চট্টগ্রাম-৪ (সীতাকুণ্ড) আসনের মনোনয়নকে কেন্দ্র করে তৃণমূল বিএনপির আন্দোলন দিনদিন তীব্র হচ্ছে। শুক্রবার বিকেলে কর্নেলহাটে অনুষ্ঠিত বিক্ষোভ ও প্রতিবাদ সমাবেশ জনস্রোতে পরিণত হয়। উত্তর পাহাড়তলী, আকবর শাহ ও কর্নেলহাটে এলাকার বিএনপি ও অঙ্গ-সংগঠনের হাজারো নেতাকর্মীর একটাই স্লোগান— ‘‘আসলাম চৌধুরী ছাড়া সীতাকুণ্ডে ধানের শীষের প্রার্থী মানি না, মানবো না।’’
বিকেলে কাট্টলী নুরুল হক চৌধুরী স্কুল মাঠ থেকে শুরু হওয়া বিশাল মিছিলটি ঢাকা চট্টগ্রাম মহাসড়ক অতিক্রম করে সিটি গেট এলাকায় পৌঁছালে পুরো পরিবেশ উত্তপ্ত হয়ে ওঠে স্লোগান, হাততালি আর তৃণমূলের দৃঢ় অবস্থানে। সবার মুখে একটাই বার্তা দুর্দিনের আসলাম ভাই, আপনারই নেতৃত্ব চাই।
এর আগে গত ৩ নভেম্বর কেন্দ্রীয়ভাবে কাজী সালাউদ্দিনকে সম্ভাব্য প্রার্থী হিসেবে ঘোষণা করার পর থেকেই সীতাকুণ্ডে তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখা দেয়। সীতাকুণ্ড উপজেলা ও পৌরসভা বিএনপি এবং অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীরা সেদিনই মহাসড়ক ও রেলপথ অবরোধ করে টায়ার জ্বালিয়ে বিক্ষোভ করেন। পরবর্তী দিনগুলোতেও বিভিন্ন ইউনিয়নে মশাল মিছিল, মানববন্ধন, প্রতিবাদ সমাবেশ অব্যাহত রয়েছে।
তৃণমূলের নেতাকর্মীরা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, দলের দুঃসময়ে আসলাম চৌধুরী জীবনের ঝুঁকি নিয়ে সামনে থেকে নেতৃত্ব দিয়েছেন। মামলা, হামলা, জেল-জুলুম আর নির্যাতনে তার ১৭ বছরের ত্যাগ, এত সহজে উপেক্ষা করা যায় না। তারা স্মরণ করিয়ে দেন, আসলাম চৌধুরী একটানা দীর্ঘ নয় বছর কারাগারে কাটিয়েও নেতাকর্মীদের জামিন, আর্থিক সাহায্য ও পারিবারিক খোঁজখবরের দায়িত্ব নিজের কাঁধে নিয়েছিলেন। তৃণমূলের ভাষ্য- যে নেতা দুর্দিনে পাশে থাকে, তাকে বঞ্চিত করা মানে তৃণমূলকে অপমান করা।
বক্তারা বলেন, ফ্যাসিস্ট সরকারের আমলে রাজপথে আন্দোলন যখন টাল মাতাল, তখন আসলাম চৌধুরী মিছিলের সামনে থেকে রাজপথে নেতৃত্ব দিয়েছেন। লাইফলাইন মহাসড়ক অবরোধ করে চট্টগ্রামে সাথে সারা দেশের যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন করে দিয়েছিলেন। কর্নেলহাট বিশাল সমাবেশ থেকে তারা হুঁশিয়ারি দেন, ত্যাগী নেতা আসলাম চৌধুরীকে মূল্যায়ন না করলে ভবিষ্যৎ আন্দোলন সংগ্রামী কোনো নেতা জীবন বাজি রেখে দাঁড়াবে না।
বক্তারা স্পষ্ট ঘোষণা করেন, আসলাম চৌধুরীকে মনোনয়ন না দিলে আন্দোলন থামবে না, প্রয়োজনে আরও কঠোর কর্মসূচি দেওয়া হবে।
সমাবেশে অংশ নেওয়া সাধারণ মানুষদের চোখেমুখেও ছিল একই আবেগ। অনেকে বলেন, দলের কঠিন সময়ে যখন তৃণমূলের নেতাকর্মীদের পাশে কেউ ছিলেন না, তখন আসলাম চৌধুরী ছিলেন। তাই তার প্রতি মানুষের ভালবাসা শুধু রাজনীতির নয়, এটি তৃণমূলের নেতাকর্মীদের ভালোবাসা ও হৃদয়ের স্পন্দন।
১০ নম্বর উত্তর কাট্টলী ওয়ার্ড বিএনপির আহবায়ক আলহাজ্ রফিক উদ্দীনের সভাপতিত্বে ও সদস্যসচিব মোহাম্মদ সেলিম উদ্দিনের পরিচালনায় সমাবেশে বক্তব্য রাখেন, আকবরশাহ বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক মাইনুদ্দিন চৌধুরী মঈনু, শামসুল আলম সেক্রেটারি, আব্বাস রশিদ, আইয়ুব খান, মহসিন তালুকদার, জাহেদ আলী, ফরিদ উদ্দিন, আলাউদ্দিন, রফিক, শফিকুল ইসলাম শফি, মুজাহেরুল আলম, আযম, আমির খান, আক্কাস, মহিউদ্দিন কোম্পানি, করিম উদ্দিন, শহিদুল ইসলাম, আজিজ, হায়াতুর রশিদ, মিনহাজ উদ্দিন সানি, রিদোয়ান উদ্দিন দুলাল, শাহজাহান, দিদার, এডভোকেট কামরুল আলী হায়দার ছোটন, মহানগর মহিলা দলের সিনিয়র সহ-সভাপতি সখিনা বেগম, মহানগর যুবদলের সাবেক যুগ্ম সম্পাদক ফেরদৌস আলম, হারুনুর রশিদ, বাবুল, সাজ্জাদ চৌধুরী, তৌহিদ আনসার, সরোয়ার হোসেন, মহিলা নেত্রী জুলেখা বেগম জুলি, জোহরা বেগম, নার্গিস আক্তার, জেরিন, রিনা মফিজ, সানোয়ারা বেগম, পলি বেগম, নুরজাহান, হাসান মাহমুদ, মহসিন আহমেদ তৌসিব, হানিফ, রিপন, আশরাফ আলী, বাপ্পি, রশিদ, মহানগর ছাত্রদলের নেতা আব্বাস, সামির, রিনাত,ফাহিম, রিফাত, হৃদয়, মাহিন প্রমুখ।