিছু মৌলিক সংস্কার-সংবলিত ‘জুলাই ঘোষণা’ কিংবা রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিদের স্বাক্ষরিত ‘জুলাই সনদ’ একটি ঐতিহাসিক পর্যায়ে পৌঁছেছে। এখন প্রয়োজন অতিদ্রুত এই সনদ বাস্তবায়নের লক্ষ্যে একটি আইনি ভিত্তি দেওয়া। এটিই হবে স্বাক্ষরিত সনদের একটি যৌক্তিক পরিণতি, যা একে শুধু একটি কাগুজে ভিত্তি নয়, আইনিভাবে বৈধতা দেবে। নতুবা সেই স্বাক্ষরিত সনদ বাস্তবায়ন নিয়ে বিভিন্ন দলের নির্বাচিত প্রতিনিধিদের মধ্যে অদূর ভবিষ্যতে দেখা দেবে বিভিন্ন স্বার্থের কোন্দল, ক্ষমতা হারানোর সংশয় কিংবা দলীয় ও আর্থরাজনৈতিক দিক থেকে নানা দ্বিধাদ্বন্দ্ব। তাতে সম্পূর্ণ সংস্কার প্রক্রিয়াটিই শেষ পর্যন্ত হারিয়ে যেতে পারে তথাকথিত সাংবিধানিক জটিলতার অপ্রাসঙ্গিক তর্কবিতর্ক ও অহেতুক কালক্ষেপণের মধ্যে।
এ অবস্থায় সনদ বাস্তবায়নের প্রথম ধাপ হিসেবে বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের একটি আদেশ জারি এবং তার ভিত্তিতে দ্বিতীয় ধাপে একটি গণভোট অনুষ্ঠান করাই হবে অভ্যুত্থান-পরবর্তী যেকোনো সরকারকে জনগণ প্রদত্ত একটি কাঙ্ক্ষিত বৈপ্লবিক ম্যান্ডেট। এ ক্ষেত্রে স্বার্থান্বেষী মহলের বিভিন্ন যুক্তিতর্ক কিংবা বিদেশি শক্তির দেশীয় এজেন্টদের নানা গালভরা বুলি এ দেশ ও জাতির কোনো কাজে আসবে না। দেশের আপামর জনগণ দৃশ্যত এখন জুলাই সনদের দ্রুত বাস্তবায়নের লক্ষ্যে একটি আইনি ভিত্তি দেওয়ার জন্য গণভোটের পক্ষে তৈরি হয়ে অপেক্ষা করছে। তাতে বিভিন্ন দলের নেতাদের কোনো মতবিরোধের তোয়াক্কা করে না তারা। যারা গণভোটকে ভয় পায়, তারা প্রকৃতপক্ষে জনগণের মতামতের ধার ধারে না। তারা সত্যিকার অর্থে নিজেদের স্বার্থ ও রাষ্ট্র শাসন দলের স্থায়িত্বের ব্যাপারে আগ্রহী। যাতে বিদায়ি ফ্যাসিবাদী শাসকদের মতো তারাও ক্ষমতার মসনদকে ধরে রাখতে পারে, তাদের অভিলাষ অনুযায়ী।
স্বাধীনতা-পরবর্তী প্রায় সাড়ে ৫ দশকে সংঘটিত বিভিন্ন গণআন্দোলন ও অভ্যুত্থান থেকে সে শিক্ষাই পেয়েছে দেশের শোষিত, বঞ্চিত ও নিপীড়িত মানুষ। সুতরাং চব্বিশে সংঘটিত বর্ষাবিপ্লব কিংবা অভ্যুত্থানের শিক্ষা তাদের কাছে এখন সম্পূর্ণ এক ভিন্ন তাৎপর্য বহন করে। জনগণের বিপ্লব কিংবা সামাজিক-রাজনৈতিক অভ্যুত্থান নিয়ম করে কোনো জাতির জীবনে আসে না। সুতরাং চব্বিশের সংঘটিত অভ্যুত্থানের কাঙ্ক্ষিত ফসল নিজেদের গোলায় তুলতে আর ব্যর্থ হওয়া চলবে না। অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন, ‘জুলাই সনদে স্বাক্ষরের মধ্য দিয়ে এক নতুন বাংলাদেশের সূচনা হয়েছে।’

বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ‘জুলাই সনদে স্বাক্ষরদান বাংলাদেশের রাজনীতির ইতিহাসে একটি নতুন অধ্যায়ের সূচনা করেছে।’ ‘স্বাক্ষরিত সনদ বাস্তবায়িত হলে দেশের রাজনীতিতে একটি গুণগত পরিবর্তন আসবে।’ বলেছেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির সৈয়দ আবদুল্লাহ আবু তাহের। যদি বিভিন্ন আইনি মারপ্যাঁচে এই সনদ নির্বাচনের আগে বাস্তবায়নের আইনি ভিত্তি বা প্রতিশ্রুতি না পায়, তাহলে ভবিষ্যতে জাতির জীবনে এটি শুধু একটি ঐতিহাসিক বা রাজনৈতিক কাগুজে স্মৃতি হয়ে থাকবে, বাস্তবে এর কোনো কার্যকারিতা থাকবে না। বিভিন্ন ঘটনার ঘনঘটায় এই মহান গণঅভ্যুত্থানের স্মৃতিও একদিন আমরা বিস্মৃত হতে পারি, তাতে কোনো সন্দেহ নেই। পাকিস্তান ও বাংলাদেশের অতীত রাজনৈতিক ইতিহাস থেকে আমরা প্রতিশ্রুতিভঙ্গের এমন বহু ঘটনা খুঁজে পাব, যা রীতিমতো বিশ্বাসঘাতকতা ছাড়া আর কিছুই নয়।
জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) নেতারা গত ১৭ অক্টোবর জাতীয় সংসদ ভবনের দক্ষিণ প্লাজায় আয়োজিত জুলাই সনদে স্বাক্ষরদান অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করেননি; বরং সক্রিয়ভাবে বিরোধিতা করেছেন। বলেছেন, এ ঐতিহাসিক সনদ বাস্তবায়নের নিষ্কণ্টক প্রতিশ্রুতি কিংবা পরিপূর্ণ আইনগত বা আইনি ভিত্তি না দিলে জুলাই সনদে স্বাক্ষর করে কোনো রাজনৈতিক বিজয় সূচিত হবে না। এটি শুধু ঘটনা পরম্পরায় একটি কাগুজে দলিল হয়েই থাকবে। যদি এ চুক্তির বাস্তবায়ন প্রক্রিয়া চূড়ান্ত করা এবং মৌলিক সংস্কারগুলো সুরক্ষা করা হয়, তাহলে এনসিপি এ সনদে স্বাক্ষর করবে—বলেছেন দলটির যুগ্ম আহ্বায়ক খালেদ সাইফুল্লাহ। তাছাড়া মহাসচিব নাহিদ ইসলাম বলেছেন, জুলাই সনদে স্বাক্ষর এটি বাস্তবায়নে কোনো আইনগত ভিত্তি নিশ্চিত করবে না। এটি একটি আনুষ্ঠানিকতা মাত্র। আমরা বহুবার এর আইনগত ভিত্তির কথা আলোচনা করেছি। এ বিষয়টি নিয়ে তারা জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের বর্ধিত সময়কালের সভায় আলোচনা করতে আগ্রহী বলে জানিয়েছেন। এ ক্ষেত্রে এনসিপির বক্তব্য হচ্ছে—আমাদের দাবি মেনে নিলে আমরা জুলাই সনদে স্বাক্ষর করতে প্রস্তুত।
সে কারণেই জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহসভাপতি ড. আলী রীয়াজ বলেছেন, ‘রাষ্ট্র সংস্কারের লক্ষ্যে স্বাক্ষরিত এই সনদটি আমাদের সাফল্যকে নিশ্চিত করবে না। আমাদের আরো অনেকটা পথ পেরুতে হবে। জাতীয় সনদ শুধু বিভিন্ন দলের মধ্যে স্বাক্ষরিত একটি চুক্তিই নয়, এটি দেশের নাগরিক ও রাজনৈতিক দল এবং রাষ্ট্রের মধ্যে একটি সামাজিক চুক্তি বলে উল্লেখ করেছেন ড. রীয়াজ। এখানে উল্লেখ্য যে, গত ১৪ অক্টোবর, তৃতীয় রাউন্ডের