নোয়াখালীর হাতিয়া উপজেলার চরকিং ও সুখচর ইউনিয়ন সংলগ্ন মেঘনা নদীর জাগলারচরে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষের ঘটনায় দুই দিন পর নিখোঁজ শামছুর লাশ খুঁজে পেয়েছে পরিবারের সদস্যরা। বৃহস্পতিবার বিকেলে জাগলার চরে কেউড়া বনের মধ্যে এই লাশ খোঁজ পায় তারা।
বিষয়টি নিশ্চিত করে হাতিয়া থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওসি সাইফুল আলম বলেন, সন্ধ্যার একটু আগে পরিবারের সদস্যরা সামছুর লাশ খোঁজে পাওয়ার বিষয়টি তাকে নিশ্চিত করে।
এই বিষয়ে সামছুর বড় ছেলে ফখরুল ইসলাম জানান, কয়েক জন আত্মীয়কে নিয়ে তারা জাগলার চরে যায় তার পিতাকে খোঁজ করার জন্য। সারাদিন খোঁজ করে বিকালে কেউড়া বনের মধ্যে তার পিতার লাশটি দেখতে পায়। তবে মৃতদের অনেক জায়গায় আঘাতের চিহ্ন রয়েছে বলে জানান তিনি। বিষয়টি তারা পুলিশকে জানিয়েছে।
এদিকে এই ঘটনায় থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে। মামলায় ৩০ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতনামা আরো ১০ থেকে ১৫ জনকে আসামি করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (২৫ ডিসেম্বর) দুপুরে নিহত মোবারক হোসেন সিহাব এর চাচা ও নিহত শামছুর ভাই আবুল বাশার বাদী হয়ে মামলা দায়ের করেন।
উল্লেখ্য, গত মঙ্গলবার (২৩ ডিসেম্বর) সকালে জাগলারচর দখলকে কেন্দ্র করে আলাউদ্দিন ও শামছু বাহিনীর মধ্যে গোলাগুলি ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এ সময় ঘটনাস্থল থেকে চার জনের লাশ উদ্ধার করা হয়। এছাড়া হসপিটালে একজনের মৃত্যু হয়। এই ঘটনায় শামছু বাহিনীর প্রধান শামছু নিখোঁজ ছিল।
এই ঘটনায় নিহতদের মধ্যে রয়েছেন, হাতিয়া উপজেলার সুখচর ইউনিয়নের চর আমান উল্যাহ গ্রামের মো. মহিউদ্দিনের ছেলে মো. আলাউদ্দিন (৩৬), জাহাজমারা ইউনিয়নের পাইকবাধা এলাকার মো. শামছুদ্দিনের ছেলে মো. মোবারক হোসেন সিহাড (২১), হাতিয়া পৌরসভার ৫ নম্বর ওয়ার্ড পশ্চিম লক্ষিদিয়া গ্রামের মৃত শাহী আলমের ছেলে হক সাব (৫৫), চানন্দী ইউনিয়নের মান্নান নগর এলাকার মৃত সেকুর ছেলে কামাল উদ্দিন (৩৮) এবং নোয়াখালীর সুবর্ণচর উপজেলার চরবাটা ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ড দক্ষিণ চর মজিদ এলাকার জয়নাল আবেদীনের ছেলে আবুল কাশেম (৫৭)।
আহতদের মধ্যে মো. সোহরাব (২৫) হাতিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। তিনি নিঝুমদ্বীপ ইউনিয়নের ৭ নম্বর ওয়ার্ডের খবির উদ্দিনের ছেলে। অন্য আহতরা নোয়াখালী সদর হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন বলে জানা গেছে।
হাতিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) সাইফুল আলম বলেন, নিখোঁজ সামছুর লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানোর ব্যবস্থা করা হয়েছে। এই ঘটনায় তার ভাই বাদী হয়ে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।