কুমিল্লার দেবিদ্বারে বদিউল আলম বদু নামের এক আওয়ামী সমর্থককে রাষ্ট্রবিরোধী কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগে আটকের পর বিএনপি পরিচয়ে ছেড়ে দিয়েছে দেবিদ্বার থানা পুলিশ।
শুক্রবার রাতে আওয়ামী লীগ পরিচয়ে আটকের পর শনিবার সকালে ফটোসেশন শেষে বিএনপি নেতা পরিচয়ে ছেড়ে দেয়। এ নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমসহ এলাকায় তোলপাড় শুরু হয়েছে।
জানা যায়, শুক্রবার দিবাগত রাতে রাষ্ট্রবিরোধী কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগে পুলিশ দেবিদ্বার উপজেলার বিভিন্নস্থানে অভিযান চালিয়ে আওয়ামী লীগ ও এর অঙ্গ সংগঠনের পাঁচজন নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তার করে। তাদের মধ্যে দেবিদ্বার পৌর এলাকার দক্ষিণ ভিংলাবাড়ি গ্রামের মৃত সোনা মিয়ার ছেলে বদিউল আলম বদুকেও গ্রেপ্তার করে পুলিশ। তবে শনিবার সকালে আটক চার আওয়ামী নেতাকর্মীকে কারাগারে প্রেরণ করা হলেও বদিউল আলম বদুকে স্থানীয় বিএনপি নেতাদের অনুরোধে ছেড়ে দেয় থানা পুলিশ।
এর আগে বদিউল আলম বদুকে পুলিশের কাছ থেকে ছাড়াতে পৌর বিএনপির আহ্বায়ক ভিপি মহিউদ্দিন সরকার মাহফুজসহ ১০/১৫ জন বিএনপি নেতাকর্মী দেবিদ্বার থানা অবস্থান নেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় কয়েকজন ব্যক্তি জানান, বদিউল আলম বদু স্বৈরচার সরকারের আমলে আওয়ামী লীগের রাজনীতির সাথে জড়িত ছিল। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের দলীয় প্রার্থীর পক্ষে সভা সমাবেশে বদু ব্যাপক উপস্থিতি দেখা যায়। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে ২৪ এর ৪ আগস্ট আওয়ামী নেতাকর্মীদের সাথে নিউমার্কেট এলাকায় ছাত্র-জনতার উপর হামলায় অংশগ্রহণের একাধিক ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ঘুরপাক খাচ্ছে। বদিউল আলম বদুর ছেলে জামির হোসেন বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে সেচ্ছাসেবক দলের নেতা আব্দুর রাজ্জাক রুবেল হত্যার মামলার আসামি। স্বৈরাচার সরকারের পতনের পর বদিউল আলম বদু বিএনপি নেতা হিসেবে পরিচয় জাহির করে দাপিয়ে বেড়াচ্ছে।
এ বিষয়ে পৌর বিএনপির আহ্বায়ক ভিপি মহিউদ্দিন সরকার মাহফুজ বলেন, বদিউল আলম বদু দেবিদ্বার পৌরসভার ২ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক। সে পূর্বে আওয়ামী লীগ করেছে কিনা আমাদের জানা নাই। গত জানুয়ারি মাসে প্রকাশ্যে স্কুল মাঠে অনুষ্ঠানের মাধ্যমে কমিটি করেছি। কিন্তু তার ব্যাপারে কেউ কোনো অভিযোগও করেনি। তবে বদুর ছেলে আওয়ামী লীগের রাজনীতির সাথে জড়িত এটা সত্য।
এ ব্যাপারে দেবিদ্বার থানার ওসি মোহাম্মদ ইয়াছিন বলেন, বদিউল আলম বদু চলতি বছরের জানুয়ারি মাসে ঘোষিত বিএনপি ওয়ার্ড
কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে ২৪ এর ৪ আগস্ট দেবিদ্বারে ছাত্রদের আন্দোলনে দাঁড়িয়ে থাকা একটি ছবি আসছে তবে সে কোন পক্ষের হয়ে দাঁড়িয়ে ছিলো তা নিশ্চিত হতে পারিনি। তার ছেলে হত্যামামলার আসামি তাই তাকে জিজ্ঞাসাবাদ শেষে ছেড়ে দিয়েছি।