পরিসমাপ্তির পর জাতীয় ঐকমত্য কমিশন সনদের চূড়ান্ত কপি বিভিন্ন দলের কাছে পাঠিয়েছে, তাতে সনদের পূর্ণ বাস্তবায়নের বিষয়টির ব্যাপারে তাদের (বিভিন্ন স্বাক্ষরকারী দলের) জোর প্রতিশ্রুতি চাওয়া হয়েছিল। সংস্কার প্রস্তাব ছাড়াও এ সনদ বিভিন্ন দলের কাছে ভবিষ্যতে সংবিধানে লিপিবদ্ধ করার প্রতিশ্রুতি বা অঙ্গীকারও চাওয়া হয়েছে। তবে এ সনদকে প্রকৃত অর্থে আইনি ভিত্তি দেওয়ার যে চূড়ান্ত কাজ, তা সম্পন্ন করার অপেক্ষায় এখন প্রহর গুনছে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন। তাতে সনদ বাস্তবায়নের প্রথম ধাপ হিসেবে অন্তর্বর্তী সরকারের দিক থেকে একটি বিশেষ আদেশ জারি হতে পারে সপ্তাহান্তে যেকোনো সময়ে।
এ কথা ঠিক যে, গত ১৭ অক্টোবর জুলাই সনদ স্বাক্ষর অনুষ্ঠানের পর থেকে তা বাস্তবায়নের পথ নিয়ে বিভিন্ন দলগুলোর অবস্থানের ভিন্নতার প্রেক্ষাপটে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ইউনূস নেতাদের সঙ্গে আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছেন বলে জানা গেছে। সে কারণেই সমগ্র দেশবাসী এখন কানপেতে রয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকার প্রধান ড. ইউনূসের কাছ থেকে একটি বিশেষ ঘোষণার জন্য। এক সপ্তাহ ধরে গ্রামগঞ্জে হাটবাজার থেকে শহর-নগরের অফিস-আদালতে জুলাই সনদের প্রকৃত বাস্তবায়ন নিয়ে শেষ পর্যন্ত একটি গণভোট হবে কি না—সেটি নিয়ে আলোচনা চলছে। কবে নাগাদ হতে পারে সিই কাঙ্ক্ষিত গণভোট? আগামী মাসের অর্থাৎ নভেম্বরের শেষ দিকে অথবা ফেব্রুয়ারির মাঝামাঝি অনুষ্ঠেয় প্রস্তাবিত জাতীয় নির্বাচনের সঙ্গে? গত বছর ৫ আগস্ট ফ্যাসিবাদী শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর থেকে দেশব্যাপী গণতন্ত্র, মানবাধিকার ও আইনের শাসন প্রতিষ্ঠার এক দৃঢ় প্রত্যয় জেগে উঠেছে সাধারণ মানুষের মধ্যে। তারা এই দেশে কোনোভাবেই আর স্বৈরাচারের পুনরাবির্ভাব দেখতে চায় না। দেখতে চায় না অপশাসন, শোষণ ও রাজনৈতিক নির্যাতন। বিদেশি শক্তির তাঁবেদারি থেকে সম্পূর্ণরূপে মুক্তি চায় বাংলাদেশের জনগণ।
সে কারণেই সম্প্রতি স্বাক্ষরিত জুলাই সনদ ও তার পূর্ণাঙ্গ বাস্তবায়ন চায় এই দেশের মানুষ। তারা জানে শেখ হাসিনার পতন ও একটি নির্দিষ্ট দলীয় গোষ্ঠীর অপশাসনের অবসান দেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার যে সুবর্ণ সুযোগ এনে দিয়েছে, তা একবার হাতছাড়া হলে আর কবে ফিরে আসবে জানা নেই। তারা চায় জুলাই সনদের পূর্ণাঙ্গ বাস্তবায়ন। সংস্কার, বিচার ও একটি সুষ্ঠু নির্বাচন। জুলাই সনদ ও তার বাস্তবায়ন বাংলাদেশে সুষ্ঠুভাবে ক্ষমতা