শুষ্ক মৌসুমে কখনো গলা, কখনো কোমর, কখনোবা হাঁটুপানি থাকে বমুখালে। এই পানি পেরিয়ে কোমলমতি শিশুদেরকে ঝুঁকি নিয়ে যেতে হয় বিদ্যালয়ে। খাল পার হওয়ার সময় পানিতে ভিজে যায় কাপড়, বই, খাতাও। আর ভেজা কাপড় নিয়ে বিদ্যালয়ে ক্লাস করতে হয় প্রতিবছর শতাধিক শিক্ষার্থীকে। মাঝেমধ্যে শিক্ষার্থীরাও ভেসে যায় পানির স্রোতে। অপরদিকে বর্ষা মৌসুম এলে বৃষ্টিতে খাল ভরে যায়। তখন ওপারের শিক্ষার্থীরা বিদ্যালয়ে আসা বন্ধ করে দেয়। এতে শিক্ষায় পিছিয়ে পড়ে দুর্গম পাহাড়ি এলাকার সুবিধাবঞ্চিত শিক্ষার্থীরা।
এমন পরিস্থিতির কথা জানালেন, বান্দরবান জেলার লামা উপজেলার বটতলী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শ্যামল কান্তি দাশ। তিনি বলেন, এ বিদ্যালয়ে ভর্তি হওয়ার আগে শিশুদেরকে সাঁতার শিখতে হয়। না হয় বিদ্যালয়ে আসতে পারে না। অনেক সময় খাল পারাপারের ভয়ে অধিকাংশ অভিভাবক সন্তানদের বিদ্যালয়ে পাঠাতে চান না। শুধু তাই নয়, বটতলীপাড়া থেকে গজালিয়া উচ্চ বিদ্যালয়েও প্রায় দুইশ শিক্ষার্থী প্রতিদিন এ খাল পার হয়ে বিদ্যালয়ে যাওয়া-আসা করে। শিক্ষক শ্যামল কান্তি দাশ আরো জানান, গত ১৫ নভেম্বর পারাপারের সময় এক শিক্ষার্থী পানিতে ভেসে যায়। সহপাঠীদের চিৎকারে তাকে উদ্ধার করেন স্থানীয়রা। বিদ্যালয়ের পূর্বপাশের বমুখালে ব্রিজ নির্মিত হলে শিক্ষার্থীরা এই ঝুঁকি থেকে রেহাই পেত। পাশাপাশি যাতায়াতের সুবিধা পেত দুই পারের কয়েক হাজার স্থানীয় বাসিন্দারাও।
গজালিয়া ইউনিয়ন পরিষদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান উসাচিং মার্মা জানিয়েছেন, বমুখাল পাড়ি দিয়ে বটতলীপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়সহ গজালিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ে আসা-যাওয়া করে তিন শতাধিক শিক্ষার্থী। এলাকার লোকজন দীর্ঘদিন ধরে বমুখালের ওপর ব্রিজ নির্মাণের দাবি করে আসছেন। ব্রিজটি নির্মাণ হলে কৃষকরাও উপকৃত হবেন।
এ বিষয়ে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের লামা উপজেলা প্রকৌশলী আবু হানিফ বলেন, শিশু শিক্ষার্থী এবং জনস্বার্থে ওই খালের ওপর ব্রিজ নির্মাণ জরুরি ছিল। তাই আমরা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে ২০২৪ সালে বটতলী ও পূর্ব বাইশফাঁড়িতে ব্রিজ স্থাপনের জন্য প্রস্তাবনা পাঠিয়েছি। তবে এখনো অনুমোদন পাইনি।