কার্যক্রম নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগের ডাকা ‘ঢাকা লকডাউন’ কর্মসূচিকে ঘিরে নাশকতা ঠেকাতে বন্দরনগরী চট্টগ্রামে ভোর থেকেই মাঠে নেমেছে ফ্যাসিবাদ বিরোধী রাজনৈতিক দল ও প্লাটফর্মগুলো। এদিন ভোর থেকে নগরের বিভিন্ন পয়েন্টে অবস্থান নিয়েছে জায়ায়াত, শিবির, বিএনপি, ছাত্রদল, যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দল, এনসিপি, জুলাই ঐক্য, আপ বাংলাদেশসহ ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে লড়াই করা দল ও সংগঠনগুলো।
বৃহস্পতিবার সকাল আটটায় নগরের একে খান মোড়ে দেখা যায়, আকবরশাহ থানা জামায়াতে ইসলামী ও ইসলামী ছাত্র শিবিররের নেতাকর্মীরা লাঠি হাতে অবস্থান নিয়েছেন। এসময় তারা নানা ধরণের স্লোগান দিচ্ছেন। কেউ কেউ যানজট নিরসনে কাজ করছেন।
এছাড়াও নগরের দুই নম্বর গেইট, রুবি গেট, বায়েজিদ বোস্তামী, শেরশাহ এলাকায় মহানগর ছাত্রদলের সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক সাইফুল ইসলাম সাইফ সহস্রাধিক নেতাকর্মী নিয়ে অবস্থান নিয়েছেন। অপরদিকে সকাল আটটায় নগরের চকবাজার, কাপাসগোলা, গুলজার মোড়, মেডিকেল, প্রবর্তক মোড়ে মোটরসাইকেল শোডাউন করেছে শিবির। শিবির মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ হাজার খানেক মোটরসাইকেল নিয়ে শহরজুড়ে শোডাউন দিচ্ছেন। এসময় তাদের নেতাকর্মীদের হাতে হাতে লাঠি দেখা গেছে। অপরদিকে নিউ মার্কেটে জামায়াতে ইসলামীর সমাবেশ চলছে। সেখানে কয়েক হাজার নেতাকর্মী সতর্ক অবস্থানে থাকার পাশাপাশি সমাবেশে নেতৃবৃন্দ বক্তব্য রাখছেন।
সকাল দশটায় চান্দগাঁও থানা এলাকার বহদ্দারহাটসহ বিভিন্ন এলাকায় মোড়ে মোড়ে স্বেচ্ছাসেবক দল মিছিল করেছে। এছাড়াও চান্দগাঁও থানা জামায়াতের উদ্যোগে বহদ্দারহাট এখলাছুর রহমান সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সামনে বিক্ষোভ মিছিল হয়েছে।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন, নগর জামায়াতের কর্মপরিষদ সদস্য আবু হেনা মোস্তাফা কামালসহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দ। বেলা সাড়ে এগারোটায় নগরের আলকরণে দেখা যায়, বিএনপি নেতাকর্মীদের মিছিল বের হয়েছে। ৩১ নম্বর ওয়ার্ড সভাপতি আব্দুল মান্নান, সদস্য সচিব ইকবাল হোসেন সংগ্রামের নেতৃত্বে কয়েকশো নেতাকর্মী অবস্থান নিয়েছেন।
পথচারী মো. আব্দুল্লাহ জানান আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে শুধু রাজনৈতিক দল নয় আমরা সাধারণ জনগণও সজাগ আছি।
ব্যবসায়ী আবুল হোসেন জানান, কোন ধরনের নাশকতা চেষ্টা করলে আমরা প্রতিরোধ করব। ঢাকায় তারা বাসে আগুন দিয়েছে। চট্টগ্রামে হতে দেওয়া হবে না।
নগর ছাত্রদলের সাবেক সহ-সম্পাদক সাইফুল ইসলাম সাইফ জানান, আওয়ামী লীগ অগ্নিসন্ত্রাসের হোতা। তারাই এই দেশে এই আগুন সন্ত্রাস চালু করেছে তা দেশের জনগণ গতকাল থেকে বুঝেছে। আমরা নেতাকর্মীদের নিয়ে সতর্ক অবস্থান আছি। তারা যেন কোন ধরণের বিশৃঙ্খলা ও জান, মালের ক্ষতি করতে না পারে।
মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব নাজিমুর রহমান জানান, গতকাল রাত থেকেই আমাদের নেতাকর্মীরা প্রত্যেক ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে সতর্ক রয়েছে। আজও নগরের বিভিন্ন মোড়ে মোড়ে অবস্থান নিয়েছে। যেকোন নাশকতা ঠেকাতে আমরা তৎপর আছি। শান্তিশৃঙ্খলা নষ্ট করতে চাইলে জনগণকে সাথে নিয়ে প্রতিরোধ করা হবে। আমরা আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে জনমত গঠন করছি।
জানতে চাইলে আপ বাংলাদেশ চট্টগ্রাম মহানগর সদস্য সচিব মশিউর রহমান মাহি জানান, নিষিদ্ধ সন্ত্রাসী আওয়ামী লীগের অবৈধ লকডাউন কর্মসূচি প্রতিহত করতে আমাদের কর্মীরা সকাল থেকে নগরীর প্রতিটি থানার গুরুত্বপূর্ণ মোড়ে সতর্ক অবস্থানে রয়েছে। জুলাই যোদ্ধারা বেঁচে থাকতে এই স্বাধীন বাংলার মাটিতে নিষিদ্ধ সন্ত্রাসী দল আওয়ামী লীগের কোনো কর্মসুচি বাস্তবায়ন করতে দেয়া হবেনা।
মহানগর উত্তর ছাত্রশিবিরের সভাপতি তানজীর হোসেন জুয়েল বলেন, আমরা চট্টগ্রামের জনগণের জানমাল রক্ষায় শান্তিপূর্ণভাবে মাঠে আছি। নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগ নগরীতে অরাজকতা ও নাশকতা সৃষ্টির চেষ্টা চালাচ্ছে—আমরা তা হতে দেব না। ছাত্রশিবির সবসময় জনগণের পাশে থেকে শান্তি ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে বদ্ধপরিকর।