মোহাম্মদপুরে মা-মেয়ে হত্যা
রাজধানীর মোহাম্মদপুরে মা-মেয়ে হত্যার ঘটনায় পুলিশের হাতে গ্রেপ্তারকৃত গৃহকর্মী আয়েশা আক্তার (২০) স্বর্ণের গহনা ও কিছু মালামাল নিয়ে পালিয়ে যাওয়ার সময় নিহত লায়লা আফরোজার (৪৮) সাথে ধস্তাধস্তি হয়। পরে ধরা পরার ভয়ে মা-মেয়েকে কুপিয়ে হত্যা করে সে। বিষয়টি নিশ্চিত করছেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা মোহাম্মদপুর থানার উপ পরিদর্শক (এসআই) মো. সহিদুল ইসলাম মাসুম।
গ্রেপ্তারকৃত আয়েশা আক্তার নরসিংদী জেলার সলিমগঞ্জ এলাকার রবিউল ইসলামের মেয়ে।
বুধবার ঝালকাঠির নলছিটি উপজেলার দপদপিয়া ইউনিয়নের কয়ারচর থেকে তাকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। গ্রেপ্তারকৃত স্বামীর নাম জামাল সিকদার ওরফে রাব্বি (২৫)। জামাল সিকদার রাব্বি ওই এলাকার জাকির সিকদারের ছেলে। এ হত্যাকাণ্ডের ঘটনার পরেই গৃহকর্মী আয়েশা আক্তার স্বামীকে নিয়ে পালিয়ে শ্বশুর বাড়ি কয়ারচর গ্রামে চলে আসেন।
মোহাম্মদ থানার এসি জোন আবদুল্লাহ আল মামুনের নেতৃত্বে এ অভিযান পরিচালনা করা হয়। এই অভিযান পরিচালনা করার শুরুতেই মামলার তদন্ত কর্মকর্তা মোহাম্মদপুর থানার উপ পরিদর্শক (এসআই) মো. সহিদুল ইসলাম মাসুম অভিযান সফল করার জন্য নলছিটি থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেন।
এ বিষয়ে উপ পরিদর্শক (এসআই) মো. সহিদুল ইসলাম মাসুম বলেন, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে এবং তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় গৃহকর্মী আয়েশাকে প্রেপ্তার করা হয়েছে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে সে জানিয়েছে, নিহত লায়লা আফরোজার বাসা থেকে কিছু স্বর্ণসহ মূল্যবান মালামাল চুরি করে গৃহকর্মী আয়েশা। পরে এ নিয়ে ধস্তাধস্তি হলে সে মা-মেয়েকে ছুড়ি দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করে। এ বিষয়ে তাঁদেরকে আরও জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে বলে তিনি জানান।
গৃহকর্মী আয়েশার স্বামীর জামাল সিকদার ওরফে রাব্বি নলছিটি থানার সামনে সাংবাদিকদের বলেন, মা-মেয়েকে হত্যার উদ্দেশ্য ছিল না। আয়েশা আক্তার স্বর্ণের গহনা ও কিছু মালামাল নিয়ে পালিয়ে যাওয়ার সময় নিহত লায়লা আফরোজার পেছন থেকে ধরে ফেলে। এ নিয়ে তাদের মধ্যে ধস্তাধস্তি হয়। পরে ধরা পরার ভয়ে মা-মেয়েকে কুপিয়ে হত্যা করে আয়েশা।
গত সোমবার দুপুরের দিকে মোহাম্মদপুরের একটি বাসা থেকে মা-মেয়ের রক্তাক্ত লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। তারা হলেন লায়লা আফরোজ (৪৮) ও তার মেয়ে নাফিসা নাওয়াল বিনতে আজিজ (১৫)।
মা-মেয়ে হত্যার ঘটনায় গত সোমবার রাতেই মোহাম্মদপুর থানায় মামলা করা হয়। মামলার বাদী আ জ ম আজিজুল ইসলাম। তিনি লায়লার স্বামী ও নাফিসার বাবা। মামলায় উল্লেখ করা হয়, সোমবার সকাল ৭টা ৫১ মিনিট থেকে ৯টা ৩৫ মিনিটের মধ্যে যেকোনো সময় এ হত্যাকাণ্ড ঘটে।
তদন্তসংশ্লিষ্ট পুলিশ কর্মকর্তারা বলছেন, সোমবার এই হত্যাকাণ্ডের ঘটনার মাত্র চার দিন আগে বাসাটিতে গৃহকর্মীর কাজ শুরু করেন এই নারী। চার দিনই তিনি বোরকা পরে, নয়তো মুখমণ্ডল ঢেকে বাসাটিতে আসা-যাওয়া করেছিলেন।
ভবনের সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজে দেখা যায়, ঘটনার দিন ওই গৃহকর্মী বোরকা পরে বাসায় আসেন। আর বাসা থেকে বেরিয়ে যাওয়ার সময় তার পরনে ছিল নিহত নাফিসার স্কুল-ড্রেস।