ইলিশের ভরা মৌসুমেও ভোলার দৌলতখানের মেঘনায় ইলিশ নেই। নদীতে জাল পেতে ইলিশ না পেয়ে ঘাটে ফিরতে হচ্ছে জেলেদের। তাদের পাতা জালে ইলিশ ধরা না পড়ায় মেঘনার তীরসংলগ্ন এলাকার জেলে পল্লির ৩০ হাজার পেশাজীবী জেলে বেকার হয়ে পড়েছেন।
নদীতে মাছের আকাল থাকার ফলে ঘাটে মাছের আমদানি কম। বসে বসে অলস সময় কাটাচ্ছেন আড়তের ব্যবসায়ীরা। ঘাটে মাছ ব্যবসায়ীদের সমাগম ও কেনাকাটার হাঁকডাক নেই। আমদানি-রপ্তানি না থাকায় গত কয়েক মাস ধরে স্থানীয় বরফ কলগুলোও বন্ধ রয়েছে।
এতে বরফ কলের এবং ঘাটের শতাধিক শ্রমিক কাজ না থাকায় অর্ধাহারে পরিবার-পরিজন নিয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছেন। নদীতে মাছ না পাওয়ায় ঘাট এলাকার ব্যবসায়ীদের দোকানপাটের কেনাকাটাও কমে গেছে। বট সুতার দোকানেরও ব্যবসায় ধস নেমেছে।
ভরা মৌসুমে নদীতে মাছের আকাল থাকায় এর বিরূপ প্রভাবে উপজেলার বিভিন্ন ব্যাংক বীমা এবং এনজিও সংস্থার লেনদেনও একেবারে কম। জেলেরা মাছ পাওয়ার আশায় বিভিন্ন এনজিও সংস্থা ও মহাজনের কাছ থেকে চড়া সুদে ঋণ নিয়ে বিপাকে পড়েছেন।
ধারদেনা করে নেওয়া টাকা দিয়ে তারা মাছ ধরার নতুন জাল বট ক্রয়, পুরাতন জাল সেলাই ও নৌকা-ট্রলার মেরামত করেছেন। জেলেরা জানায়, নদীতে মাছ ধরতে গিয়ে নৌকা -ট্রলারের তেলের খরচা অনুযায়ী মাছ না পাওয়ায় মহাজনি ও বিভিন্ন এনজিও সংস্থার কিস্তির পর কিস্তিখেলাপি করছেন তারা।
বিকল্প কোনো কর্সংমস্থান না থাকার ফলে অনেক জেলে নৌকা-ট্রলার ঘাটে রেখে ডাঙ্গায় অলস সময় পার করছেন। অনেকে তাস, জুয়াসহ বিভিন্ন অপরাধ জগতে জড়িয়ে পড়ছে। সরেজমিনে উপজেলার পাতার খাল মাছঘাট, রাধাবল্লভ, গুপ্তগঞ্জ, মাঝির হাট ও সাতবাড়িয়া মাছঘাট ঘুরে মৎস্য ব্যবসায়ী ও জেলেদের সঙ্গে কথা বলে এসব তথ্যচিত্র পাওয়া গেছে।
দৌলতখান পাতার খালের তহবিলের হানিফ মিয়া ও গুপ্তগঞ্জ ঘাটের মো. গিয়াস উদ্দিন জানান, নদীতে মাছ না পাওয়ায় ঘাটে লোকজন নেই। সকাল থেকে বসে-শুয়ে অলস সময় কাটাচ্ছি।
এলাকার সচেতন মহলের দাবি জেলেদের বিকল্প কর্মসংস্থান হিসেবে ভোলায় ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পকলকারখানা গড়ে তোলা প্রয়োজন।
অপরদিকে ইলিশের আকালে উপজেলার হাটবাজারে গ্রাহকের চাহিদা মাফিক মাছ মেলছে না। পাঙাশ তেলাপিয়াসহ পুকুর, ডোবার বিভিন্ন প্রজাতির মাছের দামও বেড়ে গেছে।