হস্তান্তর, জবাবদিহিমূলক রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানগুলোর স্বাধীনতা এবং সক্ষমতা, নাগরিক অধিকারের সত্যিকারের বাস্তবায়ন, রাষ্ট্রীয় সম্পদ ও সামর্থ্যের ব্যবস্থাপনা নিশ্চিত করবে। আমাদের নিশ্চিত করতে হবে ভবিষ্যতে কোনো সরকারই যেন আর ফ্যাসিস্ট হয়ে উঠতে না পারে। এ প্রত্যয় শুধু নোবেলজয়ী অধ্যাপক ইউনূসের নয়। এ প্রত্যয় আমাদের প্রতিটি নাগরিকের। সে কারণেই আগামী ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে অনুষ্ঠেয় নির্বাচনের আগ পর্যন্ত সময়টি বাংলাদেশিদের কাছে এত গুরুত্বপূর্ণ। এর প্রতিটি মুহূর্ত আমাদের সংবিধানকে সময়োপযোগী করা কিংবা প্রকৃত অর্থে রাষ্ট্র মেরামত করে সামনের দিকে এগিয়ে যাওয়ার প্রস্তুতি নিতে হবে।
লেখক : বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থার (বাসস) সাবেক প্রধান সম্পাদক ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক
gaziulkhan@gmail.com

স্বৈরাচারী শেখ হাসিনার আওয়ামী লীগ সরকার তথাকথিত বাঙালি জাতীয়তাবাদ ও ধর্মনিরপেক্ষতাবাদ তথা সেক্যুলারিজমের নামে সমাজকে বিভাজিত করে বাংলাদেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্বকে ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে নিয়ে গিয়েছিল। কোথাও স্বাধীন মতপ্রকাশের সুযোগ ছিল না। স্বৈরাচারের পক্ষের লোক হিসেবে পরিচিত না হলে চাকরি পাওয়া যেত
১০ ঘণ্টা আগে
২০২৪ সালের জুলাই মাসে বাংলাদেশে যা ঘটেছে, তা নিছক একটি ছাত্র আন্দোলন ছিল না। ইতিহাসের ধারায় অনেক আন্দোলন আসে, কিছু ধূলিসাৎ হয়ে যায়, কিছু পারিপার্শ্বিক চাপে ধীরে ধীরে নিঃশেষ হয়ে যায়। কিন্তু কিছু আন্দোলন থাকে, যেগুলো একটি জাতি, সমাজ এবং দেশকে বড়মাত্রায় নাড়া দিয়ে যায়। জুলাইয়ের ছাত্র আন্দোলন কিংবা জুলাই
১০ ঘণ্টা আগে
মুত্তাকি ভারতকে আফগানিস্তানের খনিজ খাতে বিনিয়োগের আহ্বান জানিয়েছেন। তালেবান সরকার অন্যান্য দেশকেও একই প্রস্তাব দিয়েছে। জলবিদ্যুৎ প্রকল্পেও সহযোগিতা চেয়েছেন তিনি। ইরানের চাবাহার বন্দরকে আরো ভালোভাবে কাজে লাগানোর বিষয়েও তারা আলোচনা করেছেন। মার্কিন নিষেধাজ্ঞা থাকলেও এই ইস্যুটি গুরুত্বপূর্ণ।
১০ ঘণ্টা আগে
লাতিন আমেরিকার ‘মাদক সন্ত্রাসীদের’ বিরুদ্ধে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের চলমান সামরিক অভিযান ক্যারিবীয় অঞ্চলকে একটি নতুন যুদ্ধক্ষেত্রে রূপান্তরিত করেছে। মাদকবিরোধী অভিযানের অংশ হিসেবে ওয়াশিংটন গত আগস্ট মাস থেকে এই অঞ্চলজুড়ে যুদ্ধজাহাজ, পারমাণবিক সাবমেরিন, যুদ্ধবিমান এবং হাজার হাজার সেনা
১ দিন আগে